কসবায় ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ নেতার হাতে গৃহবধু নির্যাতিত: জোরপূর্বক অলিখিত স্বাক্ষর-আদালতে জালিয়াতি মামলা

অনুসন্ধানী প্রতিবেদক দেলোয়ার হোসেন ॥  কসবা উপজেলায় সৈয়দাবাদ গ্রামে পূর্ব শত্রুতার জেরধরে প্রবাসী দুলাল খানের স্ত্রী নারগিস আক্তার নামের এক গৃহবধূকে বেদম প্রহার করে রক্তাক্ত জখম করেছে তারই বাসুর পুত্র রাজিব এবং সাবেক ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম খান ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা। এই বিষয়ে নারগিস আক্তার থানায় মামলা দায়ের করলে তিনি রফিকুল ইসলাম সন্ত্রাসী কায়দায় তার ছোট সন্তানকে জিম্মি করে তার কাছে থেকে অলিখিত ৩টি একশত টাকার স্ট্যাম্পে জোরপূর্বক  স্বাক্ষর নেয় এবং স্টাম্প গুলোতে তার নিজের মত করে মামলা সাজিয়ে নারগিস কে হয়রানি করছে। অলিখিত স্টাম্পে সাক্ষর নেয়ায় নারগিছ আক্তার গত ২১ আগস্ট স্টাম্প সমূহ উদ্ধার করার লক্ষে আইনগত ব্যাবস্থা নেয়ার জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের  আদালতে মামলা দায়ের করে। স্টাম্প উদ্ধারের মামলা করায় সাবেক ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম খান স্টাম্প গুলো ব্যবহার করে নার্গিস আক্তার ও তার ভাই সবুজ ভূইয়া কে আসামি করে সাড়ে আট লাখ টাকার বানোয়াট মামলা করেন। এ ঘৃন্ন ঘটনা নিয়ে গ্রামে রফিকুল ইসলাম খান ও তার সাঙ্গপাঙ্গদের বিরুদ্ধে নিন্দার ঝর উঠে। নার্গিস আক্তারের দায়ের করা কসবা থানার মামলা সূত্রে জানা যায়। তার স্বামী সরল বলে ভাসুরপুত্র রাজিব খান ভাসুর স্ত্রী আনোয়ারকলি বাসুর কন্যা হীরামুক্তা শ্বশুরের দেয়া বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করতে নানাভাবে চক্রান্ত করে আসছিল। এসব নিয়ে মামলা-মোকদ্দমা রয়েছে। একাধিকবার তার স্বামী দুলাল খানকেও  মারধর করেছে  স্থানীয় গ্রামবাসী ও নার্গিস জানান  দুলাল খান প্রবাসে থাকায় রফিকুল ইসলাম খান নার্গিসকে তার বাড়িতে একান্তে দেখা করতে বলেতেন কিন্তু নার্গিস রফিকুল ইসলামের  স্বভাব চরিত্র সম্পর্কে অবগত থাকায় তিনি তার কথায় সায় দেননি।

