ইন্দোনেশিয়ায় বাংলাদেশিদের জন্য ভিসামুক্ত প্রবেশাধিকার দেওয়ার প্রস্তাব প্রধান উপদেষ্টার

প্রশান্তি ডেক্স ॥ ইন্দোনেশিয়ার উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরমানাথ ক্রিস্টিয়াওয়ান নাসির বাংলাদেশ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বৃহত্তম দেশটির মধ্যে বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক জোরদারের আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ঢাকার সঙ্গে জাকার্তা তার সম্পর্ক গভীর করতে আগ্রহী। এসময় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ইন্দোনেশিয়ার বালির মতো শীর্ষস্থানীয় পর্যটন গন্তব্যগুলোতে বাংলাদেশিদের জন্য ভিসামুক্ত ভ্রমণের প্রস্তাব করেন, যা দুই দেশের নাগরিকদের মধ্যে বৃহত্তর যোগাযোগ জোরদার করবে।

গত সোমবার (২ জুন)  প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তেজগাঁওয়ে তার কার্যালয়ে এক বৈঠকে এসব বিষয়ে আলাপ হয়। তাদের আলোচনায় পারস্পরিক স্বার্থের ক্ষেত্রগুলোতে জোর দেওয়া হয়। বিশেষ করে, দুটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদার করার ওপর জোর দেওয়া হয়।

প্রধান উপদেষ্টা দায়িত্ব গ্রহণের আগে বেশ কয়েকবার ইন্দোনেশিয়া সফর করেছিলেন। তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ধর্মীয়, ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক পটভূমি থাকা সত্ত্বেও ঢাকা ও জাকার্তা তাদের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারেনি।

সাংস্কৃতিক ও শিক্ষা সফরসহ আরও পারস্পরিক বিনিময়ের গুরুত্বের ওপর গুরুত্বারোপ করে ড. ইউনূস বলেন, আমাদের অবশ্যই সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ বন্ধু হতে হবে। ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে আরও শক্তিশালী সম্পর্ক গড়ে তুলতে আমরা অনেক দূর যেতে প্রস্তুত।

ভাইস মিনিস্টার নাসির বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য ইন্দোনেশিয়ার বৃত্তির বিধানের কথা তুলে ধরেন এবং বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের কূটনৈতিক প্রতিষ্ঠানে প্রশিক্ষণ গ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ জানানোর পরিকল্পনা করেন।

নাসির বলেন, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক ব্লক আসিয়ানের সেক্টরাল ডায়ালগ পার্টনার হতে বাংলাদেশের প্রচেষ্টায় ইন্দোনেশিয়া সমর্থন করবে।

ড. ইউনূস এই সমর্থনকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, এটি আসিয়ানে বাংলাদেশের চূড়ান্ত পূর্ণ সদস্যপদের পথ প্রশস্ত করবে। এই প্রচেষ্টায় ইন্দোনেশিয়ার অব্যাহত সমর্থনের অনুরোধ জানান তিনি।

ইন্দোনেশিয়ার ভাইস মিনিস্টার বাংলাদেশকে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় হিসেবে বর্ণনা করেন।

ঢাকায় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেওয়া নাসির বলেন, ইন্দোনেশিয়া বাংলাদেশের চতুর্থ বৃহত্তম আমদানি গন্তব্য। ইন্দোনেশিয়ার ব্যবসায়ীরা দেশের অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং এর ক্রমবর্ধমান উৎপাদন ও জ্বালানি খাতে বিনিয়োগে আগ্রহী।

প্রধান উপদেষ্টা রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে জাকার্তার সমর্থন কামনা করে আশা প্রকাশ করে বলেন, ইন্দোনেশিয়া এই সেপ্টেম্বরে নিউইয়র্কে অনুষ্ঠেয় জাতিসংঘের সম্মেলনে সক্রিয় ভূমিকা নেবে। রোহিঙ্গা সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধান চাই।

নাসির আশ্বাস দেন, ইন্দোনেশিয়া বাংলাদেশের উদ্বেগের সঙ্গে একমত পোষণ করে এবং এই মানবিক সমস্যা সমাধানে সহায়তা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

Leave a Reply

Your email address will not be published.