রাজনীতি ও রাজনৈতিক দল এই দুইটি উৎপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে ইতিহাসের পাতায়। আর বর্তমানের সঙ্গেও এর যোগ সম্পর্কের যৌক্তিকতা নিবির। এই দুই ছাড়া অচল হয়ে পড়ে রাষ্ট্রযন্ত্র আবার এই দুইয়ের জালায়ও অচল হয়ে পড়ে রাষ্ট্রযন্ত্র। তাই এই দুইয়ের কুটকৌশলে এখন ধরাশায়ী সাধারণ জনগণ। সধারণ জনগণ সবসময়ই রাজনীতি ও রাজনীতিবিদদের কাছে মার খেয়ে যাচ্ছে এবং আগামীতেও যাবে। এই সংস্কৃতির উত্তরণের কোন পথ বা পন্থা এখনও আবিস্কার হয়নি বা হওয়ারও কোন লক্ষণ পরিলক্ষিত হয়নি।
যখন কোন লক্ষণে সাধারণ মানুষ একীভূত হয়েছে তথনই ঐ কুট রাজনীতি বা রাজনৈতিক দল সৃষ্টির পায়তারায় বিনষ্ট হয়েছে এবং হচ্ছে আর হবে সেই লক্ষণের অগ্রসরতার আস্ফালন। জাতি ৫ আগষ্টকে ঘীর স্বপ্ন বুনেছিল এবং সেই স্বপ্ন এখন মৃত্যুপথযাত্রী হিসেবে টানাপোড়নে দুমড়ে-মুচড়ে নি:শেষ হচ্ছে। সাধারণ আম জনতার আশা জেগেছিল, নতুন স্বপ্ন দেখতে ও বুনতে শুরু করেছিল কিন্তু সেই স্বপ্নের আর বাস্তবায়ন হয়নি। বরং অংকুরেই বিনাশ হতে চলেছে। বরং স্বপ্ন এখন ক্ষতিতে পরিলক্ষিত হচ্ছে। ৫ আগষ্টের পরে সাধারণ মানুষের কল্যাণে কোন পদক্ষেপ আজও বাস্তবায়িত হয়নি। তারপরও মানুষ আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করে সুযোগ দিয়ে যাচ্ছে কিন্তু ফল হচ্ছে ভিন্ন।
এখন শ্যাম রাখি না কুল রাখি এর ত্রাহীসম অবস্থায় সরকার। আর সরকারকে সাধারনের জন্য কাজ করতে দিতে রাজি নয় রাজনীতির কুট চালাচালির মহাজন হিসেবে স্বীকৃত রাজনীতিবিদরা। তাই সরকারও বেকায়দায় এবং জাতিও বেকায়দায়। গতানুগতিক রাজনীতির কাদা ছুড়াছুড়ির পুরোনো সংস্কৃতির চর্চায় এখন পৃষ্ঠ হচ্ছে সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষজন। এই সাধারণ মানুষজনদেরকেই স্বপ্ন দেখিয়ে সকলে সকলের জন্য বা রাজনৈতিক খায়েশিরা তাদের স্বার্থ্য খাছিল করে থাকেন। ঐ অতি সাধারণ ও সাধারন মানুষজনই না কত বোকা আর তারা বার বার খায় ধোকা।
সরকার ভাবতেও পারেনি আজকের এই নৈরাজ্য ও কুটকৌশলের বলির পাঠায় পরিণত হওয়ার বিষয়ে। সামনে আরো কঠিন সময় আসছে তাই এখনও সময় আছে কঠোর হস্তে দমন করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে। তবে ছাত্ররা আন্দোলন করে একটি প্লাটফর্ম তৈরী করেছে যা অরাজনৈতিক এবং সুন্দর ও গ্রহণযোগ্য যোগোপযোগী