বগুড়া ডায়াবেটিক হাসপাতালের আহ্বায়কের কক্ষে তালা দিলেন বিএনপির নেতারা

প্রশান্তি ডেক্স ॥ বগুড়া ডায়াবেটিক ও স্বাস্থ্যসেবা হাসপাতালের আহ্বায়ক এবং জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি অ্যাডভোকেট মকবুল হোসেন মুকুলের অফিস কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন বিএনপির নেতারা। একইসঙ্গে নামফলকও অপসারণ করা হয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার (১৫ মে) দুপুরে জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শহীদ উন নবী সালাম ও কে এম খায়রুল বাশার ডায়াবেটিক হাসপাতালে গিয়ে মুকুলের কক্ষে তালা দেন এবং নামফলক খুলে ফেলেন।

হাসপাতাল ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, মকবুল হোসেন মুকুল দীর্ঘদিন বগুড়া ডায়াবেটিক ও স্বাস্থ্যসেবা হাসপাতালের সভাপতি ছিলেন। গত ১৭ আগস্ট আগের কমিটি ভেঙে দিয়ে তাকে আহ্বায়ক করে বিএনপি ও জামায়াতপন্থি নেতাদের সমন্বয়ে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। এরপর জুলাই আন্দোলনে হামলার ঘটনায় মুকুলের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হওয়ায় তিনি আত্মগোপনে চলে যান। গত ১২ মে স্থানীয় পত্রিকায় ডায়াবেটিক হাসপাতালের তিন পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে আত্মগোপনে থাকা আহ্বায়কের কাছে আবেদন পাঠাতে বলা হয়। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বিএনপি নেতারা এ পদক্ষেপ নেন।

বগুড়া ডায়াবেটিক সমিতির প্রশাসনিক কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘সমিতির মাধ্যমে বগুড়া ডায়াবেটিক ও স্বাস্থ্যসেবা হাসপাতালসহ বিভিন্ন জনহিতকর কার্যক্রম পরিচালিত হয়। সর্বসম্মতিতে গত ২০২৪ সালের ১৭ আগস্ট পাঁচ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। অ্যাডভোকেট মকবুল হোসেন মুকুল আহ্বায়ক। চার জন সদস্য হলেন এরশাদুল বারী এরশাদ, আলী এখতিয়ার তালুকদার তাজু, একে এম সামসুদ্দিন ও নওশাদুর রহমান। গত বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শহীদ উন নবী সালাম ও কে এম খায়রুল বাশারের নেতৃত্বে তাদের লোকজন ছয় তলায় সমিতির কার্যালয়ে আসেন। তারা আহ্বায়কের কক্ষে নামফলক অপসারণের পর দরজায় তালা লাগিয়ে দেন। তবে কী কারণে তালা দেওয়া হলো, সে ব্যাপারে তারা স্পষ্ট করে কিছু বলেননি। আর এ ব্যাপারে আমার কিছু করণীয় নেই।’

এ প্রসঙ্গে জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শহীদ উন নবী সালাম বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের বিদায়ের পরও ডায়াবেটিক হাসপাতাল ফ্যাসিস্টদের দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে। আওয়ামী লীগ নেতা মুকুল হত্যা মামলার পলাতক আসামি হয়েও হাসপাতাল নিয়ন্ত্রণ করছেন এবং নতুন নিয়োগ-বাণিজ্যের পরিকল্পনা করছেন। এজন্য শান্তিপূর্ণভাবে তার কক্ষে তালা দেওয়া হয়েছে। কোনও ফ্যাসিস্ট ডায়াবেটিক সমিতিতে যেতে পারবে না।’

সমিতির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য জামায়াতের নেতা সাবেক পৌর কাউন্সিলর এরশাদুল বারী এরশাদ বলেন, ‘সবার সম্মিতিক্রমে বগুড়া ডায়াবেটিক সমিতির আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে। আহ্বায়ক মকবুল হোসেন মুকুল পলাতক রয়েছেন। আমরা কয়েকজন সদস্য সুষ্ঠুভাবে সমিতি পরিচালনা করছি। জেলা বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিম বাদশা লন্ডন থেকে ফেরার পর পূর্ণাঙ্গ কমিটি করার কথা ছিল। কিন্তু আজ হঠাৎ করে কোনও আলোচনা ছাড়াই বিএনপির কয়েকজন নেতা সমিতির আহ্বায়কের কক্ষে তালা দিয়েছেন; যা ঠিক হয়নি। শুধু বিএনপির চেষ্টায় নয়; সবার সর্বাত্মক চেষ্টায় দেশ আওয়ামী লীগ ফ্যাসিস্ট মুক্ত হয়েছে। এটা মনে রাখতে হবে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published.