কে ভাল আর কে মন্দ

কে ভাল আর কে মন্দ এই বিষয়টি এখন পরিস্কার। যদি আমরা অতিত ও বর্তমানকে বিশ্লেষণ করি এবং সেই অতীত এবং এই বর্তমান একসঙ্গে তুলনা করি তাহলেই স্বচ্ছ এবং সুন্দর ও ইতিবাচক এবং নির্ভেজালভাবে ভাল আর মন্দকে আলাদা করা যায়। ভালকে চিনা ও জানা এবং বুঝা যায়। আর ভাল’র সাথে থাকা যায়। ভালকে নিয়ে চলা যায়।

সর্বপ্রথম সৃষ্টিকর্তা ভাল ও মন্দ বোঝা এবং যাচাই করার জন্য একটি কিতাব নাযেল করেন যা হযরত মূসা আ: এর মাধ্যমে আমাদের কাছে এসেছে এবং এই কিতাবের নাম হলো তৌরাত। আর তৌরাত শব্দের অর্থ হলো সত্য এবং মিথ্যাকে আলাদা করা। পাপ ও পূণ্যকে বুঝা এবং জানা। মোট কথা ভাল এবং মন্দকে পৃথক করা। এই বিষয়টি চমৎকার। সমস্ত কিতাবের মধ্যে একটি চমক হলো এই সত্য মিথ্যাকে আলাদা করা বা ভাল ও মন্দকে চিহ্নিত করার জন্য আল্লাহ একটি ফলকে দশটি শরীয়ত বা আইন লিপিবদ্ধ করে মূসাকে তূর পাহারে দিয়েছিলেন। সেই দশটি শরীয়ত বা আইন দ্বারাই আজ আমরা ভাল ও মন্দকে পরখ করতে পারি। সত্য ও মিথ্যাকে আলাদা করতে পারি। এখন বিষয় হলো সেই আইন বা শরীয়ত আমরা জানি বা মানি কি না। তাও খতিয়ে দেখতে হবে।

এই সময়ে এসে আমরা প্রত্যেকেরই কাছে একটি বিষয় স্পষ্ট যে, ভাল বা মন্দ এই দুটা গুণই বুঝার সুযোগ হয়েছে বা হয় এবং হবে। তবে তা মানা বা গ্রহন করা বা বর্জন করাই হলো গুরুত্বপূর্ণ। আশা করা যায় আমরা সকলেই ভাল ও মন্দ এই দুটো বিষয় বুঝি তবে তা মেনে কেউ কেউ চলি আর কেউ কেউ চলি না। যাই হোক তারপরও বলছি যুগের প্রয়োজনে এবং চাহিদার যোগানে এখন ভাল ও মন্দকে জানা ও মানা প্রয়োজন। আর যদি আরো পরিস্কার করি তাহলে বলতে হবে এই অল্প দিনের পৃথিবীতে ভাল-মন্দ মিশানো জীবনের স্বাদ আর শুধু ভাল’র সঙ্গে বসবাসের স্বাধ আস্বাধন করা জরুরী। কারণ দিনের ও যুগের এবং এই জীবনের শেষে বা স্থায়ী আবাস্থলে একমাত্র ভাল’র অবস্থান পরিস্কার এবং স্পষ্ট। তাই পৃথিবীতে যদি ভাল থাকা যায় তাহলে আখেরাতে বা মৃত্যুর পরও ভাল থাকার নিশ্চয়তা শতভাগ নিশ্চিত করা যায়। আর সৃষ্টিকর্তা একই কথা বার বার বলেছেন; যেন আমরা এই পৃথিবী থেকেই ভাল’র চর্চা করি এবং সেই অনুযায়ী সৃষ্টিকর্তার সান্নিধ্য এবং স্থায়ী আবাসে বসবাস করি।

আমাদের সার্বজনীন জীবনে, পরিবারে, সমাজে, কর্মক্ষেত্রে, রাষ্ট্রীয় জীবনের সকল ক্ষেত্রে স্ব স্ব অবস্থানে ভাল’র সঙ্গে থাকার চেষ্টা করুন। যদিও আমরা ভাল এবং মন্দ উভয়ের সঙ্গেই থাকছি তথাপি এখন সময় এসেছে ভাল এবং মন্দকে আলাদা করার। শুধু ভালকে আকঁড়ে ধরে অগ্রসর হওয়ার। ভাল এর সঙ্গে বসবাস এবং উঠাবসা করার। পূর্বসূরীদের জীবন ও কর্ম বিশ্নেষণ করে দেখার এবং সেই সাথে নিজের জীবনও দেখে অগ্রসর হওয়ার। তবে একটি কথা পরিস্কার যে, যদি আমরা ভাল এর সঙ্গে থাকতে চাই তাহলে কঠোর ও কঠিন অধ্যবসায়ের প্রয়োজন। জাগতিকতা এবং শয়তানের আক্রমন অতিক্রম করেই ভালকে আকঁড়ে ধরে অগ্রসর হতে হবে। তবে এই যাত্রায় সৃষ্টিকর্তার সহায়তা প্রয়োজন এবং তাঁর সাহায্য নিয়ে সকল আক্রমণ প্রতিহত করা সহজ এবং ভাল এর সঙ্গে বসবাস নিরবচ্ছিন্ন হয়।

