মার্কিনিরাও শুল্কের কারণে ভুগছেন—ট্রাম্পের স্বীকারোক্তি

প্রশান্তি আন্তর্জাতিক ডেক্স ॥ যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত শুল্কের বোঝার ধাক্কা মার্কিনিদেরও অনেকটা হজম করতে হচ্ছে বলে অবশেষে স্বীকার করেছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গত বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই শুল্ককে কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে আসছেন ট্রাম্প। অর্থনীতিবিদদের মতে, শুল্কের বোঝা বহন করে থাকেন ভোক্তারা- অর্থাৎ মার্কিনিরাই বাড়তি খরচ দিয়ে থাকেন। অথচ মার্কিন প্রেসিডেন্ট বহুবার বলেছেন, বিদেশি দেশগুলোই শুল্কের অর্থ যুক্তরাষ্ট্রকে প্রদান করছে।

ওভাল অফিসে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় একজন বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান বিচারপতি জন রবার্টস নতুন এই শুল্ককে মার্কিনিদের ওপর আরোপিত কর বলেছেন। এই বিষয়ে ট্রাম্পের মতামত জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, আমি পুরোপুরি একমত নই। হয়তো মার্কিনিরা কিছু বাড়তি খরচ দিচ্ছে, কিন্তু সামগ্রিকভাবে দেখলে তারাই বিশাল লাভবান হচ্ছে।

দীর্ঘদিন ধরে ট্রাম্প দাবি করে আসছেন যে চীন, কানাডা, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিদেশি দেশগুলিই শুল্কের খরচ দিচ্ছে। কিন্তু অর্থনীতিবিদরা বলছেন, আমদানিকৃত পণ্যের মূল্য বাড়ায় আসলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেতা ও ব্যবসায়ীরাই।

গত বুধবার মার্কিন সুপ্রিম কোর্টে ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের বৈধতা নিয়ে শুনানিতে বিচারপতিরা সংশয় প্রকাশ করেন। এই মামলাটি ট্রাম্প প্রশাসনের ক্ষমতা প্রয়োগ পদ্ধতির ওপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে। ট্রাম্প সতর্ক করে বলেছেন, আদালত যদি তার শুল্ক আরোপের ক্ষমতা কেড়ে নেয়, তা হলে তা হবে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য একটি বিপর্যয়।

শুল্ক আরোপের ক্ষমতা হারালে ট্রাম্পের অন্যতম রাজনৈতিক হাতিয়ার হারাবে প্রশাসন। প্রেসিডেন্টের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা ও বৈদেশিক বাণিজ্যিক সংঘাত মোকাবিলায় তার শুল্কনীতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।

আদালতের সম্ভাব্য রায়ের বিষয়ে ট্রাম্প বলেন, আমি মনে করি, এটা আমাদের দেশের জন্য বিধ্বংসী হবে। তবে প্রয়োজনে আমরা ‘দ্বিতীয় পরিকল্পনা’ (বিকল্প) তৈরি করব। দেখা যাক, কী হয়। আশা করি আমরা জিতব, কারণ কেউই এমন ধ্বংসাত্মক সিদ্ধান্ত নেবে বলে আমি বিশ্বাস করি না।

Leave a Reply

Your email address will not be published.