যার যার প্রাপ্য বুঝে নেয়ার এবং বুঝিয়ে দেয়ার সময় এখন। এই কথাটি স্বর্ণখচিত আইন বা গোল্ডেন রুল এর আদলে সৃষ্টিকর্তার ন্যায্যতা প্রকাশেরই নামান্তর মাত্র। আইনটি হলো “তোমরা যে রকম আশা কর ঠিক সেইরকমই আগে করে দেখাও”। হ্যা তাই এখন জাতির সামনে প্রত্যক্ষ হচ্ছে। বোঝার এবং জানার সুযোগ থাকলে অতিত এবং বর্তমানের সংমিশ্রন করে ভবিষ্যতের হিসেব মিলিয়ে নিন এবং আগামীর ভবিষ্যৎ সম্পর্কে সজাগ থাকুন। কারণ আপনার এবং আমার জন্যও এই একই বিধানের আলোকে বুঝে নেবার এবং বুঝিয়ে দেবার সময় ও সুযোগ থাকবে।
যারা যারা ভাল এবং ইতিবাচক কল্যাণের তরে জীবন-যাপনে অগ্রসর হয়েছিলেন তারা সেই ইতিবাচক কল্যাণের তরেই এখনও অগ্রসর হচ্ছেন। আর যারা যারা নেতিবাচক কল্যাণে এবং সার্বজনীন কল্যাণের বিপরীতে অবস্থান করেছিলেন সেই সকল অভাগারা এখন তাদের কৃতকর্মের ফল ভোগ করেছেন। তবে এর আগেও এই দৃষ্টান্ত জাতির সামনে প্রত্যক্ষ হয়েছিল কিন্তু কেউ আমলে নেয়নি। বরং বলেছিল ইট মারলে পাটকেল খেতে হয়। হ্যা কথাটি শতভাগ সত্যি। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো ঐ ইট পাটকেলের শিক্ষা থেকে আমরা কোন শিক্ষাই নেয়নি। এমনকি সৃষ্টিকর্তার দেয়া মানদন্ড ও আল্লাহর কাহিনী থেকেও কোন শিক্ষা জাতি কখনো নেয়নি তাই বার বার এই কালমেঘ জাতির সম্মুখে এসে হাজির হয়েছে।
সেই ভারতবর্ষ থেকে বিভক্তি হয়ে পাকিস্থান এবং ভারত আর তার থেকে পাকিস্থান-বাংলাদেশ সৃষ্টি এবং তৎপরবর্তী সকল নেতিবাচক কাহিনীগুলো কি শিক্ষা দেয় তা কি জাতি বিবেচনায় নিয়েছে? হ্যা বা না এর কোনটিই নয়। তবে এই হ্যা বা নাতে কিন্তু ইট মারলে পাটকেল আর গোল্ডেন রোল এর বিধান নিহিত রয়েছে। তবে সার্বজনীন কল্যাণ সাধনে এবং ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিতে নিস্বার্থভাবে এগিয়ে গেলে জয়ের সুনিশ্চিত গন্তর্ব্য পরিলক্ষিত হয়। সৃষ্টিকর্তার আশির্বাদ অব্যাহত থাকে। কিন্তু নেতিবাচক বা ব্যক্তি স্বার্থের প্রয়োজনে মুখে মধু অন্তরে বিষ নিয়ে এগিয়ে গেলে সাময়িক সাফল্যের পরেই বিফলতা, বিমর্ষতা ঘ্রাস করে। আর তারই প্রতিচ্ছবি বার বার প্রতিফলিত হয়েছে এবং হচ্ছে কিন্তু সেই প্রতিচ্ছবিতে কেউ কর্ণপাত বা দৃষ্টিগোচর করছে না।
