প্রশান্তি ডেক্স ॥দৈনিক জনকণ্ঠের সম্পাদককে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে পাল্টা একটি সম্পাদকীয় বোর্ড গঠন করেছেন কয়েকজন কর্মী। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর বিভিন্ন সময়ে নিয়োগ পাওয়া কর্মীরা অন্যায়ভাবে জনকণ্ঠ পত্রিকাটি দখল করার অভিযোগ ওঠে গত ৩ আগস্ট। তবে পাল্টা অভিযোগে বলা হয়েছে, এসব কর্মীকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে কোনও নোটিশ ছাড়াই। তাই সম্পাদকীয় একটি বোর্ড গঠন করা হয়েছে সর্বসম্মতিক্রমে।

জনকণ্ঠের প্রকাশক ও সম্পাদক দাবি করেছেন, গ্লোব জনকণ্ঠ শিল্প পরিবারের চিফ অপারেটিং অফিসার অবসরপ্রাপ্ত মেজর আফিজুর রহমান, পত্রিকাটির প্ল্যানিং অ্যাডভাইজার জয়নাল আবেদীন শিশির ও পত্রিকাটির অনলাইন অ্যাডভাইজার সাবরিনা আহমেদ ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে পত্রিকাটি দখল করেছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জনকণ্ঠের সম্পাদক ও প্রকাশক শামীমা এ খান বলেন, ‘ষড়যন্ত্র ও মব সৃষ্টির মাধ্যমে ভাঙচুর ও লুটপাট চালিয়ে দখল করা হয়েছে জনকণ্ঠ পত্রিকাসহ জনকণ্ঠ ভবন।’
ষড়যন্ত্রের বিষয়ে জনকণ্ঠের সম্পাদক ও প্রকাশক শামীমা এ খান আরও বলেন, ‘গ্লোব জনকণ্ঠ শিল্প পরিবারের চিফ অপারেটিং অফিসার অবসরপ্রাপ্ত মেজর আফিজুর রহমান ষড়যন্ত্র করে কয়েকজনকে পত্রিকায় নিয়োগ দেন। তিনি হলেন জনকণ্ঠ ভবন দখলের ‘মাস্টারমাইন্ড’। তাকে প্রথমে ভালো মনে করেছিলাম। কিন্তু তিনি গোপনে ষড়যন্ত্র করেছেন। আমার ছোট ছেলেকে বাদ দিয়েই সে এসব করছিলেন। আমি পরে বিষয়টি জানতে পারি। সে আমার পুরনো কর্মীদেরও আগে চাকরিচ্যুত করেছে। আমার পুরনো কর্মীদের বেতন না দিয়ে নতুন কর্মীদের বেতন দেয়। যাদের নিয়ে এসেছে জনকণ্ঠে, তারা এনসিপি, বিএনপি ও জামায়াতের নাম ভাঙ্গিয়েছেন। এনসিপি, বিএনপি ও জামায়ত তো এসব কাজ করেনি। তাদের নাম ভাঙ্গানো হচ্ছে। তারা আমাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে জনকণ্ঠ ভবন দখল করেছে। আমি অফিসে ঢুকতে পারছি না। বেতন দিতে পারছি না। শুধু জনকণ্ঠ তো না, গ্লোবসহ অন্য প্রতিষ্ঠান আছে। আমি তাদেরও বেতন দিতে পারছি না।’
এদিকে গ্লোব জনকণ্ঠ শিল্প পরিবারের চিফ অপারেটিং অফিসার অবসরপ্রাপ্ত মেজর আফিজুর রহমান বলেন, ‘ম্যাডাম ছেলের পক্ষ নিতে মিথ্যা বলছেন। সাংবাদিকদের বেতন দেওয়া হচ্ছে না। দীর্ঘদিন থেকে সাংবাদিকদের বেতন বকেয়া রয়েছে। চাকরিচ্যুত করা হয়েছে সাংবাদিকদের।’
