প্রশান্তি ডেক্স ॥ সাংবাদিকদের প্রস্তাবিত নীতিমালা পর্যালোচনা করে সাংবাদিক-বান্ধব নীতি প্রণয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

গত বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে রিপোর্টার্স ফোরাম ফর ইলেকশন অ্যান্ড ডেমোক্রেসির (আরএফইডি) সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের মতবিনিময় সভায় এমন আশ্বাস দিয়েছে কমিশন। এ সময় সভায় চার নির্বাচন কমিশনার, ইসি সচিব, আরএফইডির সদস্য সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
সম্প্রতি ঘোষিত ‘সাংবাদিক ও গণমাধ্যমকর্মী-২০২৫ নীতিমালা’তে নতুনত্বের অভাবের অভিযোগের পর নির্বাচন কমিশন জানায়, সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ নির্বাচন নিশ্চিত করতে সাংবাদিকদের জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরিতে তারা অঙ্গীকারবদ্ধ।
জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাছউদ বলেন, আপনারা লিখিত প্রস্তাব দিয়েছেন, এতে ভালোমন্দ বোঝা যায়। আমরা তা পর্যালোচনা করবো। সুষ্ঠু নির্বাচন ও তথ্যের অবাধ প্রবাহ নিশ্চিত করতে যা করা দরকার কমিশন তা করবে।
তিনি বলেন, প্রস্তাবিত নীতিমালা পর্যালোচনা করে আপনাদের জন্য সহজ হয়, স্বচ্ছ নির্বাচনের জন্য যেটা ভালো হয়, সেটা করা হবে।
আরেক নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেন, সাংবাদিক নীতিমালায় নতুন কিছু নেই, এ অভিযোগ যুক্তিযুক্ত। আপনাদের প্রস্তাব আমরা স্বাগত জানাই। মূল উদ্দেশ্য একটি ভালো নির্বাচন করা, যেখানে গণমাধ্যম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তবে আস্থার সংকট আমাদের জাতীয় সমস্যা; যা কাটাতে সবাইকে সহযোগিতা করতে হবে। গণমাধ্যম নীতিমালা নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে সাংবাদিক ও কমিশনের অভিজ্ঞতা যুক্ত করলে ভুলের সুযোগ কমবে এবং সমাধান পাওয়া সহজ হবে বলে জানান তিনি।
এ সময় আরএফইডির সভাপতি কাজী এমাদ উদ্দীন জেবেল বলেন, প্রার্থীরা যেদিন মনোনয়নপত্র জমা দেবেন ওই দিনই হলফনামার তথ্য স্থানীয় বা কেন্দ্রেীয়ভাবে গণমাধ্যমকে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। নির্বাচনে প্রার্থী ও রাজনৈতিক দল তাদের নির্বাচনি খরচের যেই বিবরণ জমা দেন, সেগুলো গণমাধ্যমের জন্য দ্রতই উন্মুক্ত করার ব্যবস্থা নিতে হবে। ভোটের দিন বেসরকারি ফলাফলের চূড়ান্ত বার্তা সিট এবং যত দ্রুত সম্ভব কেন্দ্রভিত্তিক ফলাফল স্থানীয় বা কেন্দ্রেীয়ভাবে গণমাধ্যমকে দিতে হবে।
তিনি বলেন, প্রত্যেক নির্বাচনি এলাকার জন্য একজন সহকারী রিটার্নিং অফিসার বা উপজেলা নির্বাচন অফিসারের নেতৃত্বে একটি করে মিডিয়া সেল গঠন করা হবে। এছাড়াও আমাদের প্রস্তাবিত নীতামালা অনুযায়ী ইসির প্রণীত নীতিমালা সংশোধন করতে হবে। না হলে ইসির সব ধরনের উদ্যোগ ধ্বংস হয়ে যাবে।
আরএফইডি নেতারা সার্বিক বিষয় নিয়ে ভিন্নমত, আপত্তি তুলে ধরে জানিয়েছেন, বিদ্যমান নীতিমালা বহাল থাকলে সাংবাদিকদের অবাধ তথ্য প্রবাহ বিঘ্নিত হবে। সাংবাদিকদের এসব কড়াকড়ি আরোপ করলে অনিয়ম রোধে ইসির উদ্যোগের সব প্রচেষ্টা ভেস্তে যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে বিদ্যমান নীতিমালা সংশোধন করতে হবে।
আরএফইডির লিখিত প্রস্তাবনায় যে দাবিগুলো জানানো হয়েছে সেগুলো হলো অনুমোদিত সাংবাদিকদের ভোটকেন্দ্রে প্রবেশে প্রিসাইডিং অফিসারকে অবহিত করার বিধান বাদ দেওয়ার দাবি জানানো হয়; গোপনকক্ষের ছবি ধারণে বারণ থাকলেও নির্বাচনি অনিয়মের সময় এটি প্রযোজ্য হবে না; এক সঙ্গে কমপক্ষে পাঁচ জন সাংবাদিককে ভোটকক্ষে প্রবেশের সুযোগ দেওয়া এবং গণমাধ্যম প্রতিনিধিকে বাধা দিলে দোষী সাব্যস্ত করার বিধান যুক্ত করা।
মতবিনিময় সভায় সাংবাদিকদের জন্য প্রস্তাবিত নীতিমালা উপস্থাপন এবং ইসির কাছে হস্তান্তর করেন আরএফইডি সভাপতি কাজী জেবেল।