অমানবিকতা এখন একটি ফ্যাশন হিসেবে পরিগণিত হয়েছে। যে যত অমানবিক হতে পারবে সে ততই মানবিক এবং উদার হিসেবে পরিগণিত হবে। বিশ্বে এই যাত্রায় অমানবিকতার জয়জয়াকার। যেদিকে তাকাবেন সেদিকেই এই অমানবিকতার জয়। মানবিকতা যেন এক অভিষাপে পরিণত হয়েছে। তাই অমানবিকতার আড়ালে মানবিকতাকে জাগ্রত করাই এখন আমার ও আপনার সকলের কাজ হওয়া উচিত। ইসরাইলে অমানবিকতা এবং সেই অমানবিকতায় পানি ঢালতে মানবিক হয়ে যারা গিয়েছিল তারাও এখন আটক। কারো কিছু করার নেই, বলার আছে কিন্তু সেই বলাতে কোন ফায়দা নেই। আমানবিকতার কাছে এখন বন্দি মানবিকতা।
বাংলাদেশে এই অমানবিকতা কোথায় গিয়ে পৌঁছেছে তার নজির গাইবান্ধার বৃদ্ধের ঘরের চালের টিন খুলে নেয়া। অসহায়ের প্রতি মানবিক হবে পৃথিবী এবং এর অধিনে বসবাসকারী মানুষজন। কিন্তু কোথায় সেই মানবিকতা আজ! কিভাবে পুনরুদ্ধার করা যাবে সেই নি:শর্ত এবং নি:স্বার্থ মানবিকতাকে? কোথায় নেই এই অমানবিকতার বেড়াজাল। পরিবার, সমাজ, অর্থনীতি, রাজনীতি, সরকার এবং বৈশ্বিক পরিমন্ডলে অমানবিকতা ঘ্রাস করেছে মানবিকতাকে ঘিলে খাওয়া আর গলাটিপে মারার জন্য। আর আজ দৃশ্যমানভাবে দেখা যাচ্ছেও তাই। এই অমানবিক পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র ও বৈশ্বিক কাঠামোয় কিভাবে মানবিকতাকে ফিরিয়ে আনা যায় এবং টিকিয়ে রাখা যায় সেই কর্ম ও চিন্তায় নতুনত্ব আনয়ন করা এখন জরুরী।
মানুষের কথায় এখন অমানবিকতায় ভরপুর। কথার অমানবিকতার বিস্ফোরণে জর্জরিত বিশ্ব। বাংলাদেশ থেকে বিশ্বের শেষ প্রান্ত পর্যন্ত এই আমানবিকতার স্বরূপ একইভাবে উন্মোচিত। ধনী এবং গরীব বলে কোন বিষয় নয় বরং অমানবিকতা সব ক্ষেত্রেই এবং সব স্থানেই প্রকট এবং সর্বাঘ্রে বিরাজ করছে। শ্রদ্ধাভাজ পুজনীয় জনাব ট্রাম্প সাহেব হতে পুতিন সাহেব, তারপরে জেলি সাহেব হয়ে সিজিংপিং এবং আমাদের মোদি সাহেব থেকে জনাব মোহাম্মদ ইউনূছ সাহেব সবাইকেই বলছি আপনারা আর অমানবিকতাকে আশ্রয় -প্রশ্রয় দিয়েন না এবং নিজেরা এর জন্মদাতা ও রক্ষাকবজ হইয়েন না। এটা আমার অনুরোধ। যদি মানবিক না হতে পারেন তবে অন্তত অমানবিকতাকে টিকিয়ে রাখতে সহায়তা করিয়েন না। মানবিকতাকে বেঁচে থাকতে সহায়তা করুন। আর এই দাবিটুকুতো করতেই পারি।