নামকরণের মাধ্যমে যা বৈষম্যবিরোধী হিসেবে চিত্রিত ও চিহ্নিত। তবে ছাত্রদের ছাত্র আন্দোলনের শতভাগ সুযোগ রয়েছে এবং ছাত্রত্ব শেষে পুরোপুরি রাজনৈতিক কর্মকান্ডের সাথে জড়িয়ে নিজেদের কর্ম ও জীবন জীবিকা নির্বাহের শত সহস্র সুযোগও রয়েছে। তবে ছাত্ররা জাতিয় রাজনীতিতে প্রবেশ করেছে এবং করতে পারে এতে কোন বাধা নেই বরং শত সহস্র সুযোগ হাতছানি দিয়ে ডাকছে। কিন্তু একটি বিষয় হলো ছাত্ররা রাজনৈতিক দল গঠন করছে এটি অগ্রহণযোগ্য।
রাজনীতি আর ছাত্র এই দুটি শব্দ সম্পূর্ন ভিন্ন এবং এর মাত্রায় আর শিক্ষনীয়তেও ভিন্নতা স্পষ্টত দৃশ্যমান। তাই ছাত্রদেরকে রাজনৈতিক দলের পরিচয়ে এগিয়ে গেলে তখন আর ছাত্রত্ব থাকবে না। ছাত্ররা ছাত্রদের শিক্ষা ও শিক্ষা সর্ম্পকিত বিষয়াদি নিয়েই রাজনীতি করতে পারে এবং এটিই চিরন্তর বাস্তব সত্য। বর্তমানে ছাত্ররা ছাত্রত্ব বিসর্জন দিয়ে কোন কোন দলের লেজুরবৃত্তি করছে যা ঠিক নয়। তবে জাতীয় রাজনীতিতে ছাত্রদের নতুন দল হলে তাদের ছাত্রত্বে ছ্বেদ ঘটবে। বর্তমানে ৫ আগষ্টকে কেন্দ্র করে ছাত্র-শিক্ষক- শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং এর সঙ্গে যুক্ত সকল কিছুই বিকল হয়ে বিকলাঙ্গতায় পরিণত হতে চলেছে। তাই এই বিকলাঙ্গতায় আরো সহযোগীতা করতে ছাত্রদ্বারা তৈরী রাজনৈতিক দল এবং তার আভির্ভাব হবে মুর্তুপুরীর যন্ত্রণারই মত।
তবে নতুন রাজনৈতিক দল হিসেব আত্মপ্রকাশ করার জন্য বৈষম্যবিরোধী ঐক্যকেই সুপ্রতিষ্ঠিত করুন। সকলকে নিয়ে যে ঐক্য সূচীত হয়েছিল সেই ঐক্যধরে অগ্রসর হউন। নতুবা হিতে বিপরীত হয়ে নতুন বৈষম্যের বেড়াজালে আবদ্ধ হয়ে নেতিবাচক সংস্কৃতির পুনরুদ্ধারে ইতিহাসের স্বাক্ষী হবেন। অন্তরের অস্থিরতার থমথমে অবস্থান থেকে বের হয়ে আসুন। প্রকাশ্যে নিজের মত ও পথের পরিস্কার ব্যাখ্যা দিন এবং পরিকল্পনার প্রতিচ্ছবি প্রকাশ করুন। যেমনিরূপে ৫ আগষ্ট পুর্ববর্তী সময়ে করেছিলেন। বর্তমানের বাস্তবতা আর ৫ আগষ্ট পূর্ব বাস্তবতা এক নয় বরং এখন আরো কঠোর ও কঠিন বাস্তবতায় আপনারা। তাই হিসেব নিকেশ সঠিকভাবে কষে অগ্রসর হউন। আশা করি দেশ পরিচালনায় থেকে সবরকম অভিজ্ঞতাই অর্জন সম্ভব হয়েছে এবং আগামীর গতি ও প্রকৃতি বুঝে অগ্রসর হওয়ারও যথেষ্ঠ সুযোগ হয়েছে।
