প্রশান্তি ডেক্স ॥স্বাধীনতা-পরবর্তী বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পালাবদলের মুহূর্ত ২০২৪ সালের জুলাই। গত বছরের জুলাই-আগস্ট মাসের দিনগুলো ফিরে দেখতে এই প্রয়াস।

গত ১৬ জুলাই। ২০২৪ সালের এই দিনে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে। এদিনই রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ (২২) নিহত হন। পুলিশের সামনে দুহাত প্রসারিত করে দাঁড়িয়ে থাকা এই শিক্ষার্থী গুলি বিদ্ধ হয়ে লুটিয়ে পড়ার ভিডিও মুহূর্তেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এতে করে আন্দোলনের উত্তাপ সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। এছাড়াও দিনব্যাপী সংঘর্ষে সারা দেশে ছয় জন নিহতের খবর পাওয়া যায়। কয়েক দিন ধরে চলা এই আন্দোলন সহিংস রূপ নেওয়ায় এদিন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম গুরুত্বের সঙ্গে এ বিষয়ে খবর প্রকাশ করে। একপর্যায়ে ওই রাতেই সরকার সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে, তবে তাতে আন্দোলনের গতি থামেনি। এদিন হাইকোর্টের আপিল বিভাগে ‘লিভ টু আপিল’ দায়ের করা হয়।
এদিন সকাল থেকেই রাজধানীর উত্তরার জসীমউদ্দিন মোড়, কুড়িল বিশ্বরোড, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা, নতুন বাজার, মেরুল বাড্ডা, বনানী, গাবতলী, মিরপুর রোড, সায়েন্সল্যাব, ধানমন্ডি ২৭ নম্বর, মোহাম্মদপুর, শনিরআখড়া ও সাভারের বিরুলিয়াসহ বিভিন্ন পয়েন্টে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা সড়ক অবরোধ করেন। গত মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) সকাল ১১টার পরে তারা মিছিল নিয়ে এসব পয়েন্টে অবরোধ শুরু করেন। এছাড়া সারা দেশেই শিক্ষার্থীরা এদিন ব্যাপক বিক্ষোভ করেন। ঢাকা, চট্টগ্রাম ও রংপুরে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের তুমুল সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঢাকা, চট্টগ্রাম, বগুড়া, রাজশাহী ও রংপুরসহ কয়েকটি জেলায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। পরে সারা দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ এবং কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের হল বন্ধের ঘোষণাও আসে।
পরদিন গায়েবানা জানাজা ও কফিন মিছিলের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেন শিক্ষার্থীরা। বিএনপিসহ তাদের সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে সম্পৃক্ত রাজনৈতিক দলগুলোও গায়েবানা জানাজা কর্মসূচি ঘোষণা দেয়।