প্রশান্তি আন্তর্জাতিক ডেক্স ॥ যুক্তরাজ্যের ৩০ বছর বয়সি আইজ্যাক হার্ভি জন্মেছিলেন লিম্ব/পেলভিস হাইপোপ্লাসিয়া/অ্যাপ্লাসিয়া (এলপিএইচএ) সিনড্রোম নিয়ে। এটি একটি বিরল জেনেটিক সমস্যা, যার কারণে তার হাত নেই, পা আকারে ছোট, পেলভিস দুর্বল এবং মেরুদন্ড বেঁকে গেছে। তবুও তিনি আজ দৃঢ়তা ও উচ্চাকাঙ্খার প্রতীক হয়ে উঠেছেন।

২০১৫ সালে ১৪ হাজার ফুট ওপরে থেকে স্কাইডাইভ দিয়ে তার রোমাঞ্চকর যাত্রার সূচনা হয়। তবে সবচেয়ে বড় বাধা ছিল ঝাঁপ দেওয়া নয়, বরং এমন এয়ারফিল্ড খুঁজে পাওয়া যারা তার বিশেষ চাহিদা পূরণ করতে রাজি। যুক্তরাজ্যের একাধিক জায়গা প্রত্যাখ্যান করার পর অবশেষে যুক্তরাষ্ট্রে তিনি প্রয়োজনীয় সরঞ্জামসমৃদ্ধ একটি এয়ারফিল্ড খুঁজে পান। স্কাইডাইভের অভিজ্ঞতা প্রসঙ্গে তিনি জানান, ভয় থাকলেও আকাশে উঠেই তা দৃঢ় সংকল্পে রূপ নেয়।
এরপর থেকে তিনি স্কি, টল শিপে নৌভ্রমণসহ নানা রোমাঞ্চকর অভিযানে যুক্ত হয়েছেন। তবে শুধু অভিযানেই সীমাবদ্ধ নন, হার্ভি সক্রিয়ভাবে বিশেষ শারীরিক চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিদের পক্ষে কাজ করছেন। কমিউনিটি সেবার স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি ব্রিটিশ রাজপরিবারের পক্ষ থেকে এমবিই খেতাব পেয়েছেন। বর্তমানে তিনি ‘হুইলস অ্যান্ড হুইলচেয়ার্স’ নামের একটি ক্লাবের সভাপতি, যা হুইলচেয়ার ব্যবহারকারী ও স্কেটারদের জন্য আউটডোর অ্যাডভেঞ্চারের আয়োজন করে।
হার্ভি কনটেন্ট নির্মাতা হিসেবেও পরিচিত। তিনি ২০১৭ সালে লন্ডনের সেরা তরুণ ভ্লগার নির্বাচিত হন। অনুপ্রেরণামূলক তার যাত্রার মধ্যে রয়েছে ২০১২ সালে অলিম্পিক মশাল বহন, ২০২২ সালে লন্ডন ফ্যাশন উইকে মডেলিং এবং ২০২৪ ও ২০২৫ সালে নির্মিত দুটি প্রভাবশালী প্রামাণ্যচিত্র ফাইট টু ফ্লাই এবং ফাইটারস-এ অংশগ্রহণ।
হার্ভির গল্প আজকের সমাজে প্রমাণ করে যে শারীরিক সীমাবদ্ধতা কোনোভাবেই সম্ভাবনার শেষ নয়। বৈশ্বিকভাবে প্রতিবন্ধী অধিকার নিয়ে আলোচনা জোরদার হচ্ছে, আর তার মতো মানুষরা সেই আলোচনাকে আরও বাস্তব ও প্রেরণাদায়ী করে তুলছেন।
তথ্যসূত্র: এনডিটিভি