বাঙ্গালী জাতি আর কতদিন শান্তির সন্ধানে নিজেদের জীবন বাজী রাখবে? গতানুগতির আন্দোলন, সংগ্রাম ও ত্যাগ তীতিক্ষা উপেক্ষা করে এই জাতি বার বার সংঘবদ্ধ হয়েছে এবং বিজয় ছিনিয়ে এনেছে। কিন্তু সেই বিজয়ের ধারাবাহিকতা অক্ষুন্ন রেখে জাতিকে শান্তি ও স্থিতিশীলতা এবং নিশ্চয়তা ও নিরাপত্তা কেউ দিতে পারেনি। বার বার ভুলুন্ঠিত হয়েছে জাতির আকাঙ্খা ও অভিপ্রায়। জাতির ভাগ্যাকাশে আর কতদিন এই দুরদশা তা কি কেউ বলতে পারেন? হ্যা আমাদের সমাজ সংস্কৃতি এবং কৃষ্টি কালচারে এই দূরদশার ছাপ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। আগামীর প্রজন্মকে এই দুরদশা থেকে মুক্তি দিতে কেউ কি এগিয়ে আসবে ত্রাতা হয়ে?
জাতির সামনে আরো ঘন অন্ধকার আন্ধাজ করছে স্বচ্ছ ও বিবেকভান মানুষজন। সামনে গভীর সংকটের মুখোমুখি হচ্ছে এই জাতি। সংকট ঘনীভুত হওয়ার আগেই সংকট উত্তরণের উপায় খুজে বের করা দরকার। যাদের হাতে এই দায়িত্ব তারা সবাই এই মনোভাব এবং বিচক্ষণ চিন্তা থেকে বের হয়ে বরং নিজের ও নিজেদের নিয়ে ব্যতিব্যস্ত। আমাদের দেশের মহামারি আকারে দুর্যোগের এই ক্রান্তিলগ্নে ত্রাতা হিসেবে কেউ কি এগিয়ে আসবেন? তবে কোন মানুষ এই ত্রাতা হতে পারবেন না কারন ত্রাতা মনোনয়ন হয় সৃষ্টিকর্তা থেকে। বারবার জাতির সামনে এই সুযোগ এলেও এই সুযোগ কেউ কাজে লাগায়নি বরং এই সুযোগকে নিজেদের করে নিতে গিয়ে বরং আরো ভয়ঙ্কর বিপদ ডেকেই এনেছে বৈকি। আজও তার ব্যতিক্রম কিছু দেখছি না।
সময়ের ও যুগের সঙ্গে পাল্লা দিতে গিয়ে যা প্রয়োজন তা যেন আমরা ভুলে গেছি বা যাচ্ছি। আমাদের এই ভুলে যাওয়াকে বড় সুযোগ হিসেবে নিচ্ছে শত্রু নামক শয়তান এবং শয়তানরূপী মানুষগুলো। যা যুগ যুগ ধরে ছিল ও আছে এবং থাকবে। তবে কিয়ামতের সময়ও এই সমস্ত কিছু বিরাজমান থাকবে। কিয়ামতের পর সবই ধ্বংস হবে এবং প্রকৃত মানুষগুলো ফিরে পাবে স্বস্তি এবং নিশ্চিত নিশ্চয়তা। তবে কি এই ভয়াভহতম যন্ত্রণায় দিনগুজার করতে সৃষ্টিকর্তা আমাদেরকে উৎসাহিত করেন? না তিনি আমাদেরকে এখানে ও ওখানে উভয় স্থানেই নিশ্চিত নিশ্চয়তাই রাখতে সকল ব্যবস্থা সুনিশ্চিত করেছেন। আর সেই ব্যবস্থার দিকেই এখন আমাদের দাবিত হতে হবে।
আমরা কি জানি সেই পথ বা ব্যবস্থা। যদি জানি তাহলে আমাদের সেই ব্যবস্থার দিকে মনোনিবেশ করতে হবে। আর যদি না জানি তাহলে সেই ব্যবস্থা সম্পর্কে জানতে হবে এবং সেই অনুযায়ী সেই পথের দিকে অগ্রসর হতে হবে। তবে এই সকল বিষয়ে জানতে গেলে দরকার সর্বপ্রথমে সৃষ্টিকর্তার অভিপ্রায় জানা ও বুঝা। সৃষ্টিকর্তার সৃষ্টির পরিকল্পনা জানা এবং কেন আমাদের সৃষ্টি করেছেন তা বুঝা। আর সৃষ্টিকর্তার সৃষ্টির আত্মতৃপ্তির প্রতিক্রিয়া