সামনে বিভিন্ন ধরণের নির্বাচন দৃশ্যমান হচ্ছে। তাই এই নির্বাচনেও ভাল ও মন্দকে চিহ্নিত করে আগামীর কল্যাণ সুনিশ্চিত করা উচিত। যারা এখন নির্বাচনের মাঠে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে আর যারা পালিয়ে বেড়াচ্ছে। উভয়ের অতীত এবং বর্তমানকে দৃশ্যমানতায় নিয়ে আসুন। বিশ্লেষণ করুন। তারপর ভবিষ্যত করনীয় ঠিক করে আপনার ভোটাধিকার প্রয়োগ করুন। কে মন্দ আর কে ভাল ছিল এবং আছে তা খুবই পরিস্কার এবং স্বচ্ছভাবে আলাদা করে দেখা ও বুঝা যায় এবং সেই অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেয়াও যায়। তাই সবই এখন আপনার ও আমার উপর নির্ভর করে। কারণ আগামীর কল্যাণ ও ভবিষ্যৎ বিনির্মানে ভুমিকা রাখার এখনই সময়। কারো সুমিষ্ট কথায় বা প্রলোভনে বা আবেগের বশবর্তি হয়ে কোন সিদ্ধান্ত নেয়া ঠিক হবে না। তাই ভাল ও মন্দ এই দুটো বিষয় আলদা করতে হবে এবং সেই অনুযায়ী ভালকে আকড়ে ধরে সকল সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তাই এখন অতিত বিশ্লেষণ ও বর্তমান পর্যবেক্ষণ করে ভবিষ্যতের সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

আমি বা আমরা কাউকেই খারাব বলব না বা নিন্দা করবো না শুধু খারাপ হলো ঐ সময়ের ঘটে যাওয়া তাদের কৃতকর্মগুলো এবং বর্তমানের ছল-ছাতুরী ও মিথ্যা আশ্বাস এবং ছলনাগুলো।

তাই সময় এসেছে আমাদের সামনে। এই সময়কে কাজে লাগাতে হবে। নতুনদেরকে যারা ভাল’র সঙ্গে বসবাস করে জীবন সংগ্রামে লিপ্ত তাদেরকে রক্ষা করতে হবে এবং তাদেরকে এগিয়ে নিয়ে যেতে ভুমিকা রাখতে হবে। হউক সে প্রবীন বা পৌড় অথবা যুবক। আগামীর কল্যাণের দায়িত্ব আমাদের সকলের উপর। সেই হিসেবেই সিদ্ধান্ত নিতে ভাল মন্দকে সামনে আনতে হবে। স্বচ্ছতার ভিত্তিতে দাড়িপাল্লায় মেপে মেপে করণীয় ঠিক করতে হবে। এই ক্ষেত্রে কিতাবের একটি কথা উল্লেখ করি যাতে আমাদের করণীয় ঠিক করতে সহায়তা করতে পারে। “যা সত্য যা উপযুক্ত যা সৎ যা খাঁটি যা সুন্দর যা সম্মান পাবার যোগ্য, মোট কথা যা ভাল এবং প্রশংসার যোগ্য সেই দিকে তোমরা মন দাও।”

হ্যা আসুন আমরা আমাদের সর্বস্ব দিয়ে সৃষ্টিকর্তাকে ভালবাসি, তাঁর আরাধনা করি, স্তুতি গাই, তাঁর সাহায্য চাই জীবনের সকল ক্ষেত্রে সকল কার্যে। সৃষ্টিকর্তার সহায়তা নিয়ে আমাদের জীবনকে সাজাই এবং সেই অনুযায়ী আগামীর করনীয় বাস্তবায়ন করি। আল্লাহ বা সৃষ্টিকর্তা আমাদেরকে সুনিশ্চিত করবেন আগামীর ভালকে। ভালকে আকড়ে ধরার একমাত্র ও অভিন্ন পথই হলো সৃষ্টিকর্তা। এই মোনাজাত অবিরত রাখি সকলের কল্যাণের তরে। আমীন।।

Leave a Reply

Your email address will not be published.