ট্রাম্পের ‘নিয়ন্ত্রণ নেওয়া’র ঘোষণার পর গাজায় ফেরত যাচ্ছেন বাসিন্দারা

প্রশান্তি আন্তর্জাতিক ডেক্স ॥ যুক্তরাষ্ট্র গাজার ‘নিয়ন্ত্রণ নেবে’ এবং এর ওপর ‘মালিকানা’ প্রতিষ্ঠা করবে। গত মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এমন ঘোষণার পর ফিলিস্থিনের এই উপত্যকায় নিজেদের ঘরবাড়িতে ফিরতে শুরু করেছেন গাজাবাসী। ধ্বংসস্তুপের মধ্যে তাদেরকে নিজেদের ঘরবাড়ি খুঁজতে দেখা গেছে। তাদের দাবি, ‘আমরা আমাদের মাতৃভূমিতেই বাঁচব এবং এখানেই মৃত্যুকে বরণ করবো।’ ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।

দীর্ঘদিনের যুদ্ধে বিধ্বস্ত গাজায় ফিরে আসছেন দলে দলে বাসিন্দারা। বিবিসিকে তারা তাদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। এক বাসিন্দার দাবি, যুদ্ধ এবং বোমাবর্ষণ তাদের গাজা থেকে সরাতে পারেনি, তাই ট্রাম্পও তা করতে পারবে না।

গাজা যুদ্ধ চলাকালীন অনেক ফিলিস্থিনি ভয় পেয়েছিলেন যে তারা আবারও ‘নাকবা বা বিপর্যয়ের সম্মুখীন হতে যাচ্ছেন। ১৯৪৮ সালে ইসরায়েলের রাষ্ট্র গঠনের সময় হাজার হাজার ফিলিস্থিনি তাদের ঘরবাড়ি হারিয়েছিলেন।

৬৫ বছর বয়সী উম তামের জামাল বলেন, আমরা আমাদের এলাকা ছাড়বো না। আমরা আমাদের সন্তানদের শিখিয়েছি যে তারা কখনোই তাদের ঘর ছেড়ে যেতে যাবে না এবং দ্বিতীয় নাকবা ঘটতে দিবে না।

আরেকজন বলেছেন, গাজাবাসীরা অবিরাম বোমাবর্ষণ ও ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ সহ্য করেছে। কিন্তু আমরা এখানেই থাকবো এবং গাজাকে পুনর্নিমাণ করবো।

আমরা এই ভূমির সঙ্গে গভীরভাবে যুক্ত বলে মন্তব্য করেছেন আরেক গাজাবাসী। তার দাবি, আমরা রক্তপাত, ধ্বংস, বাস্তুচ্যুতি এবং আমাদের বাড়িঘর থেকে জোরপূর্বক বিতাড়নের শিকার হয়েছি। এটি আমাদের অধিকার, আমাদের মাতৃভূমি, আমাদের পরিচয়। কেউ আমাদের এখান থেকে বের করে দিতে পারবে না। ফিলিস্থিনি জনগণ তাদের ভূমির সঙ্গে গভীরভাবে যুক্ত।

এদিকে ট্রাম্পের এমন ঘোষণা ইসরায়েল-ফিলিস্থিন সংঘর্ষ নিয়ে মার্কিন নীতিকে সম্পূর্ণভাবে বদলে দিয়েছে, ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছে এবং বিশ্বব্যাপী নিন্দার ঝড় তুলেছে। রাশিয়া, চীন ও জার্মানি কঠোর প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেছে, এই পরিকল্পনা নতুন ভোগান্তি ও নতুন ঘৃণার সৃষ্টি করবে।

যুক্তরাজ্য বলেছে, ফিলিস্থিনিদের উচিত নিজ ভূমিতে বসবাস ও সমৃদ্ধি লাভ করা। মিশর জানিয়েছে, গাজাকে পুনর্গঠন করা উচিত, তবে জনগণকে সরিয়ে নয়। ফিলিস্থিনিদের স্থানচ্যুত করার যে কোনো প্রচেষ্টা প্রত্যাখ্যান করেছে সৌদি আরব।

Leave a Reply

Your email address will not be published.