রোহিঙ্গাদের খাদ্য সহায়তার পরিমাণ অর্ধেক করা হতে পারে

প্রশান্তি ডেক্স ॥ মিয়ানমার থেকে বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর জন্য পর্যাপ্ত অর্থ সংস্থান করা সম্ভব না হলে আগামী ১ এপ্রিল থেকে খাদ্য সহায়তার পরিমাণ জনপ্রতি ১২ দশমিক ৫ মার্কিন ডলার থেকে কমিয়ে ৬ মার্কিন ডলারে নামিয়ে আনতে বাধ্য হবে বিশ্ব খাদ্য সংস্থা।

গত বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনকূটনীতি অনুবিভাগের মহাপরিচালক মোহাম্মদ রফিকুল আলম।

বিশ্ব খাদ্য সংস্থা এরই মধ্যে এ তথ্য জানিয়ে দিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সেক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং বিভিন্ন সংগঠনের সহায়তায় যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার চেষ্টা করা হবে এবং রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে বাংলাদেশের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।’

দুই বছর মেয়াদি সহায়তা পরিকল্পনা

রোহিঙ্গাদের সহায়তার জন্য জাতিসংঘ এক বছর মেয়াদি পরিকল্পনা প্রণয়ন করে থাকে এবং বছরের শুরুতে সেটি প্রকাশ করে। কিন্তু এবছর পরিকল্পনা দুই বছর মেয়াদের জন্য হবে।

এ বিষয়ে মহাপরিচালক রফিকুল আলম বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকার জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থার ২০২৫-২৬ জয়েন্ট রেসপন্স প্ল্যানের (জেআরপি) আওতায় জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমার নাগরিকদের জন্য ২ বছর মেয়াদি পরিকল্পনা প্রণয়নে কাজ করছে। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের জন্য অর্থায়ন নিশ্চিতকরণে সরকার বছরব্যাপী জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থাসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সঙ্গে কাজ করে। এ বছর জেআরপি চূড়ান্তকরণের প্রক্রিয়া চলমান আছে। এ মাসেই ২০২৫-২০২৬ জেআরপির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে বাজেট হ্রাসসহ যেসব চ্যালেঞ্জ সামনে আসবে, সেগুলোর জন্য যথাসময়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহায়তায় পরিকল্পনা ও কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে।’

সীমিত আন্তর্জাতিক সহায়তা

যুক্তরাষ্ট্রে নতুন প্রেসিডেন্ট দায়িত্ব নেওয়ার পর মার্কিন পররাষ্ট্র নীতির নতুন দিকনির্দেশনা নিয়ে অনিশ্চয়তার পরিপ্রেক্ষিতে রোহিঙ্গাদের জন্য মানবিক সহায়তার বিষয়টি কিছুটা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থার প্রধান ফিলিপ্পো গ্রান্ডির সম্প্রতি ঢাকা সফরের সময়ে এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়।

এ বিষয়ে মহাপরিচালক বলেন, ফিলিপ্পো গ্রান্ডির সফরে রোহিঙ্গা সংকট বিষয়ক চ্যালেঞ্জ ও এর সমাধানে বাংলাদেশের সঙ্গে জাতিসংঘের সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা হয়। এ সময় মার্কিন পররাষ্ট্রনীতির নতুন দিকনির্দেশনা নিয়ে অনিশ্চয়তার পরিপ্রেক্ষিতে বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমার নাগরিকদের মানবিক সহায়তার প্রসঙ্গটি উঠে আসে। বিশ্বের অনেক স্থানেই জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থা তাদের কার্যক্রম সীমিত করতে বাধ্য হয়েছে জানিয়ে ফিলিপ্পো গ্রান্ডি উদ্বেগ প্রকাশ করে জানান যে বর্ণিত বাস্তবতায় আন্তর্জাতিক সহায়তার পরিমাণ ক্রমশ সীমিত হয়ে আসতে পারে।’

বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে আশা প্রকাশ করা হয় যে এই বছরের শেষের দিকে আয়োজিতব্য রোহিঙ্গা সংকট বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে সংকট নিরসনে কার্যকর সমাধান আবিষ্কার করা এবং একই সঙ্গে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সহায়তায় নতুন দাতাদের একত্রিত করা সম্ভবপর হবে বলে মহাপরিচালক জানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published.