বেদনার রঙ্গে রাঙ্গানো বাংলাদেশ

বেদনার রঙ্গে এখন রাঙ্গিয়ে যাচ্ছে দেশের সকলকিছু। রাজনীতির  নিতিহীন অর্থভীলাষী এবং উচ্ছাভীলাষী ভাব ধারায় যেন দেশের মানুষের জীবন রক্তের খুলিখেলায় রাঙ্গাচ্ছে। প্রকৃতি এবং প্রতিকুল পরিবেশ আর কূট নীতি নির্ভর সকল কর্মকান্ডই যেন এখন মরন ফাদ। সাধারণ মানুষ কোথায় যাবে কি করবে তা আর ভাবতে পারছে না বরং যেখানে সাধারণের আস্থা সেখানেই বিপত্তি। তাই সাধারণ এখন দিশেহারা।

দিশেহারা মানুষের পদচারণায় এখন দেশের বাতাস ভারী হচ্ছে এবং অসহিষ্ণু ও নানান অত্যাচারের ষ্টিম রোলারের ঘাত-প্রতিঘাতে মানুষের কান্নার আওয়াজ আরশে মহল্লায় গিয়ে পৌঁছে যাচ্ছে। তাই বর্তমানের রঙ্গ বড়ই বিচিত্র এবং ভয়ঙ্কর। একটির পর একটি ঘটনা ঘটেই যাচ্ছে। কোন কুল কিনারা করা যাচ্ছে না বরং একটি থেকে আরেকটিতে মনযোগ বা দৃষ্টি নিবন্ধিত হচ্চে। কিন্তু কাজের কাজ কোনই হচ্ছে না। সর্বশেষ ঘটে যাওয়া মৃত্যুর  মিছিল এবং ঘটনার পরম্পরাই আরো ঘটনা জাতিকে ভিভিষিকাময় করে তুলেছে। দায়িত্ববানদের দায়িত্বহীন আচরণ এবং লোকচুরি এখন মানুষকে অতিষ্ট করে কিয়ামতের পূর্বালামতে নিয়ে ঠেকাচ্ছে।

মাইলষ্টোন স্কুল এবং কলেজের ঘটে যাওয়া ইতিহাসের কালো দিনটি রক্তের রঙ্গে রাঙ্গিয়ে দিল এই সোনার বাংলাকে। কিভাবে বিশ্লেষণ করব বা কিভাবে বলব তা ভাষা ও চিন্তা এবং মানষিকতায় নেই। তবে বেদনা ও হতাশা এবং আবেগ ও বিভেক দিয়ে লক্ষ্য করা ছাড়া আর কিই করার আছে বা ছিল তাই ভাবতে ভাবতে বিষন্নতায় আচ্ছন্ন হচ্ছি। সম্ভাবনাময় সোনামনিরা আজ রক্তের আভায় আঙ্গুল তুলছে আমাদের দিকে। তারা তাদের জীবন এবং প্রচেষ্টা ও লড়াই আর আশা এবং আকাঙ্খা প্রাণত্যাগের পূর্বপর্যন্ত আমাদেরকে দেখিয়েছে। যা দেখে অশ্রুসিক্ত ও ভারাক্রান্ত হয়ে জাতি নতুনের সন্ধানে খোজাখোজি শুরু করছে। কোথায় সেই নতুন যারা দিশা ও আশা আর আকাঙ্খা পুরণের স্বপ্ন নিয়ে এগিয়ে আসবে। আর জাতিকে এই দুর্দশা থেকে মুক্ত করবে। রক্তে দাগ মুছতে না মুছতেই যে আর কোন রক্তের আচর না পড়ে সেই ব্যবস্থায় যাওয়ার জন্য জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাবে।

বর্তমানের ঐক্যবদ্ধতা দিয়ে চলবে না। ঐক্যবদ্ধ জাতি বলতে বাংলাদেশের সকল মানুষ ভিন্ন ভিন্ন দল ও ভিন্ন ভিন্ন মত এই দুই শব্দযুগলের উদ্ধে উঠে ঐক্যবদ্ধতা দিতে হবে আগামারী শান্তি ও স্থিতিশীলতা এবং জাতীয় ঐক্য ও নিশ্চয়তা এবং নিরাপত্তার লক্ষ্যে। বিগত দিনের ঐকবদ্ধতাগুলো আজ পরীক্ষিত যা জাতীকে সুনিশ্চীত নিশ্চয়তা দিতে পারেনি। সবচেয়ে বড় উদারহণ যে মুক্তিযুদ্ধ; যা জাতিকে একটি দেশ দিয়েছিল এবং দিয়েছিল স্বাধীনতা। কিন্তু দেশ ও স্বাধীনতা আজ ভুলুন্ঠিত। কারণ সেই সসময়ের ঐক্যবদ্ধতায়ও ছিল ফাক-ফোকর। যার কারণে জাতি বিভক্তিতে নিমজ্জ্বিত হয়েছে বার বার। আমার দেশের রাজনৈতিক দলগুলো বহুবার ঐক্যবদ্ধ হয়েছে বা হতে চেষ্টা করেছি কিন্তু পারেনি। গুটি কতেক ও মুষ্টিমেয় ঐক্যবদ্ধতায় কোন শান্তির ও স্থিতিশীলতার স্থায়ী ফল বয়ে আনেনি এবং আনবেওনা। বিএনপি ও আওয়ামীলীগ এর ঐক্যবদ্ধতায় ফাটল রয়েছে যা বার বার প্রমানিত হয়েছে এবং বর্তমানের ঐক্যবদ্ধতাও সেই একই পথের পথিক যা সদ্যই প্রমানিত হলো।

বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণ যা বলতে বুঝাতে চাই সকল দল ও মতের এবং পথের মধ্যে ঐক্যবদ্ধতা সৃষ্টিতে কাজ করুন। কাউকে বাদ দিয়ে নয় এবং কাউকে বেশী আপন ভেবেও নয়। সকলকে সমান সুযোগ ও দৃষ্টি দিয়ে ঐক্যবদ্ধতা সৃষ্টিতে দৃশ্যমানতা পরিলক্ষিত করান। তাহলে আর নৈরাজ্য এবং রক্তের রঙ্গে এই সোনার বাংলা রাঙ্গাবে না। বেদনার রং আর লাল হবে না। বিভেদ এবং কূট নীতি এবং বহিশত্রুর কূটচাল এই স্বদেশকে কোন আঘাত বা সমস্যায় ফেলতে পারবে না। তাই সময় ফুরিয়ে যাওয়ার আগেই এই কাজটুকু করুন। ভিন্নমতের এবং বর্তমান অরাজনৈতক বা সার্বজনীন গ্রহণযোগ্য সরকার বা অর্ন্তবর্তী সরকার এই সুযোগকে বাইপাস করে যাবেন না এমনকি আরেকটি রক্তাক্ত ইতিহাস সৃষ্টি করবেন না। আপনার ও আপনাদের মাধ্যমেই জাতি ফিরে পেতে চাই শান্তি, স্থিতিশীলতা, নিশ্চয়তা ও নিরাপত্তা এবং চলমান সকল সমস্যার স্থায়ী সমাধান।

সময় দ্রুত ফুরিয়ে যাচ্ছে তাই প্রমান করুন যে সার্বজনীন ঐক্যবদ্ধতার দিকে এগুচ্ছেন নতুবা সমুহ বিপদ আরো বেগবান হয়ে ধেয়ে আসবে। রক্তের হোলিখেলায়ও থামবেনা ঐ মহা বিপদ বা প্রলয়ঙ্করী সর্বনাশ। তাই নিজেদের ও আগামীর কথা চিন্তা করে সর্বাত্মক কাজে নেমে পড়ুন এবং সেই অনুযায়ী জনসন্তুষ্ঠী অর্জনে মনযোগী হউন। জনগণ আপনাদেরকে অনেক সুযোগ ও সময় দিয়েছে কিন্তু কার্যকরী কিছু দেখতে পায়নি। তাই কার্যকরী দেখার স্বার্থে কাজ করুন। প্রয়োজনে জনগণ আরো সময় ও সুযোগ দিবে। কিন্তু সবার আগে জনসন্তুষ্ঠি অর্জন করতে হবে। নতুবা জনরোষের কোন বিকল্প নেই। এই জনরোষ জাতি বার বার প্রত্যক্ষ করেছে। তবে আর প্রত্যক্ষ করতে চায়না। বরং চায় এই জনরোষ মুক্ত বাংলাদেশ। আর সেই লক্ষ্যেই সকলকে একযোগে কাজ করতে হবে।

দোষারূপ এর সংস্কৃতি পরিহার করে ভাল গুনগুলোর চর্চায় মনোনিবেশ করতে হবে। মামলা ও হামলা এবং চোখ রাঙ্গানোতে কোন সমস্যার সমাধান হয়নি এবং হবেও না। বিচার দ্বারা কোন সমস্যা আদো সমাধান হয়েছে তা পরিলক্ষিত হয়নি এবং ভবিষ্যতেও হবেনা। তবে বিচার, হামলা, মামলার সংস্কৃতি পৃথিবীকে ধ্বংসের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। যা এখন চলমান। তাই নতুন কিছু করুন। সকলকে সমান দৃষ্টিতে দেখুন এবং সকলের মঙ্গলের জন্য কাজ করুন। ক্ষতিগ্রস্ত এবং ক্ষতিকারী উভয়কেই বিপদ থেকে রক্ষা করুন। তাহলেই নতুন কিছুর সম্ভাবনায় নতুন পৃথিবী, নতুন সমাজ এবং নতুন আঙ্গিন নতুন বাংলাদেশ সুপ্রতিষ্ঠিত হবে।

সবশেষে সৃষ্টিকর্তার নিকট মিনতি করি এবং আকুতি জানাই আমার এই প্রীয় মার্তৃভুমির জন্য। তিনি যেন তাঁর মনোনিত লোক দ্বারা এই দেশের সেবা চলমান রাখেন। তাঁর আশির্বাদ এবং পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণ এবং সুরক্ষা সর্বদা বিরাজমান রাখেন। আমরা এগিয়ে যাচ্ছি তাঁর আহবানে এবং তাকে সঙ্গে নিয়ে। এই বোধশক্তি ও জাগ্রত বিভেক আর ভগ্ন হৃদয় নিয়ে আগামীর কল্যাণ সাধনে মনোনিবেশ করি। বেদনার রঙ্গে রাঙ্গানো বাংলাদেশকে শান্তি, নিশ্চয়তা, নিরাপত্তা, স্থিতিশীলতা এবং খোদায়ী অভয়ারণ্যে পরিণত পরিণত করি। এই কামনা ও প্রার্থনা অব্যাহত রাখি। মালিক আপনি কবুল করুন আমীন।।

Leave a Reply

Your email address will not be published.