ইসিকে ব্যাংক অ্যাকাউন্টের তথ্য ও গঠনতন্ত্র দিলো জামায়াত

প্রশান্তি ডেক্স ॥ নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কাছে দলের ব্যাংক অ্যাকাউন্টের তথ্য ও সংশোধিত গঠনতন্ত্র জমা দিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। ইসির শর্ত অনুযায়ী এরআগে দলের ব্যাংক অ্যাকাউন্টের তথ্য দিতে না পারার কারণও ব্যাখ্যা করেছে জামায়াত।

গত বুধবার (৮ অক্টোবর) আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ারের সই করা এক চিঠি কমিশনে দেওয়া হয়।

ইসির দায়িত্বশীল ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, ওনারা এসেছিলেন তাদের গঠনতন্ত্র জমা ও দলটির ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে সেই তথ্য দিতে।

কমিশনকে দেওয়া চিঠিতে জামায়াত জানায়, ২০১৩ সালে নিবন্ধন বাতিল হওয়ার পর থেকে ‘প্রতিকূল পরিস্থিতির’ কারণেই তারা কার্যকরভাবে কোনও ব্যাংক হিসাব পরিচালনা করতে পারেনি। তারা ২০০৮ সাল পর্যন্ত সব নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে। কিন্তু ‘স্বৈরাচারী ও ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকার পরিকল্পিতভাবে বিচার বিভাগকে ব্যবহার করে’ ২০১৩ সালে হাইকোর্ট ডিভিশনের রায়ের মাধ্যমে জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল করে। ২০১৩ সালের পহেলা আগস্ট হাইকোর্ট ডিভিশন জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল ঘোষণা করে। এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে সিভিল পিটিশন দাখিল করা হলেও হাইকোর্টের রায়ের কার্যকারিতা স্থগিত রাখা হয়নি।

জামায়াত দাবি করেছে, একটি প্রশাসনিক আদেশে তাদের নির্বাচনি প্রতীক ‘দাঁড়িপাল্লা’ বাতিল করা হয়, যা ‘আইনসিদ্ধ’ হয়নি। গত ২০১৮ সালের ২৯ অক্টোবর নির্বাচন কমিশন আনুষ্ঠানিকভাবে জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করে।

চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, গৌরবময় জুলাই ৩৬-এর বিপ্লবের পর আপিল বিভাগ রিভিউ শুনানি শেষে হাইকোর্ট ডিভিশনের সংখ্যাগরিষ্ঠ রায় বাতিল করেন এবং নিবন্ধন ও প্রতীক সংক্রান্ত বিষয় নিষ্পত্তির জন্য নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ দেন। ওই নির্দেশ অনুসারে ইসি জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন পুনর্বহাল করে এবং দলের প্রতীক (দাঁড়িপাল্লা) ফেরত দেয় ইসি।

চিঠিতে জামায়াত সেক্রেটারি জেনারেল জানায়, একটি আইন-মান্যকারী রাজনৈতিক দল হিসেবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ২০১৩ সালে নিবন্ধন বাতিল হওয়ার পর থেকে কোনও ব্যাংক হিসাব কার্যকরভাবে পরিচালনা করতে পারেনি। আমাদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সারা দেশের সব কার্যালয় বন্ধ করে দেওয়া হয়। আমরা মনে করি, এই স্বীকৃত সত্য ও প্রতিকূল পরিস্থিতির বর্ণনায় নিরীক্ষা প্রতিবেদনের সঙ্গে ব্যাংক হিসাব দিতে না পারা সংক্রান্ত সব প্রশ্নের অবসান হবে।

গঠনতন্ত্র সংক্রান্ত ব্যাখ্যায় জানানো হয়, বিগত ২০১৯ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর গঠনতন্ত্রের ২২তম সংশোধনী যথাযথ প্রক্রিয়ায় কেন্দ্রীয় কাউন্সিলে অনুমোদিত হয়েছে। এটিই সর্বশেষ সংশোধনী, যার কপি চলতি বছরের ৩০ জুলাইয়ের নির্বাচন কমিশনে দাখিল করা হয়েছিল। কমিশনের অবগতির জন্য সংশোধিত গঠনতন্ত্রের আরও একটি কপি পুনরায় দাখিল করা হয়েছে বলে চিঠিতে জানানো হয়। পাশাপাশি গঠনতন্ত্রের সর্বশেষ সংশোধন প্রক্রিয়ার কার্যবিবরণীর অংশ বিশেষও সংযুক্ত করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.