দিনাজপুরে ৪৩শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সবাই ফেল

প্রশান্তি ডেক্স ॥ দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এবারে ৪৩টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে কেউই পাস করতে পারেনি। দেশের ১১টি শিক্ষা বোর্ডের যে ২০২ প্রতিষ্ঠানের কেউই পাস করেনি, তার মধ্যে দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডেরই ৪৩ প্রতিষ্ঠান। শিক্ষা বোর্ড কর্তৃপক্ষ বলছে, বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

৪৩ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে নীলফামারীর ১০, কুড়িগ্রামের নয়, ঠাকুরগাঁওয়ের ছয়, লালমনিরহাটের পাঁচ, দিনাজপুরের চার, রংপুরের চার পঞ্চগড়ের তিন ও গাইবান্ধার দুটি। এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী সংখ্যা ১৮২ জন। এমন প্রতিষ্ঠানও রয়েছে যেখান থেকে মাত্র একজন পরীক্ষায় অংশগ্রহন করে অকৃতকার্য হয়েছে।

দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, নীলফামারীর যে ১০ প্রতিষ্ঠান থেকে কেউই পাস করতে পারেনি সেগুলো হলো- জলঢাকা উপজেলার বগুলাগাড়ী স্কুল অ্যান্ড কলেজের ১৫ জন, একই উপজেলার চৌরাডাঙ্গী হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজের ছয় জন, গোলমুন্ডা আদর্শ কলেজের তিন জন, কিশোরগঞ্জ উপজেলার নয়নখাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের পাঁচ জন, ডিমলা উপজেলার নৌতারা বালিকা স্কুল অ্যান্ড কলেজের তিন জন, জিলা পরিষদ স্কুল অ্যান্ড কলেজের দুজন, ডিমলা সীমান্ত কলেজের দুজন, গয়াখড়িবাড়ী মহিলা কলেজের দুজন, সদরের লক্ষ্মীচাপ সৃজনশীল কলেজের একজন ও সাতপাই হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজের একজন।

কুড়িগ্রাম জেলা থেকে যে নয় প্রতিষ্ঠান থেকে কেউই পাস করেনি সেগুলো হলো- রৌমারী উপজেলার চর শৌলমারী আদর্শ মহিলা কলেজের ১৫ জন, টপুরচর স্কুল অ্যান্ড কলেজের চার জন, ফুলবাড়ী উপজেলার রাশেদ খান মেনন কলেজের ১২ জন, রাজারহাট উপজেলার সিংড়া দবড়িহাট কলেজের ১০ জন, নাগেশ্বরী উপজেলার চিলাখানা মডেল কলেজের ছয় জন, কুটি পায়রা ডাঙ্গা স্কুল অ্যান্ড কলেজের তিন জন, সমাজ কল্যাণ মহিলা কলেজের একজন, উলিপুর উপজেলার বাগুয়া অনন্তপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের দুজন এবং ভুরুঙ্গামারী উপজেলার ঢোলডাঙ্গা স্কুল অ্যান্ড কলেজের একজন।

ঠাকুরগাঁও জেলার যে ছয় প্রতিষ্ঠান থেকে কেউই পাস করেনি সেগুলো হলো- সদরের সালন্দর মহিলা কলেজের আট জন, আমানতুল্লাহ ইসলামী একাডেমি স্কুল অ্যান্ড কলেজের পাঁচ জন, ঠাকুরগাঁও নিউ মডেল কলেজের চার জন, রানীশংকৈল উপজেলার গোগড় কলেজের পাঁচ জন, বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার রত্নাই বগুলাবাড়ী হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজের দুজন এবং পীরগঞ্জ উপজেলার একতিয়ারপুর শহীদ সালাহউদ্দীন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একজন।

লালমনিহাটের যে পাঁচ প্রতিষ্ঠান থেকে কেউই পাশ করেনি সেগুলো হলো- কালিগঞ্জ উপজেলার সোনারহাট স্কুল অ্যান্ড কলেজের পাঁচ জন, শিয়াল খোয়া কলেজের তিন জন, দক্ষিণ ঘনশ্যাম স্কুল অ্যান্ড কলেজের দুজন, হাতিবান্ধার আমিনুর রহমান কলেজের দুজন এবং আদিতমারীর ভেলাবাড়ী স্কুল অ্যান্ড কলেজের দুজন।

দিনাজপুরের যে চার প্রতিষ্ঠান থেকে কেউ পাস করেনি সেগুলো হলো- বীরগঞ্জ উপজেলার কবিরাজহাট কলেজের ১০ জন, বিরামপুর উপজেলার বেপারীতোলা আদর্শ কলেজের তিন জন, ফুলবাড়ীর উত্তর লক্ষ্মীপুর হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজের দুজন, হাকিমপুর উপজেলার বোয়ালদার স্কুল অ্যান্ড কলেজের দুজন।

রংপুরের যে চার প্রতিষ্ঠান থেকে কেউ পাস করেনি সেগুলো হলো- মিঠাপুকুর উপজেলার পায়রাবন্দ বেগম রোকেয়া স্মৃতি গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের নয় জন, বদরগঞ্জ উপজেলার কুতুবপুর বিলাতেরাল হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজের চার জন, পীরগাছা উপজেলার কান্দিরহাট স্কুল অ্যান্ড কলেজের একজন এবং গঙ্গাচড়া উপজেলার বড়াইবাড়ী কলেজের একজন।

পঞ্চগড়ের যে তিন প্রতিষ্ঠান থেকে কেউ পাস করেনি সেগুলো হলো- বোদা উপজেলা পাইলট গার্লস স্কুল ও কলেজের আট জন, মারেয়া মডেল হাই স্কুল ও কলেজের একজন এবং তেঁতুলিয়ার তমিজ উদ্দীন কলেজের দুজন।

গাইবান্ধার যে দুই প্রতিষ্ঠান থেকে কেউ পাস করেনি সেগুলো হলো- সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ঘাগোয়া হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজের পাঁচ জন ও সাঘাটা উপজেলার জুমারবাড়ী মহিলা কলেজের একজন।

এক শিক্ষা বোর্ডেই ৪৩ প্রতিষ্ঠানের কেউ পাস না করার কারণ জানতে চাইলে বীরগঞ্জ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ ড. মাসুদুল হক বলেন, ‘যেসব প্রতিষ্ঠান থেকে কেউই পাস করতে পারেনি সেগুলোর শিক্ষার্থী সংখ্যা খুবই কম। নামমাত্র শিক্ষার্থী থাকা এসব প্রতিষ্ঠান না থাকাই ভালো। এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের কাছাকাছি অন্য প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করে দেওয়া উচিত। কারণ শ্রেণিকক্ষে যদি অধিক শিক্ষার্থী না থাকে তাহলে পাঠদান হয় না, শিক্ষকরাও আগ্রহ পান না। বিষয়টি নিয়ে বোর্ডকে ভাবতে হবে।’

ওসব প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী কম থাকাকে ফেলের কারণ হিসেবে দেখছেন দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান তৌহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘যে প্রতিষ্ঠানগুলোর কেউ পাস করতে পারেনি তাদের শিক্ষার্থী সংখ্যা খুবই কম। এরপরও কেন তারা পাস করতে পারেনি সে বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তাদের এই খারাপ অবস্থা দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের পুরো ফলাফলের ওপর প্রভাব ফেলেছে। আমরা সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানদের সঙ্গে কথা বলবো।’

Leave a Reply

Your email address will not be published.