ক্ষমতা, নির্বাচন ও আক্রমন

ক্ষমতা ও নির্বাচ আর আক্রমণ যেন এখন এক ফ্যাশানে পরিণত হয়েছে। এই ফ্যাশানে বাহারী রূপ, রস ও গন্ধ পাওয়া যায়। তবে আমাদের দেশসহ বিশ্বের সকল দেশেই এইসকল বিদ্যমান রয়েছে। ক্ষমতার জন্য নির্বাচন ও আক্রমন। আর এই ক্ষমতাকেন্দ্রীক চলমান রয়েছে অনিষ্টের খতিয়ান ও দৃশ্যমানতা যা আক্রমের মাধ্যমে সুসম্পন্ন হয়। আমাদের দেশে বিগত দিনগুলোতে এই পালাক্রমের পদযাত্রায় পিষ্ট হয়ে জীবন দিয়েছে লক্ষ্য কোটি জনতা, ধ্বংস হয়েছে হাজারো কোটি সম্পদ ও বিত্ত বৈভব আর বাংলার উদয়মান উন্নয়ন অগ্রযাত্রার সুঠাম কাঠামো এবং অবকাঠামো। আজ বলতেও লজ্জ্বা হয় এই অতিত এবং বর্তমান; যা সকলেরই জানা।

চলমান ক্ষমতা ও নির্বাচন এবং আক্রমণ যে রূপ ধারণ করছে তা বাংলার আকাশে নতুন আরেক বিপদ সর্বনাশের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। দেশ ও দেশবাসী এই বিপদের সমূহ স্বীকারে পরিণত হবে। তবে এর থেকে উত্তরণের সুন্দর ও গঠনমূলক পথ ছিল যা দিন দিন পাশ কাটিয়ে বিপদের দিকেই অগ্রসর হচ্ছে। প্রফেসর ইউনূছ সাহেবও কিন্তু এই বিপদের সহযাত্রী। তাই তাকেই বেছে নিতে হবে আগামীর গন্তব্য। যা শান্তি অথবা অশান্তির মধ্যেদিয়ে আরেক শান্তিময় অশান্তির উদয় হবে। তবে চিরতরে অশান্তিকে বিতাড়িত করতে এখনও অনেক কাজ বাকি। আর বাকী কাজগুলো এখন প্রফেসর ইউনূছের একার পক্ষে সম্ভব। তবে তাকে ঝুকি নিতে হবে এবং কঠোর ও কঠিন হতে হবে। কোনক্রমেই ঐক্যমত্য প্রকাশের মাধ্যমে আর শান্তির ছায়াতলে উপস্থিত বা একত্রিত হওয়া সম্ভব না। সেই সম্ভাবনাটুকু নষ্ট করে অনেকদূর অগ্রসর হয়েছেন অভিভাবকদ্বয়। সময়কে হেলায় ফেলে এসেছেন তাই সময় এখন প্রতিশোধ পরায়ন হয়ে উঠেছে।

দীর্ঘ ১৭ বছরের প্রচেষ্টার পর একটি অরাজনৈতিক ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে দানা বেধে উঠা বিস্ফোরণে বিগত পরাজিত সরকারের ধীক্কারজনক বিদায় ঘটে। যা ইতিহাসে এইদেশে এটাই প্রথম। তবে আশে-পাশের দেশে এমনকি মধ্য এশিয়ায় আরব স্প্রিং নামে খ্যাত জোয়ারে অনেক কিছুই ঘটেছে। তবে সর্বশেষ দৃশ্যমান হয়েছে নতুন রূপে বাংলাদেশে। এরই ধারাবাহিকতায় ইন্ডিয়া এবং অশে-পাশের অন্যান্য দেশেও এই গণ জাগরণের হাওয়া বইছে। তাই যে কোন সময় অগ্নিস্ফুলিঙ্গ বিস্ফোরিত হয়ে পরিবর্তন ও পরিবর্ধন এবং পরিমার্জন সাধিত হবে। সেই অপেক্ষায় থেকে নিজেদেরকে সমৃদ্ধ করুন এবং আগামীর ভাবনায় ইতিবাচক কল্যাণে মনোনিবেশ করুন।

আরেকটি ঐক্যমত্য সাধিত হওয়ার জন্য অপেক্ষার প্রখর গুনতে শুরু করুন এবং সেই ঐক্যমত্য দ্বারা ক্ষমতা, নির্বাচন এবং আক্রমনকে নিয়ন্ত্রণ করুন। আমাদের এই কাঙ্খিত অর্জনকে বার বার বিসর্জনে পরিণত করা হয়েছে। তাই আরেকটি অর্জনের অপেক্ষায় থেকে এমনকি বিসর্জনের হাত থেকে রক্ষাকল্পে পরিকল্পনা প্রণয়নও করুন। এই আবেগী জনতা ফুসলে উঠার আগেই আবেগ নিয়ন্ত্রণ করুন। আবেগের উত্তেজনায় প্রস্তুত হয় জাতির নিয়তি। আর নিয়তির প্রয়োজনে পরিবর্তন হয় কাঠামো। আর কাঠামোগত পরিবর্তনে প্রয়োজনের যোগান সমৃদ্ধ হয়। তবে আমাদের কপালে এই সমৃদ্ধির হাওয়া লাগবে কি না তা এখনও সুনিশ্চিত নয়। তাই সকলের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখুন।

