ভাষার মাস ও শক্তি = অস্থায়ী

ভাষার মাসই প্রমান করে শক্তি বা ক্ষমতা কখনো স্থায়ী হয়না আর হয়নি এবং হবেওনা। তাই ক্ষমতাকে ব্যবহারে হিসেবি হউন। ৫২’র ভাষা আন্দোলন, ৬৯’র আন্দোলন এবং ৭১’র স্বাধীনতা কোনটিই স্থায়ী হয়নি এবং স্থায়ীত্বের জন্য লড়াই করেও টিকতে পারেনি। সবকিছুই একটি মোহ এবং স্বল্পকালের একটি চাহিদা পুরণ মাত্র। আন্দোলন ও সফলতা এবং বিফলতা কোনটির রেশ কাটেনি এমনকি এর ধারাবাহিকতাও অব্যাহত থাকেনি। এই ভাষার মাসে স্মরণে আনতে হয় সেই সকল মহান বীরদের; যাদের বিরত্বের ফলশ্রুতিতে সেই সময় বিজয় এবং আস্থার জয় হয়েছিল আর সেই জয়ের ধারবাহিকতা কোথাও কোথাও এখনও সমুজ্জ্বল হয়ে আছে এবং থাকবে। তবে সেই জয়ের রেশ কিন্তু কেটে গেছে এবং নতুন জয়ের সম্ভাবনা উকি দিচ্ছে। পুরনে জয়ের উপর আস্থা রেখে আর সামনে এগুনো সম্ভব হচ্ছেনা বলে কোন কোন ক্ষেত্রে প্রতিনয়মান হয়েছে।

নতুনরা এখন আর পুরোনোকে নিয়ে আগলে থেকে বেঁচে থাকতে চাইছেনা বরং নতুন কিছু সৃষ্টির মহা উল্লাসে ব্যস্ত জীবন পার করছে। এটাই স্বাভাবিক এবং গতানুগতিক। তবে পুরনো থেকে উৎসাহিত হয়ে প্রেরণা নিয়ে সামনের নতুন কিছু সৃষ্টির লক্ষে এগিয়ে যাওয়াই শ্রেয়। একেবারে পুরোনোকে বাদ দিয়ে বা ভুলে গিয়ে নতুন কিছু সৃষ্টি করা যায় না যা ইতিহাস শিক্ষার মাধ্যমে বার বার দিকনির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছে। আমাদের এই ফেব্রুয়ারীও সেই তেমনই একটি ইতিহাস এবং জলন্ত প্রমানক হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে। বাংলা ভাষা মায়ের ভাষা এই মাসেরই অর্জন এবং স্বীকৃতি। কিন্তু এই মায়ের ভাষা শুধুই কি সকলের মনের আশা আকাঙ্খা পুরণে সক্ষম হয়েছে নাকি আরো মায়ের ভাষা এই জাতির সঙ্গে জড়িয়ে একটি পুর্ণাঙ্গ মায়ের ভাষার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছে সেইদিকে দৃষ্টিপাত করা উচিত। সার্বজনিন কল্যাণে মনোনিবেশ করতে মায়ের ভাষার প্রতি গুরুত্বারূপ করা উচিত। স্ব স্ব জাতি এবং স্ব স্ব ভাষার উপর গুরুত্ব দিয়ে সমান সুযোগ সুবিধাদি বহমান রাখাই বর্তমানে দাবী  আর সেই লক্ষকে সামনে রেখে এবং সাম্যের এক সার্বজনীনতা বিদ্যমান রাখতে কাজ করতে হবে। এই কাজের যাত্রারম্ভ এখনই শুরু করুন।

মানুষের বা সৃষ্টির কল্যাণে সার্বজনীন প্রয়োজনীয়তার দিকে মনোনিবেশ করুন। সেই প্রয়োজনীয়তাকে আগলে ধরেই অগ্রসর হউন। নতুন কিছু সৃষ্টি করতে হলে সার্বজনীন প্রয়োজনীয়তাকে প্রাধান্য দিয়েই করতে হবে। নতুবা নতুন সৃষ্টির প্রয়োজনীয়তা এবং সৃজনশীলতা কোনটিরই যুগের চাহিদার সাথে সন্নিবেশীত হবেনা। তবে বহুকাঙ্খিত বহুপাক্ষিক রাখুগ্রাসীদের চাহিদা পুরনে স্বল্পসময়ের জন্য হয়ত কিছু একটা হবে কিন্তু এর স্থায়ী ও প্রয়োজনীয়তা স্বল্পসময় পরেই ফুরিয়ে যাবে। জনতা এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্ম কোন উপকারই পাবেনা বরং এর দাসত্ব করে অনেকদিন খেসারত দিতে হবে। তাই ভাবুন এবং সার্বজনীন প্রয়োজনীয়তায় মনযোগী হউন।

