প্রশান্তি ডেক্স ॥ ড. আহসান এইচ মনসুর। ২০২৪ সালের আগস্ট মাসে বাংলাদেশ ব্যাংকের ১৩তম গভর্নর হিসেবে নিয়োগ পান। তার নিয়োগের জন্য সরকারকে বাংলাদেশ ব্যাংকের আইন সংশোধন করে গভর্নরের বয়সসীমা তুলে দিতে হয়েছিল। কারণ তার বয়স তখন ৭২ বছর ৮ মাস ছিল। গভর্নর হিসেবে তিনি যখন দায়িত্ব নেন, তখন দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ছিল নাজুক। ডলারের সংকট তীব্র আকার ধারণ করে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমতে কমতে তলানিতে গিয়ে ঠেকে। ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলনের হিড়িক পড়ে যায়। ব্যাংক খাতে তারল্য সংকট প্রকট আকার ধারণ করে।

বাজারে জিনিসপত্রের দাম বাড়তে থাকে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হচ্ছিল না। গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে ড. আহসান এইচ মনসুর ব্যাংকিং খাতে বেশ কিছু পরিবর্তন ও পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। ব্যাংকিং খাতে তারল্য সংকট মোকাবিলায় তিনি দুর্বল ও সমস্যা কবলিত ব্যাংকগুলোকে নতুন টাকা ছাপিয়ে ধার দেন। তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে ডলার সংকট, বৈদেশিক মুদ্রা এবং ঋণ শৃঙ্খলা নিয়ে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। ড. মনসুরের নেতৃত্বে গৃহীত এসব পদক্ষেপের ফলে রিজার্ভেও পতন থেমে গেছে এবং স্থিতিশীলতা বজায় রয়েছে। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর জানিয়েছেন, বাংলাদেশ ইতোমধ্যে পৌনে দুই বিলিয়ন ডলারের বিদেশি ঋণ পরিশোধ করেছে রিজার্ভে হাত না দিয়ে। এর বাইরে বিভিন্ন প্রকল্পেরও ঋণ ও সুদ বাবদ প্রায় সোয়া এক বিলিয়ন ডলার পরিশোধ করেছে সরকার। সর্বোপরি, আহসান এইচ মনসুরের নেতৃত্বে বাংলাদেশ ব্যাংক তারল্য সংকট মোকাবিলা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি বৃদ্ধি এবং গ্রাহকদের স্বার্থ সুরক্ষায় বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর হিসেবে ড. আহসান এইচ মনসুর দায়িত্ব নেওয়ার পর ব্যাংকিং খাতে আস্থা পুনরুদ্ধারে বেশ কিছু কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। এর ফলে ব্যাংকিং খাতে ইতিবাচক পরিবর্তন পরিলক্ষিত হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন বলেন, ‘ড. আহসান এইচ মনসুর কেন্দ্রী ব্যাংকের দায়িত্ব নেওয়ার পর বেশ কিছু উন্নতি হয়েছে। তিনি গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পরই বিনিময় হারকে বাজারভিত্তিক করার উদ্যোগ নিয়েছেন। এতে ডলারের সরবরাহ বেড়ে গেছে। আর ডলারের সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় রিজার্ভের পতন থামানো গেছে। কেন্দ্রী ব্যাংকে এসেই উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণেই জোর দিয়েছেন গভর্নর।’
মুখপাত্র আরও বলেন, ‘আহসান এইচ মনসুরের নেওয়া পদক্ষেপে ব্যাংকে আমানত বাড়তে শুরু করেছে। ব্যাংকের প্রতি মানুষের আস্থা বেড়ে যাচ্ছে। তিনি ব্যাংকিং খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো— ১২টি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন, দখলদারদের হাত থেকে ব্যাংক উদ্ধারে বড় ভূমিকা রেখেছেন।’
ব্যাংকে আমানত বৃদ্ধির ধারা : দীর্ঘদিন ধরে ব্যাংক খাতে আস্থার সংকট ও আর্থিক অনিয়মের কারণে অনেক গ্রাহক ব্যাংক থেকে টাকা তুলে নিচ্ছিলেন। তবে সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, এই চিত্র বদলাতে শুরু করেছে। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে ব্যাংকে ১,০৮৫ কোটি টাকা পুনরায় জমা হয়েছে, যা অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক সংকেত। ডিসেম্বর শেষে ব্যাংকের বাইরে থাকা নগদ অর্থের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২.৭৬ লাখ কোটি টাকা, যা নভেম্বরে ছিল ২.৭৭ লাখ কোটি টাকা। যদিও ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে এটি ছিল ২.৫৫ লাখ কোটি টাকা, তবে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে এই প্রবণতা উল্টো পথে হাঁটতে শুরু করেছে।
ব্যাংকিং খাতে সুশাসন শ্রতিষ্ঠা : ড. মনসুরের নেতৃত্বে বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যাংকিং খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো কমপক্ষে ১২টি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন, দখলদারদের হাত থেকে ব্যাংক উদ্ধার এবং কাগুজে নোট ছাপিয়ে ব্যাংকের তারল্য সংকট না কমানোর সিদ্ধান্ত। এসব পদক্ষেপের ফলে ব্যাংক খাতে সুশাসন ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা জোরদার হয়েছে।
