সাজেকের আগুনে ঘরহীন লুসাই-ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর বহু মানুষ

প্রশান্তি ডেক্স ॥ রাঙামাটির সাজেকে আগুনের ঘটনায় সাজেকে পুড়েছে ৩৪টি রিসোর্ট, সাতটি রেস্টুরেন্ট, ১৮টি দোকান এবং স্থানীয়দের ৩৬টি বসতঘর। অগ্নিকাণ্ডের পর রুইলুই পাড়া স্টোন গার্ডেনে খোলা আকাশের নিচে রাত কাটছে স্থানীয় লুসাই ও ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর মানুষদের। লুসাই জনগোষ্ঠীর ১৬টি এবং ত্রিপুরাদের ২০টি বসতঘর পুড়ে যায়।

গত সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে লাগা এ আগুনে প্রায় ১০০ কোটি টাকা ক্ষয়ক্ষতির দাবি করেছে সাজেক কটেজ-রিসোর্ট মালিক সমিতি। বর্তমানে সাজেকে বিশুদ্ধ পানি ও খাবারের সঙ্কট দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

কটেজ-রিসোর্ট মালিক সমিতির তাদের নেতৃবৃন্দ জানান, সাজেক ইকো ভ্যালি রিসোর্টে বিদ্যুতের শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত। এরপর অবকাশ, মেঘছুট মারুয়াটি রেস্টুরেন্ট, মনটানা রেস্টুরেন্ট, চিলেকোঠা রেস্টুরেন্ট থেকে শুরু করে মোট ৯৫টি রিসোর্ট, দোকান, রেস্টুরেন্ট ও বসতঘর পুড়ে গেছে। সেনাবাহিনী, বিজিবি, ফায়ার সার্ভিস, স্থানীয় বাসিন্দা, রিসোর্ট মালিক ও স্টাফ এবং ট্যুরিস্টদের সার্বিক প্রচেষ্টায় রাত ২টায় আগুন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আসে।

১৬৭ নম্বর রুইলুই মৌজার হেডম্যান লাল থাঙ্গা লুসাই বলেন, ‘আগুনের ঘটনায় আমার বসতবাড়িসহ আশপাশের বিভিন্ন স্থাপনা পুড়ে গেছে। হঠাৎ আগুনে কিছুই বের করতে পারিনি। নিঃস্ব সবাই। সরকারি সহায়তা ছাড়া ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব না। ভবিষ্যতে আগুন থেকে রক্ষা পেতে ফায়ার স্টেশন স্থাপন প্রয়োজন।’সাজেক কটেজ ও রিসোর্ট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক চাই থোয়াই চৌধুরী জয় বলেন, গত ‘সোমবার রাতে যেসব পর্যটক ছিল, তারা গত মঙ্গলবার সকালে নিরাপদে চলে গেছেন, কারও কোনও সমস্যা হয়নি। আগুনের ঘটনায় ১০০ কোটি টাকা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।’

এদিকে, আগুনে পুড়ে যাওয়া ক্ষতিগ্রস্তদের পরিবারদের অর্থসহ ত্রাণসহায়তা প্রদান করেছে বাঘাইছড়ি উপজেলা প্রশাসন। গত বুধবার সকালে সাজেকের শিব মন্দির প্রাঙ্গণে এসব বিতরণ করেন স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক মোবারক হোসেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিরীন আক্তার।

এ সময় আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে গির্জা ও মন্দিরে আশ্রয় নেওয়া স্থানীয় ৩৬ পরিবারের প্রতিটিকে সাড়ে ৭ হাজার টাকার চেক, ৩০ কেজি চাল, শুকনো খাবার ও কম্বল দেওয়া হয়।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে আপাতত আর্থিকসহ নানা সহায়তা করা হচ্ছে। পরবর্তী সময়ে পুনর্বাসনে সহায়তা করা হবে। ক্ষতিগ্রস্ত কেউ বাদ পড়লে তাদেরও সহায়তা করা হবে।’

এ আগুনে বসতঘর হারিয়ে লুসাই ও ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের দুই শতাধিক মানুষ গির্জা ও মন্দিরে আশ্রয় নিয়েছে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published.