বর্তমানের উন্নয়ন ও অগ্রগতিকে এমনকি সার্বজনীন সফলতাকে আকঁড়ে ধরে আগামীর কল্যাণ সুনিশ্চিতকরণে এগিয়ে যাওয়ার জন্য প্রয়োজন ঐক্যমত্য এবং ঐক্যবদ্ধ হয়ে অগ্রসর হওয়া। কাউকে বাদ দিয়ে নয় বরং সকলকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়ে অগ্রসর হওয়াই সমিচীন। ২৪শের বিজয়কে এগিয়ে নিতে গেলে বা নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করতে হলে সকলকে নিয়েই এগিয়ে যেতে হবে এবং পুরাতনকে স্বাগত জানিয়ে পুরাতন থেকে শিক্ষা নিয়ে সার্বজনীনতার তরে এগিয়ে যাওয়াই এখন সময়ের ও যুগের দাবি। তাই প্রতি পদে পদে অগ্রসর হওয়া জরুরী এবং সাবধানতার সহিত অগ্রসর হওয়া উচিত। কোনভাবেই ভুল করা যাবে না এমনকি সার্বজনীনতাকে পাশ কাটিয়ে যাওয়া যাবে না। পুর্বের করা ভুলগুলোকে আর আমলে নেয়া যাবেনা বরং নতুন আঙ্গিকে সার্বজনীন প্রয়োজনীয়তাকে গুরুত্ব দিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। সকলের তরে সকলে আমরা প্রত্যেকে আমরা পরের তরে এই মুলমন্ত্রকে সদা জাগ্রত রেখে কর্মে অগ্রসর হওয়ার আহবান জানাই।

বর্তমানের অর্জনকে আগামীর কোন অর্জনের সঙ্গে তুলনা নয় এমনকি পুর্বের অর্জনগুলোর সঙ্গেও তুলনা নয় বরং পুর্বের করা ভুলগুলো থেকে শিক্ষা নিয়ে বর্তমানের আর্জনকে পরিস্ফুট করুন। তাইলেই হবে নতুন সৃষ্টি এবং সার্বজনীন কল্যাণে তরে আরো একধাপ অগ্রসরতা। এই অগ্রসরতা থেকেই জাতি পাবে দিশা এবং আশা ও আকাঙ্খার ইতিবাচকতা। সকল নেতিবাচকতাকে পিছনে ফেলে নতুন ইতিবাচকতাকে আলিঙ্গন করে ক্ষমা ও ভালবাসার বন্ধনে জড়িয়ে সকলে মিলে অগ্রসর হলেই স্বার্থক জাতি হিসেবে এমনকি বীরের জাতি হিসেবে আরো একধাপ এগিয়ে যাওয়ায় পথ দেখানো যাবে। ভাষার মাসের শিক্ষা ও দিক্ষা থেকে বর্তমানকে শিক্ষিত হতে হবে এবং এই শিক্ষিত হওয়ার ফলস্বরূপ শিক্ষার ব্যবহার সর্বক্ষেত্রে অব্যাহল বা চলমান রেখে অগ্রসর হতে হবে। তাহলেই নতুনের অর্জন সফল ও স্বার্থক হবে। আর পুর্বের অর্জনগুলো এই সফলতায় শীকড় হিসেবে ভুমিকা রাখবে।

সালাম সালাম হাজার সালাম সালাম শহীদ স্মরণে। আমরা ভাইয়ের রক্তে রাঙ্গানো একুশে ফেব্রুয়ারী আমি কি ভুলিতে পারি। মাগো ৮ই ফালগুনের কথা আমরা ভুলি নাই। এভাবেই এগিয়ে যাক আমার সোনার বাংলা এবং আমি তোমায় ভালবাসীর ে¯্লাগান। বাস্তব জীবনে কর্ম ও চিন্তার মধ্যে সমন্বয় ঘটিয়ে এগিয়ে যাক আগামীর সকল পথ চলায় এবং সার্বজনীন কল্যাণ ও মঙ্গলের তরে। এই হউক আমাদের আজ ও আগামীর চাওয়া-পাওয়া এবং শুভকামনা।

Leave a Reply

Your email address will not be published.