খেলাপি ঋণ নিয়ন্ত্রণ : খেলাপি ঋণের উচ্চ হার ব্যাংক খাতের জন্য গভীর উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক আশঙ্কা করছে, বিতরণ করা মোট ঋণের ৩০ শতাংশ পর্যন্ত খেলাপিতে পরিণত হতে পারে। এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় ঋণ শ্রেণিবিন্যাস ও আদায়ের জন্য আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ব্যবস্থা চালু করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। এর বাইরে আরও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নীতি ও পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন গভর্নর তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু পদক্ষেপ নিম্নরূপ:
নীতি সুদহার বৃদ্ধি : উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে তিনি নীতি সুদহার (রেপো রেট) ধাপে ধাপে বৃদ্ধি করেছেন নতুন গভর্নর। সেপ্টেম্বর ২০২৪-এ নীতি সুদহার ৯ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৯.৫০ শতাংশ করা হয়। এরপর অক্টোবর ২০২৪-এ আরও ৫০ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়ে ১০ শতাংশে উন্নীত করা হয়। এছাড়া, আন্তব্যাংক ধারের সুদহার করিডোরের ঊর্ধ্বসীমা স্ট্যান্ডিং লেন্ডিং ফ্যাসিলিটির (এসএলএফ) হার ১১ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১১.৫০ শতাংশ এবং নিম্নসীমা স্ট্যান্ডিং ডিপোজিট ফ্যাসিলিটি (এসডিএফ) ৮ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৮.৫০ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়।
উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে জোর : উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণেই জোর দিতে চায় বাংলাদেশ ব্যাংক। এ জন্য বিনিময় হারের ওপর চাপ কমিয়ে রিজার্ভ ধরে রাখতে চায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পদক্ষেপে সরকারও সমর্থন দিচ্ছে। এ কারণে সরকারের পক্ষ থেকে ব্যাংক খাত থেকে ঋণ গ্রহণের লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। ব্যাংক খাত থেকে চলতি অর্থবছরে সরকারের ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লাখ ৩৭ হাজার কোটি টাকা। সেটি কমিয়ে ৯৯ হাজার কোটি টাকা করা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক আগামী জুনের মধ্যে মূল্যস্ফীতি ৭-৮ শতাংশে নামিয়ে আনতে চায়। সেই লক্ষ্য নির্ধারণ করে চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধের (জানুয়ারি-জুন) জন্য নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, আপাতত তাদেও প্রধান লক্ষ্য মূল্যস্ফীতির কমিয়ে আনা। তাই এ মুহূর্তে জিডিপি প্রবৃদ্ধিকে খুব বেশি অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে না।
আগামী বছরের শুরুতে মূল্যস্ফীতির হার ৫ শতাংশে নামানো যাবে বলে মনে করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। একইসঙ্গে ৪-৫ মাস পর অর্থাৎ জুন নাগাদই তা ৭ থেকে ৮ শতাংশে নামানো সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে। গত ১০ ফেব্রুয়ারি চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের শেষ ছয় মাসের জন্য নতুন মুদ্রানীতির ওপর এক প্রেজেন্টেশন প্রদানকালে এমন আশাবাদ ব্যক্ত করেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর হাবিবুর রহমান।
ব্যাংক খাতে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা : ব্যাংক থেকে অর্থ লোপাট ও পাচারকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছেন গভর্নর তিনি ঘোষণা করেছেন, যারা ব্যাংকের অর্থ লোপাট করে বিদেশে সম্পদ গড়েছেন, তাদের সম্পদ খুঁজে বের করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ লক্ষ্যে বিদেশি প্রতিষ্ঠান নিয়োগ করে সম্পদ মূল্যায়ন শুরু করা হয়েছে।
অর্থপাচার বন্ধে পদক্ষেপ : বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর দায়িত্ব গ্রহণের পর অর্থপাচার রোধে এবং পাচারকৃত অর্থ পুনরুদ্ধারে বিভিন্ন কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। তিনি পাচারকারীদের বিরুদ্ধে সমন্বিত আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার ওপর জোর দিয়েছেন এবং প্রয়োজনে বিদেশি আদালতে মামলা পরিচালনার জন্য আইনজীবী নিয়োগের পরিকল্পনা করেছেন।
একাধিক অনুষ্ঠানে তিনি উল্লেখ করেছেন, সুশাসন প্রতিষ্ঠার ফলে অর্থপাচার উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে, যার ফলে অর্থ দেশের মধ্যেই থাকছে।
এদিকে পাচারকৃত অর্থ পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে ড. মনসুর আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সঙ্গে সমন্বিতভাবে কাজ করছেন এবং পাচারকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
