অর্থ এবং ক্ষমতা এই দুইয়ে মিলে এখন সমাজ, সংসার, দেশ ও জাতি এবং মানবতা আর ন্যায়বিচারকে জালিয়ে পুড়িয়ে ছাড়খার করছে। এই দুইয়ের যৌথ অভিযান বা মহড়া থেকে আশু মুক্তির কোন লক্ষণ পরিলক্ষিত হয়নি এবং হবেও না। অতিত এবং বর্তমান আর ভবিষ্যত একই গন্তর্বের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। কোনক্রমেই এই দুইয়ের ছোবল থেকে পৃথিবীবাসী বের হতে পাড়ছে না এবং আমাদের এই ক্ষুদ্র দেশে বৃহৎ জনগোষ্ঠির মাঝেও এর ছোবল প্রকারান্তরে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
বর্তমান কখনো অতীত থেকে শিক্ষা নেয়নি এবং ভবিষ্যতে নিবে কিনা তার দৃষ্টান্ত এই বর্তমান থেকে পরিস্কার বুঝা যায় যে, ভবিষ্যৎ সবসময়ই অর্থ আর ক্ষমতার প্রয়োজনে সংস্কার এবং সংযোজন ও বিয়োজন হয়ে থাকে মাত্র কিন্তু কোন শিক্ষা নেয়নি সংশোধনের জন্য। কোন কালেই জাতির প্রয়োজনে কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি এবং হবেও না। তবে জাতিকে সামনে রেখেই এমনকি জাতিকে ভেলকি দেখিয়েই সকল পদক্ষেপ নেয়া হয় এবং হবে। তবে এইসকল পদক্ষেপ থেকে জাতি উপকৃত হওয়ার আশা দেখেছে এবং সেই আশায় গুড়েবালিও হয়েছে। দেরিতে হলেও জাতি বুঝতে পেরেছে এবং প্রত্যক্ষও করেছে কিন্তু করার কিছুই ছিল না। বারংবার জাতি প্রতারিত হয়েছে; আশাহত হয়েছে এবং নিরুপায় হয়ে সবই মেনে নিয়েছে। কিন্তু মাঝে মাঝে মাথাচাড়া দিয়েও উঠেছে এবং এতে বৃহৎ পরিবর্তন সাধিতও হয়েছে কিন্তু সেই পরিবর্তনেও জাতির ভাগ্যাকাশে কোন ইতিবাচক তিলক আটেনি।
নিয়তির এই নির্মম স্বিকারে জাতির আশা-আখাঙ্কা বার বার ভুলুন্ঠিত হয়েছে। যা ইতিহাস ও সংস্কৃতি এবং নেতিবাচকতা থেকে দৃশ্যমান রয়েছে। তবে এই ক্ষেত্রে যারাই দায়িত্ব নিকনা কেন তারাতো মানুষ এবং মানুষ তো শয়তানের অধিনেই বেশীরভাগ সময় অতিবাহিত করে। কারন মানুষ সৃষ্টিকর্তার অবাধ্য হয়ে শয়তানের সঙ্গে বসবাসে আগ্রহী। তবে কেউ কেউ ফিরে এসে সৃষ্টিকর্তার সঙ্গে বসবাস শুরু করেছেন এবং ক্ষমতা ও অর্থ এই দুইয়ের কাছ থেকে যোজন যোজন দূরে অবস্থান করছেন। তাদের চিন্তা চেতনা এবং কর্মকান্ড ইতিবাচক ও কল্যাণকর এবং ক্ষমা ও ভালবাসায় মোড়ানো। সেবার মনোভাবে জড়িয়ে ক্ষমতা ও অর্থকে প্রত্যাখ্যান করে সৃষ্টিকর্তার আশির্বাদ বিলিয়ে যাওয়া মানুষগুলিও আজ ক্লান্ত এবং পরিশ্রান্ত। শুধু অর্থ এবং ক্ষমতার যৌথ মহড়ার কারণে। এই দুইয়ে পৃথিবীর ইতিবাচকতাকে ঘায়েল করে নেতিবাচকতায় পর্যবসিত করে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। তাই সচেতন ও বিবেকবান মানুষজন এবং খোদায়ী মূল্যবোধসম্পন্ন জীবনাচরনে অভ্যস্তরাই হাতরিয়ে বেড়াচ্ছে ইতিবাচকতাকে ফিরিয়ে আনতে এবং নেতিবাচকতাকে বিদায় করতে। তবে সবই হচ্ছে নি:শর্ত এবং নি:স্বার্থ ভালবাসার বন্ধনে জড়িয়ে ক্ষমা ও ভালবাসার আলিঙ্গনে।