তরুন প্রজন্ম এবং নতুনরাও জাতির আকাঙ্খা বিসর্জনের দিকে ধাবিত করেছে। পুরাতনরা পরিক্ষিত এবং বিসর্জনের চুড়ান্ত ফল দেখিয়েছে। আর নতুনরা সেই দেখানো ফলকে পাশ কাটিয়ে আরো একধান এগিয়েছে। তাই জাতি এখন দিশেহারা হয়ে ছুটছে নতুনের সন্ধানে। তবে নতুনকে খুজে না পেলে পুনরায় পুরাতনকে নিয়েই অগ্রসর হবে। আর এটা হবে আত্মগাতী। এই আত্মগাতী সিদ্ধান্ত বা প্রয়োজনকে বিসর্জন দেয়ার মানুষিকতা এবং চিন্তা চেতনা ধারণ ও বহন করার ক্ষমতা আমাদের সকলের নেই। তাই সমস্যা এই জায়গায়ই।

তবে নির্বাচন, ক্ষমতা, আক্রমন এই তিনের প্রতি মানুষ কেন দুর্বল? তা কেবল মানুষই জানেন। তবে এই দুর্বলতাকে সবলতায় পরিপূর্ণ করার আগেই মানুষ নিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। কোন কোন সময় প্রকৃতিগত ভাবে আবার কোন কোন সময় পৃথিবীতে অবস্থানের সময়ের অভাবে। অথবা পাপের পুর্ণতা হিসেবে মৃত্যুর কবলে পতিত হওয়ার কারণে। এই সকল বিষয়গুলো আমাদের ভাবনায় নেই এমনকি নিরবে একাকিত্বে চিন্তার অধারে সৃষ্টিকর্তার আহবানের প্রতি সাড়া দিয়ে আধ্যাত্মিকতায় মগ্ন হওয়া জরুরী। তাই সবাইকে বলতে চাই আসুণ আমরা সৃষ্টিকর্তার সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন করি। তাঁর সঙ্গে নিজেদেরকে একত্রিতকরণ করি এবং মানুষ ও সৃষ্টিকর্তার ঐক্যবদ্ধ কর্মকান্ড সুচারুরূপে সুসম্পন্ন করি।

আমাদের রাজনৈতিক মতাদর্শ হল দেশ ও জনগণের উন্নয়ন এবং কল্যাণ সাধন। তাই সকলের বা সকল দলের এই একই ইচ্ছা। কিন্তু একই ইচ্ছায় কাজ করতে গেলে কেন হবে মতের অমিল এবং কেনইবা একে অন্যকে ঘায়েলে মননিবেশ করতে হবে? জানেন কি? জানলে জানাবেন। তবে আমার একটি বক্তব্য হলো এই মতাদর্শ পালনের ইচ্ছা ও আকাঙ্খা কি আমাদের সকলের আছে বা ছিল? অতিত এবং বর্তমান বিশ্লেষণে মনে হয় ছিল না বরং ব্যক্তি আকাঙ্খায় পরিপূর্ণ ছিল মাত্র। তবে লোক দেখানো কিছু আচরণ এবং কার্যক্রম ছিল যা দেখানোর মাধ্যমে নিজেদের আখের গুছিয়েছে মাত্র। সৃষ্টির কল্যাণে, দেশের কল্যাণে, জনগণের কল্যাণে, মানবতার কল্যাণে, ঐশ্বরিক কল্যাণ সাধনে কোনটিই ছিল না বরং সবই ছিল লোক দেখানো এবাদতের মত। যার কারণে আমরা সৃষ্টিকর্তার অভীপ্রায় না বুঝে অগ্রসর হওয়ায় সৃষ্টিকর্তার কাছ থেকে কোন উপহার পাইনি। যা যা পেয়েছি বা যতটুকু পেয়েছি তার সবটুকুই পেয়েছি লোকদের কাছ থেকে। তবে তা কখনো কখনো ইতিবাচক এবং কখনো কখনো নেতিবাচক। তাই এই ইতি এবং নেতিবাচকতা আমাদেরকে কল্যাণের তরে অগ্রসর হতে সহায়তা করেণি এমনকি বিফলতায়ও ফেলেনি। তবে পরিবর্তনের মাধ্যমে মুখ ধোয়ার মত একটি বিষয় মাত্র দৃশ্যমান রেখেছে। যার মাধ্যমে বলা যায় শুধু ব্যবস্থার পরিবর্তন, মানুষের পরিবর্তন, কিন্তু চিন্তা ও কাজের কোন গুনগত পরিবর্তন ঘটেনি। যা এখন দৃশ্যমান এবং চলমান।

জনতা এখন স্তব্ধ ও বাকরুদ্ধ। কিন্তু জাতির অভিভাবকরা এখন উচ্ছসিত এবং উল্লসিত। তবে কেউ কেউ পরিবর্তনের জন্য দু:খ ভারাক্রান্ত আর কেউ কেউ ক্ষমতা যাওয়ার জন্য নেশাগ্রস্ত। তাই এই দু:খ এবং নেশা দুটোই এখন জাতির সামনে বিপদজনক আকার ধারণ করছে। কোনটা ছেড়ে কোনটা তা নিয়েই চলছে জাতির সামনে এক কঠিণ তামাশা। এই তামাশায় এখন দিশেহারা আমরা। সৃষ্টিকর্তা আমাদেরকে দিশা দিক এবং তামাশা থেকে মুক্ত করুক এই কামনাই করি। আমিন\

Leave a Reply

Your email address will not be published.