কসবায় স্ত্রী ও শালিকাকে খুন করে পালিয়েছে পাষন্ড স্বামী

ভজন শংকর আচার্য্য ,কসবা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি ॥ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় স্বামীর হাতেই শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্ত্রী ও শালিকাকে। গত রবিবার(২ মার্চ) গভীর রাতে উপজেলার ভারত সীমান্তবর্তী গ্রাম ধজনগরে এই নির্মম হত্যা কান্ড সংঘটিত হয়েছে। স্ত্রী জ্যোতি আক্তার (২৫) ও শালিকা স্মৃতি আক্তার (১৪) কে হত্যা করে ঘাতক আমির হোসেন সামিউল স্বর্ণালংকার, মোবাইল ফোন নিয়ে পালিয়ে যায়। গত সোমবার সকালে খবর পেয়ে অফিসার ইনচার্জ কসবা থানা মোহাম্মদ আব্দুল কাদের ও সাব-ইন্সপেক্টর মোহাম্মদ ফারুক হোসেন ঘটনাস্থলে পৌছেন এবং সুরতহাল রির্পোট তৈরি করে দুই বোনের লাশ ময়না তদন্তের জন্য ব্রহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে পাঠান। নিহত জ্যোতি আক্তার ও স্মৃতি আক্তারের ভাই জিহান মিয়া (১১) জানান, তার দুলাভাই ওই রাতে বোনের সংগে না থেকে আমার সংগে ঘুমুতে আসে। ফলে দু’বোনই একই বিছানায় অন্য রুমে ঘুমায়। সকালে ঘুম থেকে উঠে দুলাভাইকে না পেয়ে বোনদের ডাকে জিহান। কিন্তু কেউ তার ডাকে সারা না দিলে সে নাকে স্পশ করে বুজতে পারে তার কোনো বোনই বেঁচে নেই। তার শোর চিৎকারে পাড়া প্রতিবেশীরা এসে দণষ্ফবোনের মৃত দেহ দেখে স্তম্বিত হয়ে যায়। দ্রুত কসবা থানাকে তারা ফোনে মৃত্যুর সংবাদ জানায়। এগারো বছরের শিশু জিহান সাংবাদিকদের জানায়, দেড় মাস আগে একটি মামলায় তার মা লোনা বেগম ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেল হাজতে আটক আছে।

খবর শোনে বড় বোন জ্যোতি আক্তার এসে বাড়িতে তাদের সংগে বসবাস করতে থাকে। গত দুদিন পূর্বে জিহানের দুলাভাই আমির হোসেন সামিউল ও বড় বোন জ্যোতি আক্তার জেলখানায় মাকে যেয়ে দেখে আসে। ২০১৭ সালে বাবা রৌশন আলী মারা গেলে মা লোনা বেগমই তাদের লালন পালন করে। জিহানের বড় ভাই জাবেদ মিয়া (২২) দেড় মাস হয়েছে সৌদি আরবে গিয়েছেন। জিহান আরো জানায়, বড় ভাই বিদেশ থেকে গত কয়েকদিন আগে ৫০ হাজার টাকা বিকাশে পাঠিয়েছে। ভগ্নিপতি ওই মোবাইলটি ও বোনদের স্বর্ণালংকারও নিয়ে গেছে। নিহত জ্যোতি ও স্মৃতির খালা জাহানারা বেগম সকালে খবর পেয়ে পাশ্ববর্তী বড়মুড়া গ্রাম থেকে এসেছেন। তিনি জানান, আমার বোনের কষ্টের শেষ নাই। তার স্বামী ২০১৭ সালে ক্যান্সারে মারা গেলে অনেক কষ্ট করে ৪ সন্তানকে লালন পালন করেছেন। এবিষয়ে অফিসার ইনর্চাজ কসবা থানা মোহাম্মদ আব্দুল কাদের জানান, ঘাতক আমির হোসেন সামিউলের বাড়ি পাশ্ববর্তী ব্রহ্মণপাড়া থানার জামতলি গ্রামে। তিনি বলেন, স্মৃতির পায়ে কাদাঁ মাটি লেগেছিলো। ধারনা করা হচ্ছে ছোট বোনকে বাহিরে শ্বাসরদ্ধ করে হত্যা করা হয়েছে। অপরদিকে তার স্ত্রী জ্যোতি আক্তারকে বিছানায় শ্বাসরদ্ধ করে হত্যা করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, ময়না তদন্তের পর নতুন কোনো তথ্য আসতে পারে। তিনি  বলেন দ্রুতই আসামীকে গ্রেফতার করা হবে। আমাদের টিম তৎপর রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.