জানা। যারা যারা এই সকল বিষয়গুলো জেনেছেন তারাই আজ পৃথিবীতে শান্তি ও স্থিতিশীলতা আর নিশ্ছয়তা এবং নিরাপত্তায় রয়েছেন। যদিও তাদের উপর শয়তানের শত আক্রমণ এবং শতকোটি ফাঁদ বিরাজমান তারপরও তারাই জয়ী। দিনশেষে এবং সময় শেষে তারাই নিশ্চিত শান্তিতে এগিয়ে যাচ্ছে। কেউ তাদেরকে থামাতে পারছে না বরং তারাই শয়তানকে শয়তানি থেকে থামিয়ে দিয়ে এবং রক্ষা করছে অন্যের জীবন, মান এবং সমাজ ও সংস্কৃতি।
সৃষ্টিকর্তা এভাবেই মানুষকে ব্যবহার করে তাঁর সকল কর্মকান্ড পরিচালনা করছেন এবং শায়তানকে প্রতিহত করছে। তবে যতদিন পৃথিবী বহমান থাকবে ততদিন সৃষ্টিকর্তা এভাবেই কাজ করে যাবেন। তবে প্রয়োজন সৃষ্টিকর্তার আহবানে সাড়া দেয়া। আর যারা সারা দিয়েছেন এবং সৃষ্টিকর্তার কাছে নিজেদেরকে সমর্পন করেছেন তাদের মাধ্যমেই এই জাতির কল্যাণ সাধিত হবে এবং জাতিকে মূসার ন্যায় উদ্ধার করবেন। তবে তা বোঝার উপায় কি? কে সেই ত্রাণকর্তা বা উদ্ধারকারী? হ্যা বোজার উপায় হলো তিনি সৃষ্টিকর্তার নিজের এবং সৃষ্টিকর্তা তাঁরই মাধ্যমে কথা বলেন ও কাজ করেন। তিনি নিজের প্রয়োজনে কোনকিছু করেন না বরং সকলের প্রয়োজনে কাজ করেন। তিনি বিভেদ সৃষ্টি করেন না বরং বিভেদ মিমাংসা করেন যাতে দুজনেই জয়ী হয় এবং দুজনেরই সম্মান রক্ষা পায়। তিনি ঐক্যে ফাটল ধরান না বরং সকলকে ঐক্যবদ্ধ করেন। এই মানুষটিকে খোজেন এবং এই মানুষটির আহবানে সকলেই ঐক্যবদ্ধ হউন। তাহলেই আজকের অরাজক পরিস্থিতি থেকে মুক্তি।
সৃষ্টিকর্তা আপনাকে ও আমাকে সুরাক্ষা দেয়ার জন্য তাঁর পাকরূহকে আমাদের মাঝে দিয়েছেন। এখন শুধু বোঝার এবং উপলব্ধি করার প্রয়োজন। আর তার জন্য দরকার আত্মার শুদ্ধি। আত্মার শুদ্ধিতায় এবং আত্মার উপলদ্ধি ও দৃশ্যমান বাস্তবতার শিক্ষার মাধ্যমে নিজেকে সংশোধন ও সংযোজন আর বিয়োজনের মাধ্যমে নিজের কল্যাণ এবং পরিবার, সমাজ জাতি ও গোত্র এমনকি সৃষ্টির কল্যাণ সাধন করা সম্ভব। আর সেই সম্ভবে আপনি ও আমি এবং আমরা সকলেই অংশিদ্বার হতে পারি। আমরা প্রত্যোকেই এই যুগের এক একজন মূসা, ঈসা হিসেবে নিজেদেরকে সুপ্রতিষ্ঠিত করতে পারি। জাতির ভাগ্যাকাশে আমাদের জাগ্রত হওয়া দরকার। আর সৃষ্টিকর্তা আমাদেরকে এই বর্তাটুকু দিয়ে কাছে টানছে এবং দিকনির্দেশনা দিচ্ছে কিন্তু আমরা তা আমলে নিচ্ছি না বরং দুরে ঠেলে পালিয়ে যাচ্ছি। তাই এখনই সময় ঘুরে দাড়ানোর এবং সৃষ্টিকর্তার সহচর্যকারী হিসেবে নিজেদেরকে সুপ্রতিষ্ঠিত করে সামনে এগিয়ে যাওয়ার। সকলের কল্যাণের তরে সকলের প্রয়োাজনে এবং সকলের মঙ্গলময় শান্তির অভয়ারণে একমাত্র সৃষ্টিকর্তাই ভরসা। আর তার কালামই আমাদের ত্রাতা। এই উপাখ্যানেই মুক্তি এবং ভক্তি। আমাদের সকলের কল্যাণ হউক।