নিজেদের জীবন ও কর্ম থেকে অমানবিকতাকে পরিহার করি। খুজে বের করি এবং সেই অমানবিকতার বিরুদ্ধে নিজে আগে সোচ্চার হই। তারপর অন্যদেরকে বলি নিজের সোচ্চার হওয়ার কাহিনি এবং পরামর্শ হিসেবে দৃষ্টান্ত স্থাপন করি অন্যের জীবন ও কর্মে। মানবিক হয়ে অমানবিকতার কথা বলতে আমার ঘৃণা হচ্ছে এবং মনোকষ্ট হচ্ছে তাই সুস্পষ্ট অমানবিক বিষয় উল্লেখ না করে শুধু হাই হোতাশ করেই লিখছি। এতে যদি কারো মনে কষ্ট এবং ক্ষোভের জন্ম নেই তাহলে আমাকে মানবিক হয়ে ক্ষমা করবেন। আর এতেই মানবিকতার যাত্রা শুরু হবে এবং আমি ও আপনি একই পথে অগ্রসর হতে ঐক্যবদ্ধ যাত্রারম্ভ এবং এর যোগসূত্র দেখতে পাব।
অমানবিকতার কলঙ্ক মোচনে কি কি করা উচিত বলে মনে করেন তা ঠিক করুন। এবং এই অমানবিকতা পাশ কাটিয়ে নয় বরং মানবিকতা দ্বারা পরাজিত করতে যেসকল চর্চার প্রয়োজন সেই চর্চায় মনযোগী হউন। শুধু মনযোগী হলেই চলবে না বরং সেই মনযোগকে কার্যে পরিণত করতে হবে। মনযোগ, চিন্তা ও কার্যের সমন্বয় সাধন ঘটানো এখন জরুরী। তাই বিনীত অনুরোধ সময় ও সুযোগকে কাজে লাগান। ক্ষুদ্র থেকে অতি ক্ষুদ্র এবং বৃহৎ থেকে অতি বৃহৎ সকলেই একযোগে এই চেষ্টায় সাধন ও মগ্ন হয়ে পৃথিবীকে সামনে এগিয়ে নিন। নিজেদের কর্মের ফল উপভোগে মানবিক হয়ে মানবিকতাকে নতুন জীবন দিয়ে এগিয়ে যেতে সহায়তা করুন।
এই মানবিকতায় সৃষ্টিকর্তার অভিপ্রায় কি এবং কিভাবে তিনি সেই মানবিকতাকে আমাদের সামনে প্রকাশ করেছেন তার বিস্তারিত সৃষ্টিকর্তার সৃষ্টিপূর্ব পরিকল্পনা এবং সৃষ্টির পর রচিত কাহিনীতে লিপিবদ্ধ। তাই সেই কাহিনী জানুন এবং সেই অনুযায়ী আমার ও আপনার দায়িত্ব সুসম্পন্ন করুন। কি দৃষ্টান্ত এবং দিক নির্দেশনা তিনি দিয়েছেন আর কি কি করণীয় ঠিক করেছেন তার দিকে নজর দিন। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সৃষ্টিকর্তার সঙ্গে থাকুন। সৃষ্টিকর্তার সহায়তা নিয়ে তাঁর পরিচর্যায় এবং পরিচালনায় নিজেকে নিয়োজিত রাখুন। সরলতা এবং সফলতা দৃশ্যমান রাখুন এবং দেখুন অন্যকে দেখার ও উপভোগ করার সুযোগ করেদিন।
আমার আহবান ও ফরিয়াদ আপনাদের সকলের জন্য। আসুন আমরা মানবিক হই এবং মানবিকতাকে সকল ক্ষেত্রেই ব্যবহার করি। এই মানবিকতার উপর নিজেকে দাঁড় করিয়ে বিশ্বকে দাঁড় করাই। সবাই মিলেই সৃষ্টিকর্তার পরিবারের সদস্য হই এবং সেই পরিবারের সুখ-শান্তি-আনন্দ- নিশ্চয়তা ও নিরাপত্তা উপভোগে নিয়োজিত থাকি। এই কামনা ও মিনতিই আজকের জন্য।