বাজারভিত্তিক বিনিময় হার : ড. মনসুরের নেতৃত্বে বাংলাদেশ ব্যাংক বিনিময় হারকে বাজারভিত্তিক করার উদ্যোগ নিয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর হিসেবে ড. আহসান এইচ মনসুর ২০২৪ সালের আগস্ট মাসে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে ডলারের বিনিময় হার স্থিতিশীল রাখতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। দায়িত্ব নেওয়ার সময় এক মার্কিন ডলারের বিনিময় হার প্রয় ১২০ টাকার কাছাকাছি ছিল, যা বর্তমানে প্রয় ১২২ টাকার আশপাশে রয়েছে।
এছাড়া, রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধির ফলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে, যা বিনিময় হার স্থিতিশীল রাখতে সহায়তা করছে। গত জানুয়ারি মাসে বাংলাদেশ ২.১৮ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পেয়েছে, যা টানা ছয় মাস ধরে ২ বিলিয়নের বেশি থাকছে।
সর্বোপরি, ড. আহসান এইচ মনসুরের নেতৃত্বে গৃহীত পদক্ষেপগুলোর ফলে ডলারের বিনিময় হার মোটামুটি স্থিতিশীল রয়েছে।
ডলারের বাজারে শৃঙ্খলা আনতে নতুন নির্দেশনা জারি : বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর দায়িত্ব গ্রহণের পর ডলারের সরবরাহ বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। ড. মনসুরের নেতৃত্বে ডলারের বাজারে শৃঙ্খলা আনতে নতুন নির্দেশনা জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এখন থেকে ছোট-বড় সব আমদানিতে এবং প্রবাসী আয় ও রফতানি আয়ের ডলার কেনার ক্ষেত্রে একই দামে ডলার বিক্রি করতে হবে। ডলার কেনা ও বিক্রির মধ্যে সর্বোচ্চ এক টাকার পার্থক্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া, ব্যাংকগুলোকে তাদের শাখাগুলোতে ডলারের দাম ডিজিটাল বোর্ডে প্রদর্শন করতে হবে।
রিজার্ভ বৃদ্ধি ও স্থিতিশীলতা : গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পতন থেমে গেছে এবং স্থিতিশীলতা ফিরে এসেছে। বর্তমানে রিজার্ভ প্রায় ২০ বিলিয়ন ডলারে স্থিতিশীল রয়েছে। ড. মনসুরের নেতৃত্বে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং স্থিতিশীল হচ্ছে। বর্তমানে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বিপিএম-৬ অনুযায়ী ২ হাজার ৬১ কোটি ডলারে পৌঁছেছে। ১৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দেশের গ্রস রিজার্ভের পরিমাণ ২ হাজার ৫৮৭ কোটি ডলার।
ডলারের বিপরীতে টাকার মান সমন্বয় করার ফলে প্রবাসীরা ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠাতে উৎসাহিত হচ্ছেন, যার ফলে রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধি পেয়েছে। জানুয়ারি মাসে বাংলাদেশ ২.১৮ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পেয়েছে, যা টানা ছয় মাস ধরে ২ বিলিয়নের বেশি। সর্বোপরি, ড. আহসান এইচ মনসুরের নেতৃত্বে গৃহীত পদক্ষেপগুলোর ফলে ডলারের সরবরাহ বৃদ্ধির লক্ষ্যে কিছু অগ্রগতি হয়েছে। এছাড়া, আমদানি ব্যয় নিয়ন্ত্রণ এবং রফতানি আয় বৃদ্ধির মাধ্যমে রিজার্ভ স্থিতিশীল রাখতে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে রেমিট্যান্স প্রবাহ ২৬.৭০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, আর রফতানি আয় বেড়েছে ১১ শতাংশ।
আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বৃদ্ধি : ড. মনসুর সার্ক ফাইন্যান্স নেটওয়ার্কের চেয়ারপারসন হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন, যা দক্ষিণ এশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখবে। এই নীতিমালা ও পদক্ষেপগুলোর মাধ্যমে ড. আহসান এইচ মনসুর দেশের আর্থিক স্থিতিশীলতা ও ব্যাংকিং খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় কাজ করে যাচ্ছেন।
বিতর্কের সৃষ্টি : বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর হিসেবে ড. আহসান এইচ মনসুর দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে তার কিছু নীতি ও পদক্ষেপ বিতর্কের সৃষ্টি করেছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু নিম্নরূপ:
সুদের হার বৃদ্ধি : মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে তিনি নীতি সুদহার বৃদ্ধি করেছেন। তবে, এই সিদ্ধান্তের ফলে ব্যবসায়িক খরচ বেড়েছে এবং কিছু ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, এটি বিনিয়োগ ও উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
টাকা ছাপিয়ে তারল্য সহায়তা প্রদান : প্রথমে টাকা ছাপিয়ে তারল্য সহায়তা না দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও পরবর্তী সময়ে তিনি দুর্বল ব্যাংকগুলোর গ্রাহকের আস্থা ফেরাতে টাকা ছাপিয়ে ২২,৫০০ কোটি টাকা সহায়তা প্রদান করেন। এই পদক্ষেপটি সমালোচিত হয়েছে। কারণ এটি মূল্যস্ফীতির চাপ বাড়াতে পারে এবং অর্থনীতিতে দীর্ঘমেয়াদি নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। এই নীতিমালা ও পদক্ষেপগুলো বিভিন্ন মহলে বিতর্কের সৃষ্টি করেছে এবং অর্থনীতির বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলেছে।