প্রশান্তি ডেক্স ॥ দেশের তরুণদের স্বপ্ন ও দৃষ্টিভঙ্গির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ভোট দেওয়ার প্রতি তরুণদের যে আগ্রহ, তা নতুন বাংলাদেশ গড়তে কাজে লাগানো হবে।

তিনি গত বুধবার লন্ডনে এক অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে বলেন, ‘আমরা তরুণদের স্বপ্ন ও দৃষ্টিভঙ্গিকে সম্মান করি… আমরা পুরনো বাংলাদেশকে বিদায় জানাতে চাই।’
চ্যাথাম হাউজের রয়্যাল ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স আয়োজিত অনুষ্ঠানের শিরোনাম ছিল ‘অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে আলাপচারিতা।’
তিনি বলেন, গত ১৭ বছরে যারা নতুন ভোটার হয়েছে, তারা কেউ তাদের প্রথম ভোট দেওয়ার সুযোগ পায়নি। ‘নতুন বাংলাদেশ গড়তে তরুণদের এই উচ্ছ্বাসকে আমরা ব্যবহার করতে চাই।’
প্রধান উপদেষ্টা জানান, পরবর্তী নির্বাচন শুধু একটি নিয়মিত ভোট গ্রহণ বা নতুন সরকার নির্বাচনের জন্য নয়, বরং এটি হবে একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ার ভোট এবং ‘এটাই আমাদের প্রতিশ্রুতি।’
বাংলাদেশের অন্তবর্তীকালীন সরকার বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কারের জন্য বহু কমিশন গঠন করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তার সরকার শেষ পর্যন্ত জাতীয় ঐকমত্য কমিশনও গঠন করেছে।
অধ্যাপক ইউনূস জানান, চূড়ান্ত লক্ষ্য হলো এসব সংস্কার কমিশনের সুপারিশগুলোতে সব রাজনৈতিক দল সম্মত হবে এবং একটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করবে।
তিনি বলেন ‘আমরা একে ‘জুলাই সনদ’ বলি। আমরা জুলাই মাসের জন্য অপেক্ষা করছি… এই সনদ জাতির সামনে উপস্থাপন করা হবে এবং এর ভিত্তিতেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।’
অন্তবর্তী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণ প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, তাদের প্রধানত তিনটি দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল সংস্কার, জুলাই অভ্যুত্থানের হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের বিচার এবং নির্বাচন আয়োজন।
আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর অন্তবর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার সময়কার অর্থনৈতিক সংকট নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, সেটি ছিল অত্যন্ত কঠিন সময়, যখন বিশ্ব নানা সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিল এবং বাংলাদেশও আলাদা ধরনের সংকটে ছিল।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘আমরা ছিলাম অর্থনীতির শূন্য পর্যায়ে, বরং ঋণাত্মক পর্যায়ে। আমাদের বিশাল দেনা পরিশোধ করতে হয়েছে।’
স্বৈরাচার শেখ হাসিনার সময়কার অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে প্রস্তুত করা শ্বেতপত্রের তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, বিতাড়িত সরকারের সময়ে বাংলাদেশ থেকে প্রায় ২৩৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিদেশে পাচার করা হয়েছে। তখন বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল শূন্য এবং ব্যাংকিং খাত ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল।
দেশের অর্থনীতিকে পতনের হাত থেকে রক্ষা করতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের অবদানের কথা স্মরণ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে এবং ‘আজ আমাদের পেমেন্ট অব ব্যালেন্স পুরোপুরি পাল্টে গেছে।’
তার সরকারের প্রতি বৈশ্বিক সমর্থন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সকল দেশ বাংলাদেশের অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রতি নৈতিক সমর্থন দিয়েছে। এজন্য তিনি সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
সূত্র: বাসস