প্রশান্তি আন্তর্জাতিক ডেক্স ॥ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি প্রস্তাব দিয়েছেন, গাজার ২৩ লাখ ফিলিস্তিনিকে জর্ডান এবং মিসরে স্থানান্তর করার বিষয়টি বিবেচনা করা উচিত। ১৫ মাস ধরে চলা যুদ্ধের কারণে বিধ্বস্ত গাজার জন্য এই পরিকল্পনা স্থানীয় বাসিন্দাদের পাশাপাশি প্রতিবেশী দেশগুলোতেও উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

ট্রাম্পের প্রস্তাব ফিলিস্তিনিদের মধ্যে ১৯৪৮ সালের নাকবার স্মৃতি আবার উসকে দিয়েছে। তখন ইসরায়েলের রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সময় সাত লাখ ফিলিস্তিনি তাদের ভূমি থেকে বিতাড়িত হয়েছিলেন। অনেকে জর্ডান, সিরিয়া ও লেবাননের শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নেন।
গাজায় বর্তমান সংঘাতে ইসরায়েলের নজিরবিহীন বোমাবর্ষণ এবং স্থল অভিযান শহরাঞ্চলকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। ফিলিস্তিনি ও জাতিসংঘ কর্মকর্তাদের মতে, গাজায় আর নিরাপদ স্থান অবশিষ্ট নেই।
আক্রমণের আগে গাজার উত্তরাঞ্চল থেকে বাসিন্দাদের দক্ষিণাঞ্চলে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেয় ইসরায়েল। কিন্তু এরপরে দক্ষিণাঞ্চলকেও লক্ষ্যবস্তু করা হয়। জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, গাজার ২৩ লাখ মানুষের ৮৫ শতাংশ ইতোমধ্যে বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
গাজার বহু ফিলিস্তিনি মনে করেন, তারা যদি এই অঞ্চল ছাড়েন তবে তা ১৯৪৮ সালের পুনরাবৃত্তি ঘটাবে। অন্যদিকে মিসর সীমান্ত বন্ধ রেখেছে এবং শুধু বিদেশি ও দ্বৈত নাগরিকদের প্রবেশের অনুমতি দিয়েছে।
মিসর ও আরব দেশগুলো ফিলিস্তিনিদের অন্যত্র সরিয়ে দেওয়ার প্রচেষ্টার ঘোর বিরোধিতা করে। তারা মনে করে, এটি দুই-রাষ্ট্র নীতির সম্ভাবনাকে ক্ষুণ্ণ করবে এবং মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিতিশীলতা বাড়াবে।
যুদ্ধের শুরু থেকেই মিসর ও জর্ডানের মতো আরব দেশগুলো ফিলিস্তিনিদের তাদের ভূমিতে থেকে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। জাতিসংঘের কর্মকর্তারা বলছেন, গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া মানবিক সংকটকে আরও তীব্র করবে।
ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ বলেছেন, গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের বিতাড়নের কোনও পরিকল্পনা নেই। তবে, সরকারের কিছু সদস্য বাস্তুচ্যুতি নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন। অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মট্রিচ এবং জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতমার বেন-গভির গাজার বাসিন্দাদের অন্যত্র সরিয়ে দেওয়ার পক্ষে কথা বলেছেন।