মস্কোর আশা ইউক্রেন যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র উসকানিমূলক পদক্ষেপ নেবেনা

প্রশান্তি আন্তর্জাতিক ডেক্স॥ ইউক্রেন যুদ্ধে অস্থিতিশীলতা আরও বৃদ্ধি করার মতো কোনও পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্র নেবে না বলে আশা করেছে রাশিয়া। গত বুধবার (১২ নভেম্বর) রাতে রুশ বার্তাসংস্থা তাসে প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ এ কথা বলেন। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

তিনি বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দীর্ঘদিন ধরে রাশিয়ার সঙ্গে সমঝোতার পক্ষে ছিলেন। ইউক্রেন ইস্যুতে রাশিয়ার অবস্থান তিনি পুরোপুরি বুঝতে চেয়েছেন এবং একটি টেকসই শান্তিপূর্ণ সমাধান খোঁজার অঙ্গীকার দেখিয়েছেন।

ল্যাভরভ আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সাধারণ বিচারবুদ্ধির গুরুত্ব দেবে এবং চলমান সংঘাতে বাড়তি মাত্রা যোগ করার মতো কোনও পদক্ষেপ নেবে না বলেই আশা করছি।

রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, পশ্চিমাদের সামরিক জোট ন্যাটোর সম্প্রসারণ এবং রুশ সীমান্তের কাছাকাছি সামরিক অবকাঠামো স্থাপনই যুদ্ধের প্রধানতম কারণ বলে স্বীকার করে নিয়েছেন ট্রাম্প। মূলত, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং রাশিয়া গত ২০ বছর ধরে এ বিষয়েই সতর্ক করে আসছে।

গত আগস্টে আলাস্কায় ট্রাম্প ও পুতিনের মধ্যে বৈঠক হয়। এরপর ২০ অক্টোবর ল্যাভরভ মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর সঙ্গে ফোনে কথা বলেন সম্ভাব্য নতুন শীর্ষ সম্মেলন আয়োজন নিয়ে। ট্রাম্প কয়েক দিন আগেই পুতিনের সঙ্গে ফোনালাপের পর ওই সম্মেলনের ঘোষণা দিয়েছিলেন, যদিও পরে তিনি তা বাতিল করেন।

ট্রাম্প বর্তমানে ইউক্রেনে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানাচ্ছেন, যেখানে উভয় পক্ষ তাদের বর্তমান ফ্রন্টলাইন ধরে রাখবে। অন্যদিকে মস্কোর দাবি, কিয়েভকে আরও এলাকা ছেড়ে দিতে হবে।

তাসে প্রকাশিত মন্তব্যে ল্যাভরভ অভিযোগ করেন, ইউরোপীয় দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্রের শান্তি প্রচেষ্টাকে বাধাগ্রস্ত করছে। তিনি বলেন, ইউরোপ শান্তি উদ্যোগ ব্যর্থ করার চেষ্টা করছে। তারা মস্কোর সঙ্গে সরাসরি আলোচনার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করছে। তারা নতুন নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছে, যা উল্টো তাদের নিজেদের অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। তারা প্রকাশ্যেই রাশিয়ার বিরুদ্ধে নতুন এক বড় ইউরোপীয় যুদ্ধে প্রস্তুতি নিচ্ছে।

ল্যাভরভের মতে, এই ‘রুশবিরোধী উন্মাদনা’ যখন শেষ হবে, মস্কো তখন ইউরোপের সঙ্গে আলোচনার জন্য প্রস্তুত। একে অন্যভাবে ব্যাখ্যা করার সুযোগ নেই। অন্যদিকে, ইউরোপীয় নেতারা তাদের গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে ‘হাইব্রিড যুদ্ধ’ চালানোর অভিযোগ এনেছেন রাশিয়ার বিরুদ্ধে।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলো গত মাসে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ১৯তম নিষেধাজ্ঞা প্যাকেজে সম্মত হয় এবং ইউক্রেনের জন্য অর্থ সহায়তা বাড়ানোর পথ নিয়ে আলোচনা করছে যার মধ্যে রয়েছে ঋণ প্রদান বা রাশিয়ার জব্দকৃত সম্পদ ব্যবহারের প্রস্তাব।

Leave a Reply

Your email address will not be published.