প্রশান্তি ডেক্স ॥ পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) প্রধান মো. ছিবগাত উল্লাহ বলেছেন, সিআইডি এখন একটি আধুনিক, প্রযুক্তিনির্ভর ও তথ্যভিত্তিক তদন্ত সংস্থা। আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ তদন্ত নিশ্চিত করা আমাদের অঙ্গীকার। তিনি বলেন, মানবাধিকার রক্ষা ও বিচারপ্রাপ্তি নিশ্চিত করতে সঠিক, বিজ্ঞানভিত্তিক ও প্রমাণনির্ভর তদন্ত পদ্ধতি প্রয়োগ অত্যাবশ্যক।

সিআইডিতে জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞ দলের সাথে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের তদন্তে মিনেসোটা প্রটোকল অনুসরণ বিষয়ক দুই দিনের আন্তর্জাতিক কর্মশালার শেষ দিনে গত বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান, জাতিসংঘ রেসিডেন্ট কো-অর্ডিনেটর (টঘজঈ) অফিস এবং বাংলাদেশ পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) যৌথ উদ্যোগে ৩০ ও ৩১ জুলাই “Minnesota Protocol on the Investigation of Potentially Unlawful Deaths” বিষয়ক দুই দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
কর্মশালার মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাতিসংঘের Extrajudicial, Summary or Arbitrary Executions বিষয়ক বিশেষ র্যবপোর্টিয়র মরিস টিডবাল-বিনজ। তিনি বলেন, “মিনেসোটা প্রটোকল হলো একটি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত নীতিমালা, যা আইনবহির্ভূত মৃত্যুর নিরপেক্ষ তদন্ত নিশ্চিত করতে সহায়তা করে এবং বিচারব্যবস্থার প্রতি আস্থা প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।” তিনি তার উপস্থাপনায় লিবিয়া ও ফকল্যান্ড দ্বীপপুঞ্জে আইনবহির্ভূত হত্যাকান্ডের তদন্তের উদাহরণ দিয়ে মিনেসোটা প্রটোকলের অন্তর্নিহিত তাৎপর্য অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে তুলে ধরেন। তার বক্তব্যের আগে শম্পা ইয়াসমীন, বিশেষ পুলিশ সুপার (ফরেনসিক), সিআইডির ডিএনএ ও অন্যান্য ফরেনসিক সুবিধা সম্পর্কে আলোকপাত করেন।
দুই দিনব্যাপী এই আন্তর্জাতিক কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেন বাংলাদেশ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা, বিচার বিভাগের সদস্যরা, চিকিৎসা ও ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ, মানবাধিকার সংস্থার প্রতিনিধি, প্রযুক্তি ও অনুসন্ধান খাতের সংশ্লিষ্ট পেশাজীবীসহ নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ অংশীজনরা। বহুমাত্রিক পটভূমি থেকে আগত এই অংশগ্রহণকারীরা কর্মশালায় তাদের অভিজ্ঞতা, মতামত ও বাস্তব ক্ষেত্রের চ্যালেঞ্জ তুলে ধরেন, যা আলোচনাকে করে তোলে আরও প্রাণবন্ত ও ফলপ্রসূ।
কর্মশালায় আলোচনার মূল বিষয়গুলোর মধ্যে ছিল আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত নীতিমালা অনুযায়ী মৃতদেহ শনাক্তকরণ, বিজ্ঞানের ওপর নির্ভরশীল ও নিরপেক্ষ ফরেনসিক রিপোর্ট প্রস্তুতের প্রক্রিয়া, মানবাধিকার সংরক্ষণে পুলিশি তদন্তের নৈতিক ও পেশাগত দিকনির্দেশনা, এবং বাস্তব অভিজ্ঞতার আলোকে আলোচিত কেস স্টাডির উপস্থাপন।