অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সামনে এখন অনেক চ্যালেঞ্জ: আইসিজি

প্রশান্তি আন্তর্জাতিক ডেক্স ॥ বাংলাদেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর ব্যাপক জনসমর্থন নিয়ে দায়িত্ব গ্রহণ করেছিল অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। তবে, তাদের সেই হানিমুন পিরিয়ড এখন শেষ হয়ে গেছে। অন্যান্য রাজনৈতিক দলসহ প্রভাবশালী গোষ্ঠী সংস্কার ও নির্বাচন নিয়ে আটঘাট বেঁধে মাঠে নামায় চলতি বছর সরকারের আরও বেশি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা লাগবে পারে। গত বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) প্রকাশিত বেসরকারি সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের (আইসিজি) একটি প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে। 

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর দায়িত্ব পাওয়া অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পিছনে ব্যাপক জনসমর্থন ছিল। তবে দিনে দিনে তা হ্রাস পেতে শুরু করেছে। এতে দৃশ্যমান ফল প্রদানের চাপ বাড়ছে ড. ইউনুসের ওপর। অন্যান্য রাজনৈতিক অংশীদারদের সঙ্গে সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে তার সরকার একদিকে তো হিমশিম খাচ্ছেই, পাশাপাশি দৈনন্দিন ব্যবস্থাপনা নিয়ে জনগণের ব্যাপক সমালোচনাও হজম করতে হচ্ছে তাদের।  

‘বাংলাদেশ: গণতান্ত্রিক রূপান্তরের উভয়সংকট’ শিরোনামের প্রতিবেদনে উত্তর কোরিয়া, সুদান, ইউক্রেন, ইরান, ইসরায়েল, ফিলিস্তিন, মলদোভা ও কলম্বিয়ার মতো দেশের পাশে ছিল বাংলাদেশের নাম। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিরোধী দল, ছাত্রনেতা, ইসলামি গোষ্ঠীসহ একাধিক কর্মক নির্বাচনে নিজেদের স্বার্থ নিশ্চিত করতে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এতে সামনের দিনে সরকারের সামনে চ্যালেঞ্জ আরও বৃদ্ধি পেতে যাচ্ছে। 

প্রতিবছর ‘ইইউ ওয়াচলিস্ট’ প্রকাশ করে থাকে আইসিজি। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও এর সদস্য রাষ্ট্রগুলো কীভাবে শান্তি প্রতিষ্ঠার সুযোগ বৃদ্ধি করতে পারে, তা বিশ্লেষণ করা হয় এই প্রতিবেদনে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত সমর্থন দিয়ে যাওয়া প্রতিবেশী দেশ ভারতের সঙ্গে দ্বন্দ্বের কারণে অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে সরকারকে। এছাড়া, তাদের কাঁধে আছে ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর দায়িত্ব এবং মিয়ানমার সীমান্তের অস্থিতিশীলতা সামনে সামনে এগিয়ে যাওয়ার চ্যালেঞ্জ। 

বাংলাদেশ ও মিয়ানমার বিষয়ক আইসিজির সিনিয়র কনসালট্যান্ট থমাস কীন বলেছেন, আগের সরকারের অব্যবস্থাপনার ফলে দ্রব্যমূল্য লাগামছাড়া হয়ে পড়েছিল। এটা সামাল দিতেও গলদঘর্ম হচ্ছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।

অবশ্য ভবিষ্যৎ নিয়ে আশাবাদ প্রকাশ করে কীন বলেছেন, রাজনৈতিক ব্যবস্থার সংস্কার করে আরও বেশি অংশগ্রহণমূলক ও জবাবদিহিতার পরিবেশ নিশ্চিত করার এক বিরল সুযোগ পেয়েছে বাংলাদেশ। শত শত প্রস্তাব নিয়ে নিয়মিত আলোচনা করে যাচ্ছে সংস্কার কমিশন।

এর আগে আগস্টে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল আইসিজি। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের বিষয়ে তাদের বিশ্লেষণের প্রেক্ষাপটে দাবি করা হয়, বাংলাদেশ এক রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার পাঁকে জড়িয়ে পড়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.