একটি পা নেই, দুটি কিডনি বিকল কসবার যুবক ইয়াসিনের বেঁচে থাকার আকুতি

ভজন শংকর আচার্য্য, কসবা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি ॥ মোঃ ইয়াসিন, বয়স মাত্র ২৫; এই বয়সেই তার জীবনের গল্প যেন থেমে যাওয়ার উপক্রম। খেলার মাঠে ফুটবল খেলতে গিয়ে দুর্ঘটনায় এক পা ভেঙ্গে যাওয়ার পর, চিকিৎসারত অবস্থায় ঔষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় বিকল হয়ে যায় দুটি কিডনি। হঠাৎ করেই যেন সমস্ত পৃথিবী তার জন্য হয়ে ওঠে অন্ধকার। চিকিৎসকরা জানান, বাঁচতে হলে কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট করতেই হবে। খরচ প্রায় ২০ লক্ষ টাকা।

তার পরিবারের অবস্থা অত্যন্ত অসচ্ছল। পিতার সিদ্ধান্ত নিজেই ছেলেকে কিডনি দেবেন। কিন্তু অস্ত্রোপচারের প্রয়োজনীয় টাকা, হাসপাতালের খরচ, ঔষধ, যাতায়াত সব মিলিয়ে বিপুল পরিমাণ ব্যয়ভার তারা বহন করতে অপারগ। এমন সময়ে যেন খোদা স্বয়ং সহানুভূতির হাত বাড়িয়ে দিলেন একটি সংগঠনের মাধ্যমে।

অগ্রভাগীয় সাহিত্য সংগঠন এই খবর জানতে পেরে সিদ্ধান্ত নেয়, তারা ইয়াসিনের পাশে থাকবে। আর সে সিদ্ধান্ত বাস্তবে রূপ নেয় ২২৮তম মানবিক সহায়তা কার্যক্রমের মাধ্যমে।

গত বুধবার (২জুলাই) সকালে দিকে বৃষ্টি শুরু হয় সেই বৃষ্টির মাঝে সভাপতি মো. আশফাতুল হোসেন ভূঁইয়া এলমান স্ব শরীরে উপস্থিত হয়ে আকছিনা গ্রামে পৌঁছান, সঙ্গে আরও অনেকে।

সভাপতি ইয়াসিনের পরিবারের হাতে তুলে দেন ১০ হাজার টাকা নগদ সহায়তা। পাশে দাঁড়ান সহানুভূতির অগণিত কণ্ঠস্বর অগ্রভাগীয় সাহিত্য সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মোঃ সজিব রানা । এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কসবা মহিলা ডিগ্রি কলেজের শিক্ষক মো. তসলিম মিয়া।

প্রধান বক্তা ছিলেন মো. মেহেদী হাসান রুবেল, যিনি গভীর আবেগে বলেন, আমরা প্রতিদিন যা কিছু অপচয় করি, যদি তার একদিনের অংশও বাঁচিয়ে রাখি, তাহলে কতজন ইয়াসিনকে নতুন জীবন দেওয়া যায় ভাবুন। একটা মানুষের জীবন কিন্তু কয়েকজনের সদিচ্ছায় বদলে যেতে পারে।

বিশেষ অতিথিদের মধ্যে ছিলেন ক্রীড়াবিদ মো. কেফায়েত উল্লাহ, ছাত্রনেতা মো. সাদ্দাম হোসেন ও মো. আশিক মাহমুদ, সাংবাদিক মো. বিল্লাল সরকার (লন্ডন বিডি টিভি নিউজ, ইউকে-বিডি)।

অনুষ্ঠানের আবহে প্রতিটি কথার ভেতরে ছিল একটাই আবেদন “মানুষ মানুষের জন্য। আমরা যদি আজ ইয়াসিনের পাশে না দাঁড়াই, তবে সমাজের ভবিষ্যৎ বিবেক কোথায় দাঁড়াবে?”

এই যুবকের জন্য এখন সবচেয়ে জরুরি বিষয় সমাজের সহানুভূতি। দেশবাসী ও প্রবাসীদের কাছে তার পরিবারের অনুরোধ যার যা সামর্থ্য, দয়া করে এগিয়ে আসুন।

বেঁচে থাকা শুধু একটি শরীরের ব্যাপার নয়, এটি একটি সমাজের বিবেকের বহিঃপ্রকাশ। ইয়াসিন যেন আমাদের সেই বিবেক জাগিয়ে দেয়। অগ্রভাগীয় সাহিত্য সংগঠন আজ শুধু আর্থিক সহায়তা দেয়নি তারা সমাজে একটি বার্তা ছড়িয়ে দিয়েছে

মানবতার চেয়ে বড় কোনো সংগঠন নেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published.