এসএসসি এবং ও ল্যাভেল পরীক্ষা

বর্তমানে চলমান রয়েছে বাংলাদেশেী ও বাংলা মাধ্যমের শিক্ষার্থীদের এসএসসি পরীক্ষা আর গত শক্রবার থেকে শুরু হয়েছে একযোগে আন্তর্জাতিক ইংরেজী মাধ্যমের ও ল্যাভেল পরীক্ষা। উভয় পরীক্ষায়ই বাংলাদেশী এবং বাংলা ভাষাভাষির শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহন করেছেন। উভয়ের জন্যই আমাদের প্রশান্তির পক্ষ থেকে শুভকামনা রইল।

পরীক্ষা একটি ব্যবস্থা; যার মাধ্যমে এক শ্রেণী থেকে অন্য শ্রেনীতে অধ্যয়নের সুযোগ সৃষ্টি করে দেয়। তবে পরীক্ষা কেবল উপরেই উঠায়না বরং নীচেও নামায়। পরীক্ষার মাধ্যমে শুরু হয় জীবনের যাত্রাপথের শুরুম্ভ এবং এই স্তরের পরেই আরেক ধাপ যা অতিক্রমের পর শুরু হয় গন্তর্বে পৌঁছানোর পালা। এইক্ষেত্রে প্রতিযোগীতার শুরু হয় এই স্তর থেকেই। বিগত দিনের পরীক্ষাগুলো শুধু নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল কিন্তু বর্তমানের পরীক্ষাটা নিজ প্রতিষ্ঠানের বাইরে সার্বজনীন অঙ্গনে সীমাবদ্ধ এবং বৃহত্তর কল্যাণের তরে দায়বদ্ধও বটে।

আমার অভিজ্ঞতা ছিল বাংলাদেশের বাংলা মাধ্যমের এসএসসি পরীক্ষার এবং হল পরিদর্শনের কিন্তু এইবার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ করা হলো আন্তর্জাতিক ইংরেজী মাধ্যমের একযোগে পরিচালিত হওয়া ও ল্যাভেল পরীক্ষার। সবই চমৎকার তবে ও ল্যাভেলের পরীক্ষা কেন্দ্র, পরীক্ষার্থী, হল পরিদর্শক এবং গার্ডিয়ান উভয়ের মধ্যেই যেন এক অদ্ভুত নিয়মানুবর্তীতা আর সততা ও নিষ্ঠার একাগ্র প্রয়াস ব্যবহারের উত্তম ও উর্বর দৃশ্যমান বহি:প্রকাশ। তাই এই পরীক্ষাগুলোকে পর্যবেক্ষণ করা আমাদের বাংলা মধ্যমের শিক্ষার্থী ও শিক্ষক এবং অভিভাবকদের অতিব জরুরী। শিক্ষার ব্যবহার ও গুন আর কির্তন এবং শিক্ষকের আচরন এবং শিক্ষা দেওয়ার পদ্ধতি সবই যেন লক্ষ্যনীয় এবং দৃষ্টান্ত হিসেবে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় ব্যবহারযোপযোগী। তাই শিক্ষার আদান ও প্রদানে এই দুই পরীক্ষা ব্যবস্থান যোগসূত্র স্থাপনে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষকে দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

শিক্ষার্থীদের প্রতি দেয়া করনীয় এবং পালনিয় নির্দেশনার বাইরে শিক্ষার্থীরা কেউই কোন আচরণ এবং কৃতকর্ম প্রদর্শন করেন না। বরং নিয়ম ও নিতি এবং শৃঙ্খলা আর সততা প্রজ্জ্বলনই যেন ছিল এই সৌন্দয্য বর্ধনের কর্মযজ্ঞ। গার্ডিয়ানরাও শতভাগ নির্ভার ছেলে-মেয়ের পরীক্ষা নিয়ে। কারো কোন চিন্তা বা দুশ্চিন্তা পরোক্ষ করা যায়নি। কেউই নিয়মের বাইরে একটি ষড়িষা পরিমান আচরণ প্রত্যক্ষ্য করাননি। এই কি সুন্দর ও অদ্ভুদ মিলনমেলা।