দেশের জনগণ এবং সাধারন আম জনতার হাহাকারে মনযোগী হওন। তাহলে আপনাদের পায়ের নিচের মাটি আরো শক্ত হবে এবং আপনারা নিজেদেরকে মেলে ধরতে আরো সুযোগ পাবেন। মনে রাখবেন এই রাস্তা কুসুমাস্তির্ণ নয় বরং কাটা বিছানো জঞ্জালে ঘেরা এবং নরক যন্ত্রণায় ভরপুর। তাই এই কঠিন মরুর পথ পারি দিতে সাধারণ আম জনতাই একমাত্র ভরসা। শুধু ছাত্র নয় সাথে অভিভাবক ও সাধারণ আম জনতায় আস্থা রাখতে সাহসি হউন। ছাত্রদের চতুস্মুখি ফাটলে আর ভরসা করে বেশিদূর অগ্রসর হওয়া যাবে না। পাশাপাশি যে রাজনৈতি দলগুলো গুপনে স্বার্থ হাছিলে বিভিন্ন আশ্বাস দিচ্ছে তাদের উপরও শতভাগ বিশ্বাস এবং আস্থা রাখা যাবে না কারণ তারা তাদের স্বার্থ শতভাগ আদায় করে কেটে পড়বে। আর বিপদের ঘানি টানতে আপনার জীবন বিনষ্ট হবে। তাই সাধারণ ছাত্র, অভিভাবক, ও আম জনতায় বিশ্বাস ও নির্ভর করুন। আর তাদের কল্যাণে পদক্ষেপ নিন এমনকি তাদেরকে সু সংগঠিত করে আগামির ছক কষুন।
আগামীর রাজনীতি আরো কঠোর ও কঠিন ভুমিকায় অবতীর্ণ হওয়ার ইঙ্গিত বা পূর্বলক্ষণ পরিলক্ষিত হচ্ছে। তাই সকলেই সাবধান। কারোরই মঙ্গল হবে ভেবে উল্লসিত হওয়ার কোন কারণ নেই। সকলেই এই ঘেরাকলে পড়ে যন্ত্রনায় দাতে দাত ঘষে অগ্রসর হবেন এটা সুনিশ্চিত। চতুস্মুখী রাজনৈতিক খেলা শুরু হয়ে গেছে; এখন অপেক্ষার পালা শুধু পঞ্চমুখী খেলার। আর এই পঞ্চমুখিতে জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা কিন্তু বিগত ফ্যাসিবাদের। তাই খেলোয়ারদ্বয় সাবধানে খেলুন। নতুবা আম- ছালা দুটোই যাবে। কারো মনের খায়েশই আর পূর্ণ হবে না বরং যা ছিল তাতেই জাতি মনোনিবেশ করবে। বরং মাঝখানের এই ক্ষতিটুকু জাতিকে ঘৃণাভরে স্মরণ করে আগামীর কল্যাণে অগ্রসর হতে হবে এবং প্রত্যাখ্যানের বিবর্জনে ঘৃণা তীব্র থেকে তীব্রতর হবে। পরিশেষে সকলের প্রতি বিশেষ করে রাজনীতি ও রাজনীতিবিদদের প্রতি করজোরে মিনতি: ফিরে আসুন ইতিবাচক কল্যাণের তরে। সৃষ্টিকর্তার অভিপ্রায়ে এবং সামগ্রীক কল্যাণে নিজেদেরকে নিবেদিত করে বিলিয়ে দিতে। দুনিয়াবী নয় আখেরাতের কল্যাণের তরে যাবতীয় কর্মকান্ড সম্পাদনে মনোযোগী হতে। মোট কথা আপনি যেমন আশা করেন তা আগে নিজে করে দেখাতে। যেমন আমার/ আমাদের রাজনীতি ও রাজনৈতিক জীবন হয়:- যা সত্য, যা উপযুক্ত, যা সৎ, যা খাঁটি, যা সুন্দর, যা সম্মান পাবার যোগ্য, মোট কথা যা ভাল এবং প্রশংসার যোগ্য সেইদিকে তোমরা মন দাও। হ্যা তাই যেন হয় আপনার এবং আমার ও আমাদের আগামীর রাজনীতি এবং রাজনৈতিক জীবনাদর্শ।