উত্তর গাজায় ফেরার পথে ইসরায়েলি বাধা, দুর্ভোগে হাজারো ফিলিস্তিনি

প্রশান্তি আন্তর্জাতিক ডেক্স ॥ ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে সংঘাতবিরতির পরও উত্তরের গাজা শহরে ফেরার পথে বাধা পাচ্ছেন হাজারো ফিলিস্তিনি। গত রবিবার (২৬ জানুয়ারি) গাজার মধ্যাঞ্চলে ইসরায়েলের স্থাপিত চেকপয়েন্টে আটকে থাকা মানুষেরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। ইসরায়েল দাবি করেছে, হামাস যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করেছে এবং ক্রসিং পয়েন্টগুলো খুলতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। শনিবার বন্দি বিনিময়ের দ্বিতীয় দফা সম্পন্ন হলেও এই সংকট যুদ্ধবিরতির ওপর ঝুলে থাকা ঝুঁকির বিষয়টি সামনে হাজির করেছে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

গাজার মধ্যাঞ্চলীয় সড়কগুলোতে উত্তরাঞ্চলে ফেরার জন্য অপেক্ষমাণ মানুষের ভিড় ছিল। কেউ গাড়িতে, কেউ পায়ে হেঁটে চেকপয়েন্ট পার হওয়ার জন্য অপেক্ষা করছিলেন। গাজা সিটির বাসিন্দা তামের আল-বুরাই বলেন, মানুষ তাদের বাড়িঘরের কী অবস্থা জানে না। তবু তারা ফিরতে চায়। ধ্বংসস্তূপের পাশে হলেও তাঁবু খাটিয়ে ঘর তৈরি করতে চায়।

সালাহউদ্দিন সড়ক ও উপকূলীয় সড়কে অনেকেই রাত কাটিয়েছেন। আল-আওদা হাসপাতালের কর্মকর্তারা জানান, উপকূলীয় সড়কে ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে এক ফিলিস্তিনি নিহত ও ১৫ জন আহত হয়েছেন। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বিষয়টি তদন্ত করছে বলে জানিয়েছে।

গাড়ি, ট্রাক ও রিকশায় খাদ্য, ত্রিপল ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রে বোঝাই। এসবই তাদের জন্য গত বছরের সংঘাতে আশ্রয়ের ব্যবস্থা ছিল।

মিসর ও কাতারের মধ্যস্থতায় যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত চুক্তি অনুযায়ী উত্তরের বাসিন্দাদের ঘরে ফেরার কথা ছিল। কিন্তু ইসরায়েল বলছে, হামাস চুক্তির শর্ত লঙ্ঘন করেছে। তারা জিম্মিদের তালিকা সরবরাহ করতে ব্যর্থ হয়েছে এবং অপহৃত ইসরায়েলি নারী আর্চেল ইয়েহুদকে ফেরত দেয়নি।

ইসলামিক জিহাদ দাবি করেছে, ইয়েহুদের মুক্তির বিষয়ে সমঝোতা হয়েছে। তবে ইসরায়েলি কর্মকর্তারা বলছেন, আলোচনা এখনও চলছে।

গত শনিবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইসরায়েলকে ২ হাজার পাউন্ড ওজনের বোমা সরবরাহের নির্দেশ দেন। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ইসরায়েল এখন শত্রুদের মোকাবিলায় প্রস্তুত।

তবে ট্রাম্প গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের সরিয়ে মিসর ও জর্ডানে পুনর্বাসনের প্রস্তাব দেন। এ প্রস্তাব হামাস তীব্র সমালোচনা করেছে। হামাস নেতা বাসেম নাইম বলেন, ফিলিস্তিনি জনগণ তাদের ভূমি থেকে সরিয়ে দেওয়ার যে কোনও চেষ্টাকে প্রত্যাখ্যান করবে।

গাজায় আটকে থাকা মাগদি সিদাম ট্রাম্পের প্রস্তাব নাকচ করে বলেন, ফিলিস্তিনি জনগণ তাদের মাটি ছাড়বে না। ইসরায়েল যতই ধ্বংস করুক, আসল জয় আমাদেরই হবে।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী চেকপয়েন্টে ফিলিস্তিনিদের দূরে থাকার নির্দেশ দিয়েছে। তবে সেনাদের গুলিতে কোনও প্রাণহানি ঘটেনি তারা দাবি করেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.