ক্ষমতা এবং অস্থিরতা এই দুটি শব্দ মিলে এখন বিশ্ব বাণিজ্যকে উত্তাল করেছে; করেছে দিশেহারা। কতিপয় মানুষ ও রাষ্ট্র হয়েছে সর্বশান্ত এবং বিশ্ব হয়েছে অশান্ত হাহাকারমূলক নৈরাজ্যময়। ক্ষমতার ব্যবহার এবং নি:বুদ্দীর ফলাফলের মুখাপেক্ষী হয়েছে বিশ্বালয়। ক্ষমতাকে ব্যবহার করে “যাচ্ছে তাই” করার মানুষিকতায় লিপ্ত হয়েছে ক্ষমতারোহীরা। তবে এই ক্ষমতার বাগাড়ম্বর বেশীদিন টিকবে না বা স্থায়ী হবে না। ইতিহাস এই কথাই বলে।
নিজের সুবিধা ভোগের লিপ্সায় ক্ষমতা ব্যবহার করে পৃথিবীকে বোকা বানানোর কৌশলে মরিয়া এখন বিশ্বালয়। তবে দেখা যাক কার ক্ষমতা কতটুকু। কোনদিকে মোড় নেয় বিশ্বের ক্ষমতাধর দেশগুলোকে শাসন এবং নিয়ন্ত্রণের হাওয়া। তবে এই দিশেহারা হওয়া উত্তাল পৃথিবীতে এখন আবার ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে টিকা থাকার লড়াইও জমজমাট হয়ে উঠেছে। সেই লক্ষ্যে ক্ষমতার সঙ্গে সুর, তাল, লয় ও ছন্দ মিলিয়ে পথ চলতে শুরু করেছে অনেকেই। অনেকেই আবার নিরবতায় অবস্থা পক্ষবেক্ষণ করছে। তবে অনেকেই ঠান্ডা মাথায় পরিকল্পনা এটে ক্ষমতাকে পাকাপোক্তকরণের লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছে। তাই এই উত্তপ্ত অবস্থায় আগ বাড়িয়ে পথ চলতে নেই। এই সময় মাথা ঠান্ড করে জোয়ারে গঁ্যা না ভাসিয়ে অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে সামনে অগ্রসর হওয়া উচিত। সকলেরই মনে রাখা উচিত ক্ষমতা চিরস্থায়ী নয় আর ক্ষমতার ব্যবহারও তাই। তাই ক্ষমতা ব্যবহারে নিজের চেয়ে অন্যের উপকারের বিষয়টি গুরুত্ব দেয়া উচিত। তাহলে ক্ষমতার স্থায়ীত্ব দীর্ঘায়িত হয়।
বিশ্ব বাণিজ্যে ক্ষমতার ছোবল সবসময়ই ছিল এবং আছে ও থাকবে। কিন্তু এইবারের ছোবল একটু ভিন্ন। তবে এই ক্ষমতায় পৃথিবীকে কাছে টানার উপলক্ষ্যে কৌশলী বিষয়টিই বেশী। আগে এই কাছে টানার কৌশল ছিলো কিন্তু তা দেয়ার মাধ্যমে শুরু এবং নেয়ার পর্বটি ছিলো শেষান্তে। আর এখন শুরু হয়েছে নতুন আঙ্গিকে নেয়ার মাধ্যমে আর ডর চালানের মাধ্যমে যাত্রারম্ভ হয়েছে। যে যত বেশী দিতে পারবে সেই ক্ষমতায় টিকে থাকবে আর ক্ষমতাধরদের কাছাকাছি থাকতে পারবে। তবে দেয়ার মাধ্যমে কাছে থাকার কৌশলে বেশিদিন টিকে থাকার সুযোগ হবে না। কারণ যখন আর দেয়ার থাকবে না তখনই ঘটবে বিপত্তি। তাই সাবধানে অগ্রসর হওয়া এখন সময়ের ও যুগের এবং জ্ঞান ও বুদ্দি বিকাশের যুগসুত্রের দাবি।
