শিক্ষককে মারধোর করায় কসবায় মানববন্ধন ও প্রতিবাদ

কসবা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি ॥ কসবা উপজেলার কায়েমপুর ইউনিয়নের মইনপুর মদিনাতুল উলুম দাখিল মাদ্রাসার সিনিয়র সহকারী শিক্ষক মো.জহির উদ্দিন (৫৭) কে বেদম পেটালেন একই ইউনিয়নের ইসলামী ছাত্র শিবিরের সভাপতি মো.আবদুর রহমান (২৪) ও তার বড় ভাই মো.আল-আমিন (২৭)। এ ঘটনায় আসামীদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ হয়েছে গত সোমবার ১৭ ফেব্রুয়ারি। আসামিদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবিতে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি সকাল ১১টায় ওই মাদ্রাসা প্রাঙ্গনে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা করেছেন মাদ্রাসার ছাত্র,শিক্ষক ও অভিভাবকগণ। প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখেন মাদ্রাসার সুপার মো.শাহ-আলম,পার্শ্ববর্তী মহিলা মাদ্রাসার সুপার আবু সলেহ মো.ইকবাল হোসেন,অভিভাবক সদস্য অহিদ মিয়া প্রমুখ।

জানা যায় শিবির নেতা আবদুর রহমানের পিতা এই মাদ্রাসার সাবেক চাকুরিচ্যুত সুপার মো.হাবিবুর রহমান। হাবিবুর রহমান ২০০২ সাল থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতি করেছেন।ওই সময় তিনি ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যদের স্বাক্ষর জাল করে ৪ জন শিক্ষককে নিয়োগ দিয়েছিলেন। অপর দিকে ব্যবস্থাপনা কমিটির তৎকালীন সভাপতি সাবেক সচিব আজহারুল ইসলামের স্বাক্ষর জাল করে ৩টি চেকের মাধ্যমে জনতা ব্যাংক কসবা শাখা থেকে ৫০ হাজার টাকা উত্তোলন করে আত্মসাত করেন। এসমস্ত ঘটনায় হাবিবুর রহমান চাকুরিচ্যুত হন। গুরুতর অপরাধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তার শিক্ষকতার ইনডেক্স বাতিল করে দেন। স্থানীয় অধিবাসী ও শিক্ষকগণ জানান সিনিয়র সহকারী শিক্ষক মো.জহির উদ্দিন সাবেক সচিব ও মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা আজহারুল ইসলামের চাচাতো ভাই। বর্তমান এই মাদ্রাসার সুপার মো.শাহ-আলম জানান,চাকুরিচ্যুতির পর হাবিবুর রহমান এই প্রতিষ্ঠানের সকলের প্রতিই ক্ষুব্ধ।তিনি শিক্ষাসচিব থেকে শুরু করে মাদ্রাসার সংশ্লিষ্ট সকল কর্মকর্তাদেও বিরুদ্ধে একে একে ৭টি মামলা করেছেন। তার মামলা থেকে জেলা প্রশাসক,উপজেলা নির্বাহী অফিসার কেউই বাদ পড়েনি। ৫টি মামলা আদালত খারিজ করে ফেলেছেন। বর্তমানে ২টি মামলা চলমান রয়েছে। তার ছেলেরা মাদ্রাসার প্রধান ফটক ও মসজিদের ভিত্তি প্রস্তরও ভাংচুর করেছে।তিনি এসমস্ত ঘটনায় দায়ী আবদুর রহমান ও আল-আমিনের বিচার দাবী করেছেন। ব্যবস্থাপনা কমিটির অভিভাবক সদস্য অহিদ মিয়া বলেন,প্রতিষ্ঠানে ঢুকে এভাবে হামলা ও প্রাণনাশের হুমকী কোনো ক্রমেই মেনে নেয়া যায় না। আমরা তাদের শাস্তি চাই। হামলাকারী কাইমপুর ইউনিয়ন শিবির সভাপতি আবদুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন,গত ১৬ ফেব্রুয়ারি সকালে হোন্ডা নিয়ে রাস্তা দিয়ে যাওয়ার পথে আমি হোন্ডাসহ কাত হয়ে পড়ে যাই। এতে জহির স্যারের গায়ে লাগলে তিনি ব্যাথা পান। এ ব্যাপারে সিনিয়র সহকারী শিক্ষক মো.জহির উদ্দিন বলেন,আবদুর রহমান ও তার ভাই আল-আমিন মাদ্রাসার ভিতরে ঢুকে আমাকে বেদম প্রহার করে এবং গলায় চিপে ধরে। শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রীরা আমাকে তাদের কবল থেকে উদ্ধার করে। আমি ও বর্তমান সুপার মো.শাহ-আলম স্যার ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো.ছামিউল ইসলাম মহোদয়কে জানিয়ে গত সোমবার থানায় অভিযোগ দিয়েছি। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি সাংবাদিকদের জানান এ বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য আমি কসবা থানা অফিসার ইনচার্জকে বলেছি। এ বিষয়ে কসবা থানা অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আবদুল কাদেওবলেন,তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.