মেহেদি হাসানের সাক্ষাৎকারে নির্বাচন অনুষ্ঠানে বিলম্ব নিয়ে যা বললেন ড. ইউনূস

প্রশান্তি আন্তর্জাতিক ডেক্স ॥ জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে যোগ দেওয়ার ফাঁকে জেটিও’র প্রতিষ্ঠাতা সাংবাদিক মেহেদি হাসানকে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন অন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস বলেন, নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে জনগণের বিভিন্ন ধরনের মতামত আছে। কেউ এমনও বলেন, এই সরকার ৫ বছর, ১০ বছর, এমনকি ৫০ বছর পর্যন্ত থাকুক। কিন্তু আমরা ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধেই নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

বিবিসি ও আল-জাজিরার সাবেক এই সাংবাদিক নেপালের সঙ্গে তুলনা করে বাংলাদেশে এই সরকার নির্বাচন অনুষ্ঠানে বেশি বিলম্বের কারণ জিজ্ঞেস করেন। বলেন, নেপালের অন্তবর্তী নেতা ছয় মাসের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। বাংলাদেশে এত সময় লাগছে কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে ড. ইউনূস এ কথা বলেন। ড. ইউনূস আরও বলেন, আমরা একটি অন্তবর্তী সরকার। আমাদের মেয়াদ কতদিন হবে এটা কেউ নির্ধারণ করে দেয়নি। এটা আমাদের সিদ্ধান্ত, এখানে আমরা কতদিন থাকবো।

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, আমরা মনে করি আমাদের প্রধানত তিনটি কাজ। প্রথমত সংস্কার, এরপর বিচার এবং সবশেষে নির্বাচন। আমরা এখন সংস্কারের কাজ করছি। এটা অনেক বড় একটা কাজ।

তিনি বলেন, যদি আমরা আগের মতোই কেবল নির্বাচন নিয়ে ভাবি, তাহলে কোনও পরিবর্তন আসবে না। সব কিছু আগের মতোই থাকবে। কাজেই আন্দোলনের মূলশক্তি ছাত্রদের প্রধান দাবি আগের যত অনিয়ম, সবকিছুর মূলোৎপাটন করা। কেবল তাহলেই পার্থক্যটা টের পাওয়া যাবে এবং তাহলেই আগের সেই অপশাসন আর ফিরে আসতে পারবে না।

তার মতে, ফ্যাসিজম ও স্বৈরাচারের প্রত্যাবর্তন এভাবেই প্রতিরোধ করা যাবে। এসবই বর্তমান সরকারের প্রধান অ্যাজেন্ডা। মূল সাক্ষাৎকারের প্রায় তিন মিনিটের একটি ভিডিও ক্লিপ জেটিওতে সোমবার রাতে প্রচার করা হয়।

যারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করেন তারা বলেন, কেন আমরা তাড়াতাড়ি নির্বাচন করতে পারছি না? এই বিলম্ব কীসের জন্য? মেহেদি হাসানের এমন প্রশ্নের জবাবে ড. ইউনূস আরও বলেন, এটা এখন আর গণতন্ত্রের বিষয় নয়, তারা এখন সুশাসন নিয়ে কথা বলে। আমরা দুর্নীতিমুক্ত শাসন দেখতে চাই। সেজন্যই তারা এই সরকারকে আরও বেশি দিন থাকতে বলে। আমরাও নির্বাচনের পর কোনও ধরনের বিশৃঙ্খলার মধ্যে পড়তে চাই না।

মেহেদি হাসান জিজ্ঞেস করেন, কিন্তু আপনারা অন্তবর্তী সরকার। বড় সিদ্ধান্তগুলো কি আপনাদের নির্বাচিত সরকারের মাধ্যমেই নেওয়া উচিত নয়? এমন প্রশ্নের জবাবে ড. ইউনূস বলেন, আমরা শুধু বলেছি তিনটি কাজ আমাদের দেওয়া হয়েছে। আর সেটা আমরা করবো। এ নিয়ে আমাদের মধ্যে কোনও মতবিরোধ নেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published.