অস্থিরতায় এগিয়ে যাচ্ছে দেশ

চলামান অস্থিরতায় এগিয়ে যাচ্ছে দেশ ও দেশের মানুষ। কিসে অস্থিরতা নেই তা খুজে বের করতে এখন সময় দেয়া প্রয়োজন। আর কেন নেই তাও খোজে বের করা দরকার। কারণ সকল ক্ষেত্রেই অস্থিরতা বিরাজমান রয়েছে। এই ক্ষেত্রে অতিরিক্ত স্বাধীনতা এবং একচোখা নীতি আর কুট রাজনীতি ও আপোষহীন দ্বীচারী চক্রান্তের ফল আবার এর সাথে যুক্ত হয়েছে ক্ষমতার মোহ। তাই এই বিরাজমান অস্থিরতা কাটিয়ে উঠার কোন সুযোগ নেই। কারণ কথায় আছে “যেই দিন যায় সেই দিন ভালই যায় আর সামনে যেই দিন আসছে সেই দিন আরো কঠিন।

প্রফেসর ইউনুছ সাহেব এসেছেন এবং আকাশচুম্বি আশা আর গগণচুম্বি প্রত্যাশা নিয়ে দায়িত্বভার গ্রহন করেছেন। কিন্তু সেই আশা ও প্রত্যাশায় গড়মিলে এখন দিশেহারা। ঠিক কুল রাখি না শ্যাম রাখি। এই ত্রাহিসম অবস্থার জন্য অভিজ্ঞতা ও অনভিজ্ঞতাই দায়ী। অভিজ্ঞ ও অনভিজ্ঞ এবং পৌড়ে দৌঁড়ানো মানুষজন যা চাকুরী বিধি এবং সৃষ্টিকর্তার দেয়া বিধানে অবসরপ্রাপ্ত। এই অবসরপ্রাপ্তদের দিয়ে এবং অনভিজ্ঞদের দিয়ে যদি হতো তাহলে ইতিহাস বদলে যেতো এবং সৃষ্টিকর্তার আইনেও ছেদ গঠত। তাই শুরুতেই বড় ভুল ছিল এই অনভিজ্ঞতার এবং অবসরের অবসাদগ্রস্তদের নিয়ে অতিরিক্ত স্বাধীনতা ভোগের চর্চা করায়। তাই এই পরিণতি এখন আরো বিপদের দিকেই এগিয়ে যাচ্ছে বলে ধরে নেয়া যায়।

শাসন করা তারই সাজে সোহাগ করে যে, এই কথাটি সত্যি হলেও বাস্তবে প্রয়োগে অপর্যাপ্ত অবস্থায় পরিত্যাক্ত। শাসন এবং সোহাগের রেওয়াজ চালু করা দরকার। অতিরিক্ত পরামর্শ গ্রহণ এবং পরামর্শকদের কথা শুনে বাস্তবতার আলোকে চিন্তা না করে অগ্রসর হওয়াও একটি গুরতর বিপত্তির কারণ। তাই গায়ের জোর এবং ক্ষমতা এই দুই ব্যবহার করে কোন কিছু করা যায় না আর তার প্রমান সকলের সামনে হাজির সেই পতিত সরকারের মাধ্যমে। তাই পতিত সরকারের পুনরাবৃত্তি ঘটানোর প্রক্রিয়ায় লাগাম টানা বা ইতি টানা অতিব জরুরী। গায়ে মানেনা আপনি মোড়ল সাজা বন্ধ করাও জরুরী।

কাদের জন্য উপকার এবং কাদের জন্য সংস্কার তা ঠিক করুন এবং যাদের জন্য এইসকল করছেন তাদেরকে সম্পৃক্ত করুন। নতুবা হিতে বিপরীত হবেই। আর বর্তমানের দৃশ্যমানতা থেকে জ্ঞান নিয়ে অগ্রসর হউন। আমি এবং আমরা যদি আপনার উপকার এবং পরিকল্পনা ও উন্নয়ন না চাই তাহলে কেন আপনি করছেন এবং করবেন? বিগত পতিত সরকারও তাই করেছিল এবং সেই সাথে গর্ভভরে দম্ভ নিয়ে বলেছিল আমি করেছি এবং করে দিয়েছি। কিন্ত ভোক্তভোগীরা তা গ্রহণ করেনি। তাই আপনি এবং আপনারাও তাই পতিত সরকারের ন্যায় এমন কিছু করবেন না যা সেই পরিণতির দিকে অগ্রসর হতে সহায়তা করবে।