অন্যদিকে পত্রিকাটি দখল করা হয়েছে এই অভিযোগ সত্য নয় বলে জানিয়েছেন সদ্য চাকরিচ্যুত জনকণ্ঠের কর্মীরা। তারা জানিয়েছেন, শনিবার তাদের কয়েকজনকে মালিকপক্ষ চাকরিচ্যুত করার পর পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে সম্পাদককে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে মালিক পক্ষের বিরুদ্ধে হাতিরঝিল থানায় একটি মামলা করা হয়।
জনকণ্ঠের সদ্য চাকরিচ্যুত ডেপুটি চিফ রিপোর্টার ইসরাফিল ফরাজী বলেন, ‘দখলের কিছু হয়নি। তারা জুলাইয়ের বিপক্ষে গিয়ে একটি কালো টেমপ্লেট ধারণ করলো। পরদিন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপে ম্যাসেজ দিয়ে বললো, কাল থেকে আপনাদের আর দরকার নেই। আমাদের ছয়-সাত জনসহ ১৫ থেকে ২০ জনকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। পরে আমরা সাংবাদিক ইউনিয়ন, প্রেস উইং, তথ্য মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছি। পরে তিনদিন পর্যন্ত অপেক্ষা করে মামলা করেছি। সাংবাদিকদের সঙ্গে আমরা মতবিনিময় করেছি বিষয়টি নিয়ে। মালিকপক্ষ কেউ ফোন ধরছেন না। আমরা শুধু পত্রিকাটি তদারকি করবো। পত্রিকা বের হচ্ছে কিনা, নিউজ ঠিকমতো হচ্ছে কিনা। সবাই একমত হয়ে পাঁচ-ছয় জনের একটি কমিটি (সম্পাদকীয় বোর্ড) করি। সব আয়-ব্যয় তো তাদের হাতে। আমরা একটি রেজুলেশন করেছি। আমাদের দাবি-দাওয়া চেয়েছি। জনকণ্ঠ পত্রিকার ফেসবুক পেইজে কালো রঙের নিউজ কার্ড প্রকাশের পর সম্পাদক শামীমা এ খানসহ ১৫ জনের নামসহ ৩৫ থেকে ৪০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছি। ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের পক্ষে অবস্থান নিয়ে জনকণ্ঠ পত্রিকার ফেসবুক পেইজে কালো রঙ করা হয়।
জনকণ্ঠ দখল করা হয়েছে কিনা এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে নতুন রাজনৈতিক দল এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও জনকণ্ঠের চাকরিচ্যুত জয়নাল আবেদীন শিশির বলেন, ‘১৪ কোটি ২৬ লাখ টাকা সাংবাদিকদের বেতন দেওয়া হয়নি। দখল করে আমরা কী করবো? আমরা আমাদের পাওনা চাই। বেআইনিভাবে আমাদের চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। আমাকে বৈধভাবে পাঁচ মাস আগে চাকরি দেওয়া হয়েছে। শ্রম আইন অনুযায়ী আমাকে চাকরিচ্যুত করতে পারেন। কিন্তু হোয়াটসঅ্যাপে লিখেছেন কাল থেকে আপনাকে টার্মিনেট করা হলো। এতে আমার চাকরিচ্যুতি হয়নি, আমি চাকরি করছি। এখন দেখানো হচ্ছে এনসিপি-বিএনপি-জামায়াত মিলে জনকণ্ঠ দখল করেছে। সম্পাদক নিজে বাঁচার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে দোষ দিচ্ছেন।
কয়েকজন কর্মী জানান, গত ১ আগস্ট সকাল ৬টায় জনকণ্ঠ পত্রিকার ফেসবুক পেজে কালো আওয়ামী লীগের শোক দিবসের কর্মসূচির সঙ্গে মিল রেখে নিউজ কার্ডে লাল রঙ থেকে কালো রঙ করা হয়। যা অপ্রত্যাশিত।
