‘আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে না’… ড. ইউনূছ

প্রশান্তি ডেক্স॥ প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, দেশের সন্ত্রাসবিরোধী আইনে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম স্থগিত থাকায় তারা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না। নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের আনুষ্ঠানিক তালিকা থেকে দলটিকে বাদ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

গত বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় সফররত ব্রিটিশ আন্তর্জাতিক উন্নয়ন মন্ত্রী ব্যারনেস জেনি চ্যাপম্যানের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন।

আসন্ন সাধারণ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও অন্তর্ভুক্তিমূলক হবে তা নিশ্চিত করার জন্য তার সরকারের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন প্রধান উপদেষ্টা। আলোচনায় দুই নেতা ফেব্রুয়ারির সাধারণ নির্বাচন, অবৈধ অভিবাসন মোকাবিলা, বাণিজ্য বৃদ্ধি, রোহিঙ্গা সংকট এবং বিমান পরিবহন ও সামুদ্রিক খাতে সহযোগিতা বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।

প্রফেসর ইউনূস বলেন, ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্ধারিত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এটি হবে অন্তর্ভুক্তিমূলক ও অংশগ্রহণমূলক। বিপুল সংখ্যক ভোটার উপস্থিতির প্রত্যাশা করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, কয়েক লাখ তরুণ তাদের প্রথম ভোট দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে। গত ১৬ বছরের দীর্ঘ স্বৈরতন্ত্রের সময় তিনটি কারচুপির সাধারণ নির্বাচনে তাদের ভোট দেওয়ার সুযোগ ছিল না।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, জুলাই সনদ বাংলাদেশের জন্য নতুন সূচনা চিহ্নিত করবে; যা গত বছরের জুলাই-আগস্টে ঐতিহাসিক অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া লাখ লাখ মানুষের আকাঙ্খাকে প্রতিফলিত করবে।

মন্ত্রী চ্যাপম্যান অন্তবর্তী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বকে ধন্যবাদ জানান এবং জুলাই সনদ নিয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন এবং রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে চলমান সংলাপের প্রশংসা করেন। চ্যাপম্যান বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশ থেকে আসা অভিবাসীদের দ্বারা যুক্তরাজ্যের আশ্রয় ব্যবস্থার অপব্যবহারের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং শোষণ রোধে নিরাপদ ও বৈধ অভিবাসনের গুরুত্বের ওপর জোর দেন।

প্রফেসর ইউনূস একমত পোষণ করে বলেন, তার সরকার নিরাপদ অভিবাসন নিশ্চিত করতে এবং আইনি চ্যানেলের মাধ্যমে আরও বেশি বাংলাদেশিকে বিদেশে কর্মসংস্থান সন্ধানে উৎসাহিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। দুই নেতা রোহিঙ্গা সংকট এবং বাংলাদেশে ক্যাম্পে বসবাসরত এক মিলিয়নেরও বেশি শরণার্থীর জন্য মানবিক সহায়তা অব্যাহত রাখার প্রয়োজনীয়তা নিয়েও আলোচনা করেন।

বৈঠকে ঢাকা ও লন্ডনের মধ্যে বাণিজ্য ও সহযোগিতা জোরদারের সম্ভাবনা তুলে ধরা হয়। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বঙ্গোপসাগরে সামুদ্রিক গবেষণা পরিচালনার জন্য বাংলাদেশ একটি ব্রিটিশ গবেষণা জাহাজ কিনছে। মন্ত্রী চ্যাপম্যান দুই দেশের মধ্যে বিমান চলাচল সম্পর্ক জোরদার করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, এয়ারবাস ইন্টারন্যাশনালের প্রধান শিগগিরই বাংলাদেশ সফর করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। এ সময় জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান, এসডিজি সমন্বয়ক লামিয়া মোর্শেদ এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published.