ছাত্র ছাড়া কাউকে হলে প্রবেশের কোন সুযোগ নেই। ছাত্র -ছাত্রীরা তাদের এডমিট বা গেইট পাস এবং ইন্সাকশন বুক, স্বচ্ছ কলমের বক্স, স্বচ্ছ পেনসিল বক্স (যা পলিথিনের), স্বচ্ছ রোলার, পাসপোর্ট নিয়ে পরীক্ষা শুরু হওয়ার ৩০মিনিট পূর্বে হলে প্রবেশ করবে। আর হলে প্রবেশের সময়ও সংক্ষিপ্ত। মাত্র ত্রিশ মিনিট। তাই নিয়মকে শ্রদ্ধা এবং নিয়মানুবর্তীতা অনুশীলনের একটি উত্তম ও উর্বর সুযোগ এই সন্ধিক্ষণে। তাই আমার কাছে খুবই সুন্দর এবং স্বচ্ছ এই নিয়ম ও পদ্ধতি ব্যবহারের ক্ষেত্রকে আমাদের বাংলা শিক্ষা ব্যবস্থায় আনয়নের যোগসূত্র কামনা করছি।

হলে কোন গার্ডিয়ান, শিক্ষক, সাংবাদিক, মন্ত্রী, এমপি অথবা অন্য কেউ প্রবেশাধিকার সম্পূর্ণ নিষেধ। এই ব্যবস্থাটা একটি সভ্য সংস্কৃতির উর্বর দৃষ্টান্ত। এইসকল পরীক্ষার ক্ষেত্রে কোন প্রশাসনিক লোকবল নেই; যেমন পুলিশ এবং আনছার। কি সুন্দর এবং অনন্য এক সৌন্দয্য। আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় কেন এই সুন্দরকে গ্রহণ করা হয়নি। তবে আমাদের পরীক্ষা ব্যবস্থায় যে ময়লা আবর্জনা জড়িয়ে আছে তা দুরীকরণের লক্ষ্যে এই আন্তর্জাতিক ইংরেজী মাধ্যমের ও  এবং এ ল্যাভেল পরীক্ষাগুলোকে দৃষ্টান্ত হিসেবে ব্যবহার করা যায়।

লক্ষ্যনীয় যে, এই পরীক্ষাগুলো কিন্তু বাংলাদেশেই হচ্ছে এবং বাংগালীরাও এই পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছে। তাই বাংলা মাধ্যমের পরীক্ষায় কেন এত হযবরল। সুতরাং ভাবার বিষয় এবং শিক্ষা ও দিক্ষা নেয়ার বিষয় এইখানে যে, আমরা সুদূর চীনে বা আমেরীকায় যাওয়ার প্রয়োজন নেই বরং আমাদের দেশের ও এবং এ ল্যাভেল পরীক্ষাগুলোকে অনুসরণ এবং অনুকরণ করে অগ্রসর হই এবং পরীক্ষা ব্যবস্থায় আমুল পরিবর্তন আনয়ন করি। ইংরেজী মাধ্যম পরীক্ষা, পরীক্ষক এবং ছাত্র-ছাত্রী এবং তাদের পড়ালেখার ধরণ দেখেশুনে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় উন্নয়নের যোগসূত্র স্থাপনে জ্ঞানী ও গুণী এবং উপযুক্ত স্থানে অধিষ্ঠীতদের সুদৃষ্টি কামনা করছি।

সকল পরীক্ষার্থীদের কল্যাণে সৃষ্টিকর্তার অভিপ্রায় পরিপূর্ণ হউক এই কামনাই করি। আল্লাহ আমাদের সকলকে অবধারিত লাগামহীন সুযোগের অফুরন্ত কল্যাণের দিগন্তের সিমাহীন সীমানায় প্রতিষ্ঠীত করুন। এই কামনা করেই শুভকামনা জানাচ্ছি সকলকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.