পোকরোভস্কে রুশ বাহিনীকে ঠেকাতে হিমশিম খাচ্ছে ইউক্রেন

প্রশান্তি আন্তর্জাতিক ডেক্স॥ পূর্ব ইউক্রেনের পোকরোভস্ক শহর রক্ষায় কঠিন লড়াই করছে ইউক্রেনীয় বাহিনী। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে রুশ সেনারা শহরটির চারপাশে অগ্রসর হয়ে ঘেরাওয়ের চেষ্টা চালাচ্ছে বলে গত বুধবার জানিয়েছেন সামরিক ও স্বাধীন বিশ্লেষকেরা। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনীর সপ্তম কোরের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, প্রায় ১১ হাজার রুশ সেনা পোকরোভস্ক অঞ্চলে মোতায়েন রয়েছে। তারা উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে শহরটি ঘিরে ফেলতে চাইছে। কিছু শত্রু ইউনিট ইতোমধ্যে শহরে অনুপ্রবেশ করেছে বলেও দাবি করা হয় বিবৃতিতে।

ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এই সপ্তাহের শুরুতে বলেছিলেন, শহরের বিভিন্ন অংশে প্রায় ২০০ রুশ সেনা প্রবেশ করেছে। তিনি সতর্ক করে বলেছিলেন, পোকরোভস্ক দখল করতে পারলে রাশিয়ার জন্য সেটি হবে এক গুরুত্বপূর্ণ মনস্তাত্ত্বিক বিজয়, যা যুদ্ধক্ষেত্রে তাদের প্রাধান্যের বার্তা দেবে।

পোকরোভস্ক ও এর উত্তর-পূর্বের কোস্তিয়ানতিনিভকা শহর রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে এলে ডনবাসের বাকি ইউক্রেনীয় অঞ্চলগুলোর দিকে অগ্রসর হওয়ার নতুন ঘাঁটি পাবে মস্কো।

ওপেন-সোর্স সামরিক বিশ্লেষক দল ডিপস্টেট বলেছে, রুশ বাহিনী পোকরোভস্কের পাশের শহর মিরনোহ্রাদের সঙ্গে ইউক্রেনের সরবরাহ রুট ভেঙে দিয়েছে। তারা হামলা চালাচ্ছে পদাতিক ইউনিট ও ড্রোনের সহায়তায়।

ডিপস্টেট সতর্ক করে বলেছে, পোকরোভস্কের পরিস্থিতি এখন একেবারে সংকটের দ্বারপ্রান্তে। এখনই শক্তিশালী ব্রিগেড পর্যায়ের বাহিনী মোতায়েন না করলে শহর রক্ষা করা অসম্ভব হয়ে পড়বে।

সংস্থাটি আরও বলেছে, ইউক্রেনীয় বাহিনী সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য শহরের প্রবেশদ্বারে উত্তোলিত একটি রুশ পতাকা ধ্বংস করেছে। অন্যদিকে, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন দাবি করেছেন, পোকরোভস্ক ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় কুপিয়ানস্ক শহরে ইউক্রেনীয় বাহিনী ঘেরাও অবস্থায় আছে। তবে ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী পুতিনের কুপিয়ানস্ক সংক্রান্ত দাবিকে পুরোপুরি কল্পনা বলে প্রত্যাখ্যান করেছে।

রয়টার্সে পক্ষ থেকে স্বাধীনভাবে এসব দাবি যাচাই করা সম্ভব হয়নি বলে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

জেলেনস্কি সোমবার সাংবাদিকদের বলেছেন, “রাশিয়া এক বছর ধরে পোকরোভস্ক দখলের চেষ্টা করছে। তবু তারা ব্যর্থ। আমরা এখনো শহরটি ধরে রেখেছি এটাই প্রমাণ করে, রাশিয়ার সামরিক পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হয়নি।” বিশ্লেষকদের মতে, পোকরোভস্কের নিয়ন্ত্রণ হারালে ইউক্রেনের পূর্ব ফ্রন্ট দুর্বল হয়ে পড়বে। তবে এখনও শহরটি রক্ষায় ইউক্রেনীয় বাহিনী সর্বোচ্চ প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে, যদিও পরিস্থিতি “অত্যন্ত নাজুক” পর্যায়ে পৌঁছেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.