দিনভর বৃষ্টিতে সড়কে জলাবদ্ধতা, ভোগান্তিতে নগরবাসী

প্রশান্তি ডেক্স॥ বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের কারণে সকাল থেকেই সারা দেশে টানা বৃষ্টি হচ্ছে। দিনব্যাপী বৃষ্টিতে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। সড়কের খানা-খন্দ ও বড় বড় গর্তে বৃষ্টির পানি জমে বেড়েছে দুর্ভোগ। এতে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, কর্মজীবী মানুষসহ নগরবাসীকে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে।

রাজধানীর নিউমার্কেট, সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ী, ধূপখোলা, গেন্ডারিয়াসহ বিভিন্ন সড়ক ঘুরে দেখা গেছে, গত বৃহস্পতিবার (২৯ মে) সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস থাকায় সকাল থেকে বিভিন্ন সড়কে গাড়ির চাপ বেশি দেখা গেছে। এর মধ্যে দিনব্যাপী বৃষ্টির কারণে বিভিন্ন সড়কে সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা।

অনেক জায়গায় বৃষ্টির পানিতে সড়ক ডুবে থাকতে দেখা গেছে। মূল সড়ক ও বিভিন্ন অলিগলিতে পানি জমে থাকায় সড়কে দেখা দিয়েছে তীব্র যানজট। দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ী, টিটিপাড়া, গোপীবাগ, টিকাটুলী, নারিন্দা, স্বামীবাগ, গেন্ডারিয়া ও দয়াগঞ্জসহ পুরান ঢাকার বিভিন্ন সড়কে জলাবদ্ধতায় বেহাল অবস্থা তৈরি হয়েছে। পুরান ঢাকার গেন্ডারিয়া এলাকার বাসিন্দা আহাদ খান বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এই এলাকার ড্রেনেজ ব্যবস্থা কার্যত অচল হয়ে রয়েছে। পানি চলাচলের স্বাভাবিক ব্যবস্থা নেই। এ কারণে বৃষ্টি হলেই অলিগলিতে পানি জমে যায়। মানুষের চলাফেরাতে ভোগান্তি সৃষ্টি হয়। আগে তো ওয়ার্ড কমিশনারকে অভিযোগ জানাতাম। কিন্তু এখন সেই সুযোগও নেই।

গায়েদাবাদ সংলগ্ন বাস স্ট্যান্ডে হৃদয় নামে এক ব্যক্তি বলেন, অফিসের জন্য সকাল ৯টায় বের হয়েছিলাম। কিন্তু টানা বৃষ্টির কারণে রাস্তায় পানি জমে যাওয়ায় যানজটে পড়ি। এক ঘণ্টা পর অফিসের গিয়েছিলাম। এখন আবার সেই জলাবদ্ধতা সেই যানজট, অতিষ্ঠ লাগছে। বাসা থেকে ভালো পোশাক, ফরমাল ড্রেসে বেরিয়েছিলাম। এখন বৃষ্টি আর কাদাপানিতে সব কাপড় নষ্ট হয়ে গেছে।

সড়কে জলাবদ্ধতা হওয়ায় বিপাকে পড়তে দেখা গেছে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী ও কর্মজীবী মানুষকে। ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী হাবিব বলেন, অল্প বৃষ্টিতেই সব সময় নিউমার্কেট এলাকা তলিয়ে যায়। প্রতি বছর বর্ষাকালে এই সমস্যাটা হয়। অথচ সিটি করপোরেশন কার্যকরী কোনও পদক্ষেপ নেয় না। এমনকি ড্রেনেজ ব্যবস্থারও উন্নতি করে না।

এদিকে জলাবদ্ধতা নিরসনে দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) থেকে কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে কিনা তা জানতে চাইলে ডিএসসিসির প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমডোর মো. মাহাবুবুর রহমান তালুকদার বলেন, সড়কের ওপরে এই মুহূর্তে যা আছে তা টানা বৃষ্টির ফলাফল। বৃষ্টি কমে গেলে আধা ঘণ্টার মধ্যে এই সমস্যা নিরসন হয়ে যাবে। তবে স্থায়ী যদি কোনও জায়গায় জলাবদ্ধতা হয় সে ক্ষেত্রে সিটি করপোরেশন কুইক টিম সেই লোকেশনে গিয়ে তা নিরসন করবে।

ডিএসসিসির এই প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা আরও বলেন, আমরা আসন্ন কোরবানি ঈদকে উপলক্ষ করে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিরসনে চারটি বিশেষ টিম তৈরি করেছি। যেটি জলাবদ্ধতা নিরসনেও কাজ করবে। আর নিউমার্কেটের যে জলাবদ্ধতা তা নিচু জায়গার কারণে হয়েছে। সেটা নিয়ে আমাদের বড় প্রকল্প রয়েছে। এ বছর নানা কারণে তা হয়নি। আগামী বছর বর্ষার আগেই আমরা এ নিয়ে পরিকল্পনা করবো।

এদিকে, আবহাওয়া অফিস বলছে, আরও দুদিন থাকতে পারে বৃষ্টিপাত। এছাড়া পার্বত্য অঞ্চলে রয়েছে পাহাড় ধসের আশঙ্কা। আবহাওয়া অধিদফতরের আবহাওয়াবিদ ড. মো. বজলুর রশিদ জানান, বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কা নেই। তবে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে উপকূলীয় অঞ্চলসহ সারা দেশে থেমে থেমে বৃষ্টি হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.