আন্দোলনরত জনকণ্ঠের বিশেষ প্রতিনিধি মীর মোহাম্মদ জসিম সম্পাদকীয় বোর্ডেও সদস্য। জনকণ্ঠের চলমান পরিস্থিতিতেও লাল ও কালো করা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘লাল ব্যানার ১ আগস্ট কালো করা হয়। পরিস্থিতি বিবেচনায় আমরা মালিকের ছোট ছেলেকে ব্যানার লাল করতে বলি। কিন্তু তারা তা করেননি। পরে প্রকাশক ব্যানার লাল করেন কিন্তু ২ আগস্ট সকাল থেকে ১০ জনকে চাকরিচ্যুত করা হয় এবং ২০ জনকে চাকরিচ্যুতির তালিকায় রাখা হয়। আমাদের দখল করারও কিছু নেই। ধারাবাহিকভাবে চাকরি এবং বেতন অব্যাহত রাখতে হবে এটাই আমাদের দাবি। পত্রিকা বন্ধ হোক বা পত্রিকার মালিকানা দখলের প্রশ্ন নেই। প্রিন্টার্স লাইনে ড্রকাশকের নাম আগের মতোই যাচ্ছে। সুতরাং দখলের অভিযোগ ভিত্তিহীন।
হাতিরঝিল থানায় ইশরাফিল ফরাজীর করা মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, ১ আগস্ট সকাল ৬টায় জনকণ্ঠ পত্রিকার ফেসবুক পেজে আওয়ামী লীগের শোক দিবসের কর্মসূচির সঙ্গে মিল রেখে ‘নিউজ কার্ডে’ লাল রঙ থেকে কালো রঙ করা হয়।
এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও জনকণ্ঠের চাকরিচ্যুত জয়নাল আবেদীন শিশির বলেন, মালিকপক্ষকে জানালে তারা আওয়ামী লীগের পক্ষে সরাসরি অবস্থান নিয়ে লাল থেকে কালো রঙ ধারণ করার পক্ষে শক্ত অবস্থান নেন। জুলাইয়ের শহীদদের প্রতি অবমাননা করেছেন।
মামলায় বলা হয়, ওই দিন রাত সাড়ে ৮টার দিকে সাংবাদিক আজাদ সোলায়মান অফিসে এলে তাকে সমাধানের জন্য বলা হলে তার সঙ্গে থাকা অন্যরা পত্রিকার প্ল্যানিং অ্যাডভাইজার জাতীয় নাগরিক পাটিৃর যুগ্ম সদস্য সচিব জয়নাল আবেদীন শিশির, সাংবাদিক মীর জসীম, অনলাইন উপদেষ্টা সাবরিনা বিনতে আহমেদসহ অন্যদের ওপর চড়াও হয় এবং হুমকি দেয়।
আসামির তালিকায় আছেন জনকণ্ঠের প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত অতিকুল্লাহ খান মাসুদের স্ত্রী সম্পাদক শামীমা এ খান, তার ছেলে গ্লোব জনকণ্ঠ শিল্প পরিবারের ভাইস চেয়ারম্যান জিসাল এ খান, জ্যেষ্ঠ নির্বাহী পরিচালক জাকির হোসেন, সহকারী হিসাবরক্ষক মোস্তাক আহমেদ, সহকারী হিসাবরক্ষক মোশাররফ হোসেন, মানবসম্পদ বিভাগের ফারহানা খান, পত্রিকাটির জেনারেল ম্যানেজার মফিজুর রহমান, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক আজাদ সোলায়মান, আওয়ামী লীগের ‘অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট’ মারুফ হোসাইন, ছাত্রলীগ কর্মী ইয়াছার আরাফাত, মো. আশিক, মো. ওয়াসিম আকরাম, অমিত দে, যুবলীগের মো. বিশাল খান ও সরদার সানিয়াত হোসেন।