ইতিহাস বিদায় বলে না বরং বার বার ফিরে আসে এবং নতুন ইতি ও নেতিবাচক ইতিহাসের জন্ম দেয়। তবে ইতিহাস পর্যালোচনা করে কেউ শিক্ষা নেয় না। এটাই ইতিহাসের সাফল্য বা ব্যর্থতা। যদি কেউ শিক্ষা ও দিক্ষা নিতো তাহলে ইতিহাসের পুনরাবৃত্ত্বি আর ঘটতো না বরং নতুন নতুন ইতিহাসের জন্মের ইতিকতায় ভরপুর হতো। সৌন্দয্য এবং সৌরভে সুষমামন্ডিত হতো পৃথিবীর মঙ্গলালোক। ভাষার জন্ম হয়েছে; ভাষার অধিকার ফিরে এনেছে এবং কেউ কেউ ফিরে পেয়েছে কিন্তু ইতিহাসের অধিকার এখনও ফিরে পায়নি এবং সুরক্ষিত হয়নি ইতিহাস। এইক্ষেত্রে দৈন্যতা হলো মানব মনের উদাসীনতা এবং ভুলে যাওয়ার প্রবণতা।
ইতিহাসের সাফল্যের বিশ্লেষণে উঠে এসেছে একমাত্র সৃষ্টিকর্তা তাঁর সৃষ্টির ইতিহাস এবং সৃষ্টিকে মুক্তকরণের ইতিহাস ও সৃষ্টিকে সুখে শান্তিতে রাখার ইতিহাসে শতভাগ সফল হয়েছেন। সৃষ্টিকর্তার সৃষ্টির কাহিনীকেও (আল্লাহর কাহিনী) বার বার ভুলুন্ঠিত করা হয়েছে এবং হচ্ছে কিন্তু তিনি তাঁর পরিচর্যায় এবং অলৌকিক খমতায় এই প্রকৃত সত্য ইতিহাসকে অবিকৃত ও অক্ষত এবং অক্ষুন্ন রেখেছেন। বাদ বাকী ইতিহাসগুলো সময়ের প্রয়োজনে সৃষ্টি হয়েছে এবং সময়ের প্রয়োজনেই ফুরিয়ে গেছে এবং যাচ্ছে ও যাবে। শুধু আল্লাহর কাহিনীটুকুই অক্ষুন্ন থেকে পৃথিবীর শেষদিন পর্যন্ত এমনকি কিয়ামত (শেষ বিচারের) দিবস পর্যন্ত চিরভাস্বর হয়ে দৃশ্যমান থাকবে।
যুগের শেষ হয়, প্রয়োজনেরও শেষ হয়, চাহিদারও শেষ আছে কিন্তু একটি বিষয়ের শেষ নেই আর তা হলো সৃষ্টিকতার এবং তার বানীর। সেই আলোকে ইতিহাসবিদ এবং ইতিহাস রচনায় সৃষ্টিকর্তাকে প্রাধান্য দিয়ে তাঁর অভিপ্রায় বুঝে অগ্রসর হলে আগামীর কল্যাণ এবং ইতিহাসের স্থায়ীত্ব অবারিত হবে এবং যুগ যুগ ধরে একই ধারাই অব্যাহত থাকবে এই ইতিহাসের যাত্রা। আমরা খুবই অল্প সময়ের প্রয়োজনে এই আবাসভুমিতে অবস্থান করছি কিন্তু কেউ এই অল্প সময়ের মধ্যে নিজেকে খুজে পাইতে চেষ্টা করিনি এমনকি অল্প সময়টুকুকে পরিপূর্ণরূপে ব্যবহার করিনি। এটাই দু:খজনক বিষয় এবং দুভার্গের একটি কারণ। অল্প সময় পরে চিরস্থায়ী আবাসস্থলে যাওয়ার প্রস্তুতিটুকুও নেয়নি।
সকলের তরে সকলে আমরা প্রত্যেকে আমরা পরের তরে। সকলেই আমরা চিরস্থায়ী আবাসভুমিতে একত্রিত হবো এবং মহান রবের গুনগান করে আনন্দ উল্লাসে মত্ত্ব থাকবো। এই প্রতিজ্ঞায় নিয়োজিত হয়ে নতুন চিরস্থায়ী ইতিহাসের ভুমিকায় নিজেদেরকে অবতীর্ণ করি। দুনিয়াবী সংকীর্ণ সময়ের সংকীর্ণ পরিবর্তনশীল ইতিহাসের পচনে নিজেদেরকে আর না জড়াই। আসুন আমরা মহান রবের সান্নিধ্যে নিজেদেরকে নিয়োজিত রাখি। সার্বজনীন কল্যাণ সাধনে মনোনিবেশ করি। অতিত এবং বর্তমান এবং ভবিষ্যতকে সৃষ্টিকর্তার অভীপ্রায়ে বিবেচনা করি এবং সেই আলোকেই আমাদের আগামীর পথচলা সর্বময় সার্বজনীন কল্যাণের তরে নিবেদন করি।