পরামর্শ নেয়া ও শুনা ভাল কিন্তু সকল পরামর্শ গ্রহণ করা ভাল না। প্রধান হিসেবে আপনার চিন্তা ও পরিকল্পনাই যথেষ্ঠ তবে ঐ পরামর্শগুলো আপনার চিন্তা ও পরিকল্পনাকে পরিপক্ক করতে পারে। তাই পরামর্শকের পরামর্শ এবং চিন্তা ও পরিকল্পনার সাথে আপনার চিন্তা ও পরিকল্পনা যুক্ত করে আগামির বাংলাদেশ বিনির্মানে এগিয়ে আসুন। অনেক সময় অপচয় হয়েছে কিন্তু সামনে আর সময় নেই। পতিত সরকার যেসকল কাজ করেছে যা জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছে সেইসকল কাজের প্রাথমিক স্তরগুলো নির্ধারণ করে ঐ কাজগুলো জনসম্পৃক্ততার সাথে সমাধান করুন। তাহলেই বর্তমান জটলা এবং অস্থিরতা নিরসন হবে।

রাষ্ট্রের ক্ষমতায় বা দায়িত্বে থাকলে ধৈর্য্য ও সহনশীল হতে হবে এবং সকলের কথা শুনতে হবে আর সেই আলোকে নিজের সিদ্ধান্ত জানাতে হবে এমনকি সকলের কল্যাণেই কাজ করছেন এই নিশ্চয়তা দিয়ে সকলকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে হবে। নতুবা পরিকল্পনা মাফিক আগানো সম্ভব হবে না। বিশৃঙ্খলাই ঘ্রাস করে সব তছনছ করে দিবে।

আমরা সবাই চাই রাষ্ট্রের এবং জনগণের উন্নয়ন কিন্তু সকলের ভাবনা চিন্তা এক নয় কেন? এই জায়গায় কাজ করুন। যদি আমরা সবাই চাই শান্তি, উন্নয়ন, অগ্রগতি এবং নিশ্চয়তা তাহলে কেন এই বিশৃঙ্খলা। কেন একে অন্যকে সহ্য করতে পারিনা এমনকি সময় দিতে চাই না। শুধু চাই নিজের কাছে ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করে রাখতে অধবা ক্ষমতাকে পেতে। এই জায়গাগুলিতে কাজ করুন। তাহলে হয়তো খুজে পাবেন একটি নিশ্চয়তা।

তবে সবশেষে বলতে চাই যদি স্থায়ী সমাধান চাই তাহলেই সৃষ্টিকর্তার অভিপ্রায়ের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছা ও আকাঙ্খাকে প্রাধান্য দিয়ে কর্মকান্ড পরিচালিত করতে হবে। তাহলেই সকল অস্থিরতার অবসান হবে। তবে এইক্ষেত্রে সৃষ্টিকর্তার সান্নিধ্য লাভ না করে এগুলো শয়তান পুরোপুরি তার অভিপ্রায়ে সকলকিছুকে নষ্ট করে হতাশায় নিমজ্জ্বিত করবে। তাই আসুন আমরা সৃষ্টিকর্তার কাছে নিজেদেরকে সমর্পন করি। নিজেদের অসহায়ত্ব কে তুলে ধরি। অক্ষমতা, দুর্বলতা এবং পাপসকল স্বীকার করি। তাঁর ক্ষমা লাভের নিশ্চয়তা নিই। তারপর তাঁর কাছ থেকে প্রাপ্ত প্রদত্ত দায়িত্ব নিয়ে তাঁরই সহায়তাই অগ্রসর হই। তাহলেই সফলতা নিশ্চিত। খোদা তায়ালার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ পরিচর্যায় যেসকল কাজ সম্পন্ন হয় এবং হয়েছে তার সবই শতভাগ সফল হয়েছে। তাই মুছা ও হারুন, দায়ুদ, আইয়ুব, বাদশা সোলাইমান এবং সর্বশেষ হযরত ঈসা মসিহের জীবনাদর্শ পাঠ করুন এবং এর আলোকে সেবা ও রাষ্ট্র পরিচালনার কাঠামো সাজিয়ে অগ্রসর হওন। খলিফা আলী ও ওমর এবং উসমান এর জীবন থেকেও শিক্ষা নিয়ে কাজ করুন। সবচেয়ে বড় এবাদত হলো আল্লাহ তায়ালাকে হাজির নাজির রেখে সকল কার্য্য সম্পাদন করা। আর তাহলে বর্তমানের থেকে উতরিয়ে ভবিষ্যতের গন্তব্য সহজ এবং সাবলিল আর শান্তিময় এবং নিশ্চয়তা পুর্ণতায় পরিপূর্ণ হবে। আসুন আমরা আমাদের সৃষ্টিকর্তার সান্নিধ্যের দিকে অগ্রসর হই এবং সৃষ্টিকর্তার নির্দেশনাই চলমানকে মোকাবিলায় মনোনিবেশ করি।

Leave a Reply

Your email address will not be published.