মালিকপক্ষের অভিযোগ, আওয়ামী লীগের পতনের পর আফিজুর রহমান বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপির সঙ্গে জড়িত কয়েকজনকে পত্রিকায় সাংবাদিক হিসেবে নিয়োগ দেন। একজন বিএনপি নেতার স্ত্রীকেও তিনি সেখানে গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়ে আসেন।
এদিকে সেনাবাহিনীতে চাকরি করার সময় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে হস্তক্ষেপ করার অভিযোগও উঠেছে মেজর (অব.) আফিজের বিরুদ্ধে। জানা গেছে, তিনি বঙ্গবন্ধুর ওপর পিএইচডি ডিগ্রিতে পড়াও শুরু করেছিলেন। কিন্তু শেষ করতে পেরেছেন কিনা এ বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন দাবি করে মেজর (অব.) আফিজ বলেন, ‘ম্যাডাম ও তার ছেলে এখন মিথ্যা বলছেন। আমি সব সময় সাংবাদিকদের বেতন পরিশোধের কথা বলেছি। সাংবাদিকদের বঞ্চিত করা হয়েছে। আমি ই-মেইলে আমার পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছি।
জনকণ্ঠের ঘটনা নিয়ে বিশিষ্টজনেরা যা বলছেন
সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, এই ঘটনা হলো কতগুলো তথ্য-প্রমাণের প্রশ্ন। যে তথ্যগুলো আমাদের কাছে নেই। দখল যদি হয়ে থাকে তাহলে তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়, আবার কাউকে যদি অন্যায়ভাবে ছাঁটাই করা হয়ে থাকে সেটাও গ্রহণযোগ্য নয়। আমি মনে করি, আইনি পদ্ধতিগতভাবে সুরাহা হতে পারে। আমি মনে করি আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে হতে হবে। আমি আশা করবো কোনোভাবেই যেন অন্যায় না হয়। কারও অধিকার যেন নষ্ট না হয়, আবার কারও সম্পদও যেন নষ্ট না হয়। গণমাধ্যম যাতে দখল না হয়। তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে এটি সুরাহা হওয়া দরকার। আশা করি সংম্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সেই চেষ্টা করবেন।
এছাড়াও সিনিয়র সাংবাদিক মাসুদ কামাল বলেন, ‘জনকণ্ঠের যে পরিস্থিতি তা মিডিয়া জগতের জন্য উদ্বেগজনক। উদ্বেগজনক এ কারণে যে জনকণ্ঠ একটি সম্পূর্ণ ব্যক্তিমালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান, এখানে যদি কোনও অঘটন ঘটে তাহলে মালিককেই তার দায় নিতে হবে। কিন্তু মালিককে যদি সেখানে ঢুকতে না দেন তাহলে মালিক যে কাজগুলো করে সেগুলো কীভাবে করবেন? সে কাজগুলো আপনি করতে পারবেন না। সেখানে অনেক লোকের বকেয়া বেতন আছে, যাদের বেতন বকেয়া তারা আপনার কাছে যাবে নাকি মালিকের কাছে যাবে? মালিকের কাছে গেলে মালিক বলবেন- আমি কীভাবে বেতন দেবো, আমি তো সেখানে ঢুকতেই পারি না। ব্যবসা না করলে টাকা কীভাবে দেবো?