বিশ্বের সেই চিরায়ত ইতিহায় আমাদেরকে এই শিক্ষায় দেয় যে, ক্ষমতা অস্থায়ী এবং ক্ষমতার ব্যবহার সর্বকল্যাণের জন্য। কিন্তু নিজ কল্যাণে ব্যবহৃত ক্ষমতা ক্ষণস্থায়ী। এইক্ষেত্রে সদ্য বিদায়ী বাংলাদেশ পরাভূত হাসিনা সরকারের দিকে দৃষ্টি দিলেই বোঝা যায় ক্ষমতা কিভাবে অস্থায়ী। জনকল্যাণে এই ক্ষমতাকে ব্যবহার করার ফল কখনো হিতে বিপরীত হতে পারে না। যখন জনকল্যাণ ছেড়ে নিজ কল্যাণে নিয়োজিত হয়ে ক্ষমতার বাগাড়ম্বর শুরু হয় তখনই ঘটে বিপত্তি। আর এই বিপত্তিই জন্ম দেয় ইতি এবং নেতিবাচক ইতিহাস। যা শেখ হাসিনা প্রমান করেছেন। বাংলাদেশের উন্নয়নেরসহ বহু ইতিহাসের জনক তিনি আর প্রকারান্তরে বহু নেতিবাচক ইতিহাসের জন্মদাত্রিও তিনি নিজে। সবচেয়ে বড় ইতিহাস হলো ৫ আগষ্টকেন্দ্রীক ইতিহাস। যা জাতি স্মরণে রাখবে।
এই শুধু হাসিনা সরকারই নয় বরং তার আগে খালেদার সরকারেরও এই ইতিহাস ছিল এবং এরশাদ সরকারেরও এই ইতিহাস ছিল কিন্তু কেউ সেই ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেয়নি। বরং নেতিবাচকতাকে এগিয়ে নিয়েছে মাত্র। তবে এবারের অর্ন্তবর্তী সরকার কি পুরনো এবং নতুন ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিবে নাকি ঐ পূর্বের পথই অনুসরণ করে আরো বড় ধরনের ইতিহাস সৃষ্টি করবে তা সময়ই সকলের সামনে দৃশ্যমান করবে। তবে অনুরোধ থাকবে ইতিবাচক ইতিহাস সৃষ্টি করুন এবং পৃথিবীকে এই ইতিবাচক দৃষ্টান্ত অনুসরন ও অনুকরণ করে সামনে এগুতে পথ দেখান।
নমরুদ এবং ফেরাউন এই দুটি শব্দই (নাম) কলঙ্কিত। ধর্মীয় ইতিহাস এবং কিতাবভিত্তিক জ্ঞাননির্বর মানুষগুলো এই শব্দদুটোকে (নাম) বেশী জানেন এবং চিনেন। তাই এই শব্দ দুটির সঙ্গে পৃথিবীর রাজা ও বাদশাহদের যাদেরই মিল হয়েছে তাদেরই করুন পরিণতি ভোগ করতে হয়েছে। এটিও কিন্তু সৃষ্টিকর্তাই করেছেন। কিন্তু এখনের করানোটাও কিন্তু তিনি তাঁর সৃষ্টি আশরাফুল মাখলুকাতকে ব্যবহার করেই করেছেন। তাই সবাধান হউন এবং ক্ষমতাকে সেবার ধর্মে পরিণত করুন। যার যার স্ব স্ব অবস্থান থেকে সৃষ্টির সেবায় নিয়োজিত হউন। তাহলে সেবার স্থায়ীত্ব দীর্ঘায়ীত হবে এবং সৃষ্টির কল্যাণ সাধনে সৃষ্টিকর্তার অভিপ্রায় পরিপূর্ণ হবে। আসুন আমরা সৃষ্টিকর্তায় মনোনিবেশ করি এবং তাঁর উদ্দেশ্যে আমাদের সকল কর্মকান্ড পরিচালিত করি। ক্ষমতাকে অস্থিরতায় নয় বরং সৃষ্টিকর্তার সান্নিধ্যের ফসল হিসেবে উপভোগ করি।