সকলেই এগিয়ে আসুন সঠিক ইতিহাস, সঠিক জীবন, সঠিক সংস্কৃতি, সঠিক গন্তব্য এবং কর্মপরিকল্পনার দিকে। একটি কথা মনে রাখবেন। আপনার আমার ভবিষ্যত ঠিক করা আছে এবং সেই ভবিষ্যত আমাদের মঙ্গলের জন্য। আর সেই মঙ্গলময় ভবিষ্যতকে পুর্ণাঙ্গতা পাইয়ে দিতে হবে। সেই দিকে মনযোগ দিতে হবে। এই প্রসঙ্গে সৃষ্টিকর্তার বানী এইরকম “ তোমাদের জন্য আমার পরিকল্পনার কথা আমি জানি, তা তোমার মঙ্গলের জন্য, অপকারের জন্য নয়। আমার পরিকল্পনার মাধ্যমেই তোমাদের ভবিষ্যতের আশা পূর্ণ হবে।” হ্যা আমরা সেইদিকেই মনোসংযোগ করি এবং কৃতকর্ম সম্পাদনে নিজেদেরকে নিয়োজিত রাখি।
এই কঠিন সময়ে এসে যুবকদের উদ্ধেশ্যে বলতে চাই “ছেলে আমার তুমি তোমার পিতার কথায় কান দাও এবং পিতার উপদেশ পালনে মনযোগী হউ। সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছা যুবকেরা যেন বিচার বুদ্ধি পাই এবং সেই অনুযায়ী তাদের আগামীর কর্ম সম্পাদন করতে পারে। তাই যুবকদের এও বলছি যে, আগামীর কর্মকান্ড হউক মানবতার কল্যাণের তরে আর সৃষ্টিকর্তার দেখানো ও শিখানো পথে। তিনি বর্তমানের জন্য এই উপদেশটুকুই আমাদের সকলের জন্য উন্মুক্ত করেছেন-“যা সত্য যা উপযুক্ত যা সৎ যা খাঁটি যা সুন্দর যা সম্মান পাবার যোগ্য, মোট কথা যা ভাল এবং প্রশংসার যোগ্য সেইদিকে তোমরা মন দাও।” এই সুন্দর উপদেশ এবং খাঁটি পরামর্শগুলো স্মরণে নিয়ে সৃষ্টিকর্তার সাহায্য চেয়ে অগ্রসর হও তাহলেই তোমাদের এবং আগামীর কল্যাণ সাধিত হবে। তবে আরো একটি কথা মনো রেখো- “তুমি যেই রকম আশা করো ঠিক সেই রকম তুমি আগে করে দেখাও।” হ্যা তাহলেই তোমার চাওয়া ও পাওয়া পরিপূর্ণতা পাবে। এই ক্ষেত্রে গ্রামের কৃষকের একটি উপমা মনে পড়লো- ছায়াও ছায়াকে পা দেখায়। যেমন কৃষক যদি পা উপড়ে উঠায় বা কাউকে লাথি মারতে চাই তাহলে ছায়াও কিন্তু ঠিক একই কাজ করে থাকে। তাই সাবধান হউন এবং সঠিক কাজ সঠিক সময়ে সম্পাদন করুন।
অর্থ ও ক্ষমতা এই দুইয়ের মোহ থেকে বের হয়ে সৃষ্টির কল্যাণে নিবেদিত প্রাণ হয়ে কাজ করুন। সেবার মানুষিকতা এবং মনোভাব নম্রতার সঙ্গে ক্ষমা ও ভালবাসার আলিঙ্গনে মিশিয়ে ব্যবহার করুন। জাতির ক্রান্তিকালে স্বার্থের দ্বন্দের অবসান করুন। স্বার্থ হাসিলের লক্ষে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কার্য সম্পাদন শেষে নিজ স্বার্থ চরিতার্থে ঐক্যে ফাটল রোধ করুন। নিজ নিজ স্বার্থ নয় বরং সামষ্টিক এবং সার্বজনিন স্বার্থের নির্যাসে সার্বজনীন কল্যাণ সাধন করুন। বৃহৎ ঐক্যই পারে অর্থ এবং ক্ষমতার ঘেরাকল থেকে আমাদের সকলকে মুক্ত রাখতে এবং করতে। আসুন আমরা সৃষ্টিকর্তার সান্নিধ্যে থেকে তাঁরই অভিপ্রায়ে অগ্রসর হয়। সৃষ্টিকর্তা আমাদেরকে তাঁর ইচ্ছায় ব্যবহার করবেন যেন সার্বিক কল্যাণে সৃষ্টিজগত তুষ্টি লাভ করে। এই বিশ্বাস ও কামনায় আগামীর প্রত্যশায় নতুন আশায় বুকবেধে অগ্রসর হওয়ার প্রত্যয়ে বহমান রইলাম।