কাতারের ডেপুটি আমিরের কাছে বাংলাদেশের নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূতের পরিচয়পত্র পেশ

প্রশান্তি ডেক্স ॥ কাতারে বাংলাদেশের নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ হযরত আলী খান গত মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) দোহায় আমিরি দেওয়ানে দেশটির ডেপুটি আমির শেখ আব্দুল্লাহ বিন হামাদ আল থানির কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে তার পরিচয়পত্র পেশ করেন। এ সময় সামরিক বাহিনীর বাদক দল বাংলাদেশ এবং কাতারের জাতীয় সংগীত পরিবেশন করে এবং সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল রাষ্ট্রদূতকে গার্ড অব অনার প্রদান করে। দোহার বাংলাদেশ দূতাবাস এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানায়।

পরিচয়পত্র প্রদানের আনুষ্ঠানিকতা শেষে রাষ্ট্রদূত কাতারের ডেপুটি আমিরের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বৈঠকে মিলিত হন। বৈঠকে কাতারের ডেপুটি আমির বাংলাদেশের নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূতকে আন্তরিকভাবে অভিনন্দন ও স্বাগত জানান। তিনি রাষ্ট্রদূতের মাধ্যমে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি, প্রধান উপদেষ্টা এবং বাংলাদেশের মানুষের প্রতি তার শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করেন।

ডেপুটি আমির শেখ আব্দুল্লাহ বিন হামাদ আল থানি কাতারে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং কাতারের উন্নয়নে তাদের অবদানের জন্য ধন্যবাদ জানান। বাংলাদেশ ও কাতারের মধ্যে বিদ্যমান ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সুসম্পর্ককে অধিকতর উচ্চতায় পৌঁছানোর লক্ষ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃদ্ধির ওপর তিনি গুরুত্বারোপ করেন।

কাতারের ডেপুটি আমিরকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি, প্রধান উপদেষ্টা এবং বাংলাদেশের জনগণের পক্ষে রাষ্ট্রদূত হযরত আলী খান শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জ্ঞাপন করেন। রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘প্রবাসী বাংলাদেশিরা একদিকে যেমন কাতারের উন্নয়নে অবদান রাখছেন, অন্যদিকে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছেন।’

কাতারের চলমান উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে প্রবাসী বাংলাদেশি কর্মীদের একনিষ্ঠ অবদানের কথাও রাষ্ট্রদূত উল্লেখ করেন। বাংলাদেশ ও কাতারের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ককে শক্তিশালী করার মাধ্যমে দুই দেশ পারস্পরিকভাবে লাভবান হবে বলে রাষ্ট্রদূত আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

এ সময় তিনি বাংলাদেশে বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে কাতারের জন্য ‘এক্সক্লুসিভ ইকোনমিক জোন’ প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব করেন। এ ছাড়াও তিনি বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে চলমান সংঘাত নিরসনে মধ্যস্থতাকারী হিসাবে কাতারের নেতৃস্থানীয় ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং কাতারে সাম্প্রতিক ইসরায়েলি হামলার তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করেন। কাতারের আমিরের বাংলাদেশ সফর এবং প্রধান উপদেষ্টার সাম্প্রতিক কাতার সফরের কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘এর মাধ্যমে ভ্রাতৃপ্রতিম দুদেশের সম্পর্ক অনন্য উচ্চতায় উন্নীত হয়েছে।’ উচ্চপর্যায়ের সফর বিনিময়ের এই ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে বলেও রাষ্ট্রদূত আশাবাদ ব্যক্ত করেন এবং ডেপুটি আমিরকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান।

কাতারের ডেপুটি আমির নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূতের সফলতা কামনা করেন এবং সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

উল্লেখ্য, রাষ্ট্রদূত হযরত আলী খান একজন পেশাদার কূটনীতিক। তিনি বিসিএস (পররাষ্ট্র) ক্যাডারের ২১তম ব্যাচের কর্মকর্তা। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। রাষ্ট্রদূত হিসেবে যোগদানের আগে তিনি লন্ডনে ডেপুটি হাইকমিশনার এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

বৈঠকে অন্যান্যের মধ্যে আমিরি দেওয়ানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, কাতার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রাষ্ট্রাচার প্রধান, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দফতরের কর্মকর্তা এবং বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রথম সচিব আব্দুল্লাহ আল রাজী উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য যে, বাংলাদেশ ছাড়াও বেলজিয়াম, কানাডা, পোল্যান্ডসহ মোট ৭টি দেশের রাষ্ট্রদূত এদিন ডেপুটি আমিরের কাছে পরিচয়পত্র পেশ করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published.