ঢাকা সিলেট মহাসড়কে তীব্র যানজট

প্রশান্তি ডেক্স ॥ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ গোলচত্বর থেকে সরাইলের শাহবাজপুর পর্যন্ত ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে প্রায় ২০ কিলোমিটার এলাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। খানাখন্দে ভরা মহাসড়কের এ অংশে যানবাহনের গতি ধীর হয়ে পড়েছে, কোথাও একেবারে থেমেও যাচ্ছে।

গত বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) মধ্যরাত থেকে শুরু হওয়া এ যানজটের কারণে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রী ও চালকেরা। তাদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরেই মহাসড়কের আশুগঞ্জ ও বিশ্বরোড মোড় এলাকায় রাস্তার অবস্থা নাজুক। কোথাও কোথাও গভীর গর্তের কারণে যানবাহনের চাকা আটকে যাচ্ছে, দুর্ঘটনার শঙ্কাও তৈরি হচ্ছে।

মামুন পরিবহনের বাসচালক মো. লিয়াকত বলেন, ‘রাস্তার ভাঙ্গার কারণেই এই যানজট। আশুগঞ্জ গোলচত্বর ও বিশ্বরোড মোড়ে এত ভাঙ্গা যে, গাড়ি উল্টে যেতে পারে। আমি রাত ২টায় শাহবাজপুর এসেছিলাম, ৮ ঘণ্টায় মাত্র ৫ কিলোমিটার এসেছি। আমরা চাই, রাস্তার কাজ দ্রুত শুরু হোক, না হলে যাত্রীদের ভোগান্তি আরও বাড়বে।’

ট্রাকচালক ভুষণ দেব বলেন, ‘রাত ১০টায় আশুগঞ্জ এলাকায় যানজটে পড়েছি। ধীরে ধীরে জ্যাম ছাড়ছে। প্রায়ই এই রকম জ্যামে পড়ি। রাস্তা দ্রুত সংস্কার করতে হবে।’

যাত্রী মো. শামীম বলেন, ‘গতকাল রাতে রওনা দিয়েছিলাম। আজ ঢাকায় উপ-সহকারী কৃষি পরীক্ষা ছিল। কিন্তু যানজটে আটকে থেকে পরীক্ষা দিতে পারিনি। দুই ঘণ্টা ধরে রাস্তায় হেঁটে চলেছি। রাস্তার কাজ হবে শুনে যাচ্ছি, কিন্তু কাজ কিছুই হচ্ছে না।’

আরেক যাত্রী মিরা বেগম বলেন, ‘পুরুষেরা গাড়ি থেকে নেমে হেঁটে যাচ্ছে, কিন্তু আমরা মহিলা যাত্রীরা গাড়ির ভেতরেই বসে আছি। রাত থেকে জ্যামে আটকে আছি, খুব কষ্ট হচ্ছে। কেউ দেখার নেই কি?’

ব্রাহ্মণবাড়িয়া খাটিহাতা হাইওয়ে থানার ওসি মামুন রহমান বলেন, ‘আমি আশুগঞ্জ গোলচত্বর প্রান্তে আছি। দুই দিকেই ধীরগতিতে যান চলাচল করছে। রাস্তার নাজুক অবস্থার পাশাপাশি ছোট ছোট তিন চাকার যানবাহনের অনিয়ন্ত্রিত চলাচলের কারণেও ভোগান্তি বাড়ছে।’

নির্মাণাধীন ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের প্যাকেজ-১ এর আওতায় আশুগঞ্জ থেকে বিশ্বরোড পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার অংশের কাজ বিলম্বে চলছে। প্রকল্প ব্যবস্থাপক শামীম আহমেদ বলেন, ‘প্যাকেজ-১-এ কিছু পরিবর্তন এসেছে এবং ভারত সরকারের অর্থ ছাড়ে বিলম্ব হওয়ায় কাজ বিলম্বিত হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘বর্তমানে বাংলাদেশ সরকারের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল প্রকল্প এলাকা পরিদর্শনের প্রস্তুতিতে রয়েছে। এরপরই কাজ পুরোদমে শুরু হবে। আমরা নিয়মিত সংস্কার চেষ্টা করছি, তবে বৃষ্টির কারণে তা টিকছে না। আশা করছি, শিগগিরই সমস্যার সমাধান হবে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published.