ফলে রফিকুল ইসলাম নার্গিসের প্রতি ক্ষিপ্ত ছিল পরে নার্গিস প্রতিবেদক কে জানান ১৪ ই আগস্ট রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে বর্ণিত রাজিব আনারকলি ও হিরা মুক্তা তার বাড়িতে জোরপূর্বক ঢুকে নার্গিস আক্তারকে লাঠিদ্বারা ব্যাপক মারধর করে সন্ত্রাসী কায়দায় এর সকল কাপড়-চোপড় ছিরে সারাদেহে রক্তাক্ত যখম করে এবং শীলতা হানি ঘটায়। এর পরে গ্রামের লোকজন তাকে উদ্ধার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে কয়েকদিন চিকিৎসা নেয়ার পর নার্গিস আক্তার কসবা থানায় গত ২০ আগস্ট মামলা করে এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ২১ আগস্ট তার সন্তানকে জিম্মি করে। খালি স্ট্যাম্পে জোরপূর্বক সাক্ষ্য নেয় সাবেক ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম খান ও রাজিব হিরামনি আনারকলি হিরা মুক্তা। নার্গিস আক্তার জানান আমি নাকি আমার ১৬ বছরের ছেলেকে বিদেশ পাঠানোর জন্য রফিকুল ইসলাম খান এর কাছে থেকে ওই সকল স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করে ৮ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা নিয়েছি এবং ঐসকল টাকা পরিশোধ করছি না তাই। আমি এবং ভাইয়ের বিরুদ্ধে গত ২৭ আগস্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সাজানো ও মিথ্যা মামলা করেছে অথচ আমার ছেলে কলেজে এসএসসি প্রথম বর্ষের ছাত্র এবং তার বয়স ১৬ বছর। আমার ছেলের নামে কোন পাসপোর্ট ও করা হয়নি এদিকে নার্গিস আক্তার কে নিয়ে আনারকলির পুত্র প্রবাস থেকে নার্গিস আক্তারের আপত্তিকর ছবি দিয়ে ও উল্টাপাল্টা লিখে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যবহার অস্বস্তিকর পরিবেশ সৃষ্টি করছে। ঘটনায় নার্গিস চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে য়ৈদাবাদ গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম, কামাল হোসেন, বিল্লাল মেম্বারসহ গ্রামের বহু মানুষ জানিয়েছেন রফিকের কুদৃষ্টি যেসব নারীর উপর পড়েছে ওই সমস্ত পরিবার গুলো ভেঙে তছনছ হয়ে গেছে। এমন একাধিক নারীর সঙ্গে প্রতিবেদকের কথা হয় কিন্তু এরা রফিকের ভয়ে মুখ খুলতে রাজি নয়। নার্গিস আক্তার গত ২১ই আগস্ট স্ট্যাম্প উদ্ধারের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজ্ঞ অতিরিক্ত ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন। বিজ্ঞ আদালত ওইসব স্ট্যাম্প উদ্ধার ও তদন্ত-পূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য কসবা থানাকে নির্দেশ দেন। এ বিষয়ে কসবা থানার অফিসার ইনচার্জ মহিউদ্দিন বলেন নার্গিস আক্তার এর উপর যেসব নির্যাতন হয়েছে সে বিষয়ে আমরা মামলা নিয়েছি স্টাম্প উদ্ধারের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিজ্ঞ আতিরিক্ত ম্যাজিস্ট্রেট আদালত নির্দেশনা আমরা পেয়েছি।  তদন্ত পূর্বক আইনগত ও মানবিকভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। অভিযুক্ত ইউপি সদস্য ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম খানের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান নার্গিস আক্তারকে তিনি মারধর করেননি ও জোরপূর্বক স্বাক্ষর নেননি। নার্গিস আক্তারের মামলার দেড় মাস আগে নার্গিস আক্তার তার কাছ থেকে তার ছেলের বিদেশ যাওয়ার জন্য টাকা নিয়েছেন। নার্গিস আক্তার জানান আমি স্টাম্পে মামলা করার পর সে জানান আমি মিথ্যা মামলা করেছি আর আমি নাকি তার কাছ থেকে আট লাখ ৫০ হাজার টাকা এনেছি। আমার ছেলেকে ইতালি পাঠানোর জন্য। আমার ছেলের তো বয়সই হয়নি। আইডি কার্ড হয়নি এবার কলেজ এর ফাস্ট এয়ার পরে সে। আমার ছেলের আইডি কার্ড নেই পাসপোর্ট বানানো হয় নি তাহলে আমি তার কাছে থেকে টাকা আনবো কেন। আমি তো তাকে দেখলে মাথা উঁচু করে দেখি না পযর্ন্ত। আর আমি নাকি তার কাছ থেকে টাকা এনেছি ২০ দিন পর দিয়ে দিবো জমি বিক্রি করে। আমি এটার একটা সুষ্ঠু বিচার চাই ওরা অনেক অত্যাচার করতেছে আমার উপর। আমি ছেলে মেয়ে নিয়ে বাসায় থাকতে পারছি না। এগুলো সব রফিকুল ইসলাম খান তার ভাগ্নেকে দিয়ে করাচ্ছে। আমি এটির একটি সুষ্ঠু বিচার চাই যাতে এই অন্যায় অন্য কারো সাথে তারা করতে না পারে। আর আমার নামে যে মিথ্যা মামলাটা দেয়া হয়েছে  এটার জন্য আমি আইনমন্ত্রী এবং প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানাই আমাকে যেন এই মিথ্যা মামলা থেকে উদ্ধার করা জন্য সহযোগিতা করেন। জনগণের কাছেও চাই বা যত মন্ত্রী মিনিস্টার আছে এবং পুলিশ প্রশাসন সবার কাছে আমি এটার জন্য সাহায্য চাই । এই বিষয়ে সাপ্তাহিক প্রশান্তি এবং টিতাস টিভিতে এমনকি আরো স্থানীয় পত্রপত্রিকায় সংবাদ পরিবেশন করা হয়েছে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে বলে মনে হয়নি। এই রফিক মেম্বার প্রবাসীদের বউ নিয়ে বহু কেলেঙ্কারী করেছে। বোন পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন বাসা ভাড়া নিয়ে পরকিয়ায় মত্ত থাকতো। বাসার মালিকগণ টের পেয়ে তাকে নোটিশ দিয়ে বাসা থেকে বের করে দেয়ারও প্রমান আছে। সেই বোন পরিচয় দেয়া বোনের স্বামীকে দেশে এলে মেরে ফেলা হয় ভুল ঔষধ প্রয়োগের মাধ্যমে। যা রফিক এবং তার পাতানো বোন পরকিয়া প্রেমিক উভয়েই জ্ঞাতস্বরে করেছে। কসবাতে যে বাসায় থাকত সেই বাসায় প্রতিদিন রফিস যাতায়ত করত এবং গড়ে ৫/৬ ঘন্টা কাটাত। রফিক বাসায় এলে ঐ পরকিয়া প্রেমিকা তার বাচ্ছাদের বাসা থেকে বেড় করে দিয়ে তাদের গোপন অভিষারে ব্যস্ত থাকত। এইসকল অসামাজিক কর্মকান্ডকে এমনকি একটি খুনকেও বিগত সরকারের ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে ধামাচাপা দিয়েছে। সুতরাং এই কুলাঙ্গার রফিকের বিচার না হলে এমনকি প্রশাসন ব্যবস্থা না নিলে সমাজ ও সংসার এবং খোদার দেয়া বিধান বিলিন হওয়ার পথে বসবে। আসুন আমরা সবাই মিলে ঐ ফ্যাসিষ্ট সরকারের দোসরকে আইনের হাতে সোর্পদ করে নির্যাতিতাদের রক্ষা করি এবং সমাজকে কলূষমুক্ত করি।

Leave a Reply

Your email address will not be published.