“দ্বিতীয়ত, আপনি যদি কারো দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হন তাহলে আপনি পুলিশের কাছে যাবেন, আদালতে যাবেন, নাকি আপনি তার বাড়ি দখল করবেন? তা তো করতে পরেন না। পরিষ্কার কথা, যারা এটি করেছেন তারা বেআইনি কাজ করেছেন। একটি ব্যক্তিমালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের মালিককে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা যায় না। জনকণ্ঠ নিউজ পেপার হলেও এটা পাবলিক প্রোপার্টি না, এটি প্রাইভেট প্রোপার্টি। যারা করেছেন তাদের গায়ের জোর আছে, তাদের সঙ্গে প্রশাসন আছে, সরকার আছে, তারা গায়ের জোরে এ কাজটি করেছেন এবং তারা এটি অন্যায় করেছেন। এ ক্ষেত্রে সরকারের একটি ভূমিকা আছে। আমি একটি বিষয় বিস্ময়ের সঙ্গে লক্ষ করলাম, থানা তাদের মামলা নিলো কিন্তু মালিকের মামলা নিলো না। ”
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিয়নের সভাপতি আবু সালেহ আকন বলেন, ‘আমরা কোনও গণমাধ্যমে অস্থিরতা চাই না। কোনও মালিক যদি কারও বেতন না দিয়ে থাকেন সেই বেতন পরিশোধ করতে হবে। অবৈধভাবে কারও চাকরি খাওয়া যাবে না। একইসঙ্গে মালিককে মালিকের জায়গায় থাকতে দিতে হবে। আমারও পত্রিকার সাংবাদিক-কর্মচারী, মালিকের অধীনে ও নিয়ন্ত্রণেই আমাদের ন্যায্য অধিকার দিতে হবে।
মালিককে অবাঞ্ছিত করা হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা যারা করেছেন তাদের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। প্রয়োজনে কোনও মধ্যস্থতায় তা করতে হবে। দীর্ঘদিন ধরে যাদের বেতন বকেয়া তাদের ক্ষোভ আছে, সেটি প্রশমিত করতে হবে। এখন (প্রকাশক) উনি বলছেন, তাকে অবাঞ্ছিত করেছেন সে জন্য বেতন দিতে পারছেন না। তাহলে উনি তো আগেও বেতন দেননি, এখন না হয় অবাঞ্ছিত। আমার বক্তব্য হচ্ছে সাংবাদিকরা প্রতিষ্ঠানের মালিক না। মালিকের অধীনে সে কাজ করবেন, মালিকের দায়বদ্ধতা হচ্ছে- নিয়মিত বেতন-ভাতা অন্যান্য সুযোগ দিতে হবে। অন্য কোনও চাওয়া-পাওয়া নেই।
বৃহস্পতিবার সমঝোতা বৈঠক
এদিকে, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (একাংশ) সভাপতি শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা এই বিষয়টা নিয়ে দুই পক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। গত বৃহস্পতিবার আমরা, মালিক এবং চাকরিচ্যুত সাংবাদিক তিনপক্ষ নিয়ে বৈঠক করবো। সবাই বসে একটা সমাধান করে দেবো। তিনি আরও জানান, মালিকপক্ষ যেভাবে ২০ জনকে টার্মিনেট করেছে, চার জনকে অলরেডি টার্মিনেশন লেটার দিয়ে দিয়েছে—এভাবে তো উনারা এটা পারেন না। হুট করে তো চাকরিচ্যুত করতে পারেন না। আমরা এ জন্য তাদের (মালিকপক্ষ) সঙ্গে কথা বলেছি। তারা রাজি হয়েছেন, তারা আমাদের বলেছেন এটা (চাকরিচ্যুতি) ঠিক করে দেবেন।
পাঁচ দফা দাবি
রবিবার সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে নিজেদের পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরেন ইশরাফিল ফরাজি।
১) জুলাই বিপ্লবে শহীদদের অবমাননা করে পত্রিকাটি ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে কালো টেমপ্লেট ধারণ করার জন্য জড়িত মালিক পক্ষকে শাস্তির আওতায় আনতে হবে।
২) লাল রঙ ধারণ করে পত্রিকাটি প্রকাশ করার কারণে জুলাই বিপ্লবের পক্ষের চাকরিচ্যুত সকল সাংবাদিককে চাকরিতে সসম্মানে পুনর্বহাল করতে হবে।
৩) আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সাংবাদিক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের প্রায় ছয় কোটি টাকা বকেয়া বেতন পরিশোধ করতে হবে।
৪) এই প্রতিষ্ঠান থেকে অন্যায়ভাবে চাকরিচ্যুত তিন শতাধিক ব্যক্তির পাওনা টাকা অবিলম্বে পরিশোধ করতে হবে।