প্রশান্তি ডেক্স ॥ বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া সুস্পষ্ট লঘুচাপটি নিম্নচাপে পরিণত হওয়ায় কক্সবাজারের সেন্টমার্টিন দ্বীপে ভারী বৃষ্টি ও দমকা হাওয়া শুরু হয়। এতে গত বৃহস্পতিবার (২৯ মে) সকাল থেকে স্বাভাবিকের চেয়ে পানির উচ্চতা পাঁচ ফুট বৃদ্ধি হওয়ায় জোয়ারের আঘাতে দ্বীপের চারপাশে ভেঙে গেছে। যার কারণে সেন্টমার্টিনের অন্তত অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি পানিতে তলিয়ে গেছে। এ ছাড়া জোয়ারের আঘাতে ঘাটে নোঙরে থাকা পাঁচটি মাছ ধরার ট্রলার বিধ্বস্ত হয়ে গেছে।

এ বিষয়ে সেন্টমার্টিন ইউপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ফয়েজুল ইসলাম বলেন, ‘বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ সৃষ্টি হওয়ায় স্বাভাবিকের চেয়ে পাঁচ ফুট জোয়ারের পানি বেড়ে যাওয়ায় দ্বীপের গলাচিপা, কোনাপাড়া, দক্ষিণপাড়া পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে অন্তত অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া মাছ ধরার ৫টি ট্রলার জোয়ারের আঘাতে বিধ্বস্ত হয়ে গেছে।’
তিনি বলেন, ‘দ্বীপবাসী আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে। রাত হলে দ্বীপের মানুষের মধ্যে আরও আতঙ্ক বাড়বে। তবে আমরা হোটেল-মোটেলসহ আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রেখেছি।’
এদিকে চার দিন ধরে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে দ্বীপের মানুষের মধ্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সংকট দেখা দিয়েছে। দ্বীপের মানুষের খুব খারাপ সময় যাচ্ছে। তার ওপর সকাল থেকে ঝোড়ো বাতাস শুরু হয়েছে। এতে সাগরের পানির উচ্চতা বেড়েছে।’
সেন্টমার্টিন দ্বীপের বাসিন্দা মোহাম্মদ আলম বলেন, ‘জোয়ারের সঙ্গে সঙ্গে বঙ্গোপসাগরে পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে দ্বীপের সাগরের তীরে থাকা কয়েকটি এলাকায় পানি ঢুকেছে। এতে দ্বীপের চারদিকে ভাঙন ধরেছে। এ ছাড়া এখনও অনেক ঘরবাড়ি পানিবন্দি হয়ে আছে।’
এদিকে, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া সুস্পষ্ট লঘুচাপটি নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার ভোরের দিকে সাগরে নিম্নচাপ সৃষ্টি হয়। আর এর প্রভাবেই এ বৃষ্টি থাকতে পারে সারা দিন। আবহাওয়া অধিদফতর বলছে, দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি আজ থাকতে পারে সারা দিন। আগামীকালও বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। দেশের চার বিভাগেই বর্ষণের সতর্ক বার্তা ইতোমধ্যে দিয়ে রেখেছে আবহাওয়া অধিদফতর। ইতোমধ্যে দেশের চার সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
সাবরাংয়ের ইউপি সদস্য মো. ছিদ্দিক বলেন, ‘ভারী বৃষ্টি এবং জোয়ারের আঘাতে মেরিন ড্রাইভ এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। তবে জোয়ারের পানি নেমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গ্রামে ঢুকে পড়া পানিও নামতে শুরু করেছে।’
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, ‘বঙ্গোপসাগরে পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পাওয়ায় জোয়ারের পানি সেন্টমার্টিন দ্বীপের লোকালয়ে প্রবেশ করেছে। এ ছাড়া ঘাটে নোঙরে থাকা মাছ ধরার ট্রলার বিধ্বস্ত হওয়ার খবর পেয়েছি। উপজেলার প্রত্যেক ইউনিয়নের খবর রাখছি।’