প্রশান্তি ডেক্স ॥ জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, আমরা নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কাছে জানতে চেয়েছি কখন তফসিল দেবে। তারা আমাদের সুস্পষ্টভাবে জানায়নি। তারা মিডিয়ায় বলেছে হয়তো আগামী এক-দুই সপ্তাহের মধ্যে তারা দেবে। আমরা বলেছি, বিদ্যমান যে রাজনৈতিক পরিস্থিতি সেটা বিবেচনায় রেখেই তারা যেন তফসিলের ঘোষণাটি দেয়।

গত বুধবার (৩ ডিসেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) সঙ্গে বৈঠক শেষে ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
নির্বাচন কমিশনের কাছ থেকে নিবন্ধন সনদ গ্রহণ করেন নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, নিবন্ধনের শুরু থেকেই কেন্দ্রীয় ও তৃণমূল নেতারা ‘অক্লান্ত পরিশ্রম’ করেছেন। ইসি ও এনসিপির শুভাকাঙ্ক্ষীসহ সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। অনেক চড়াই-উতরাই পার হয়ে প্রতীক পেয়েছি শাপলা কলি। এ প্রতীকে এনসিপি নির্বাচনে অংশ নেবে।
নাহিদ বলেন, আমরা নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আরও কয়েকটি বিষয়ে কথা বলেছি। বিশেষত নির্বাচন কমিশনের সংস্কার প্রস্তাবনায় আরপিওতে যে পরিবর্তন আনা হয়েছে, যেখানে বলা হয়েছে, প্রত্যেক দলকে নিজস্ব প্রতীকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে হবে এটিকে আমরা সাধুবাদ জানাই। আমরা মনে করি, বাংলাদেশের বহুদলীয় গণতন্ত্রের চর্চার জন্য এই নিয়মটি প্রয়োজন। প্রত্যেক দলকে নিজস্ব প্রতীক, নিজস্ব মার্কা, নিজস্ব আদর্শ নিয়ে রাজনীতি করা উচিত। জোট বা সমঝোতা হলেও প্রতীক আলাদা হওয়া উচিত।
তিনি বলেন, কিন্তু আমরা লক্ষ করেছি সরকার, নির্বাচন কমিশন এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ওপর একটি দলের পক্ষ থেকে চাপ প্রয়োগ করা হয়েছে, যাতে এই সংস্কার প্রস্তাব বাতিল করা হয় এবং জোটসঙ্গীরা অন্য দলের প্রতীকেও নির্বাচন করতে পারে। আমরা এর বিরোধিতা জানিয়েছি, এখনও জানাচ্ছি। গত মঙ্গলবার আমরা দেখেছি, আদালতে এ ব্যাপারে রিট হয়েছে। কারণ রাজনৈতিক মাঠে বা সরকারের কাছ থেকে দাবিটি আদায় করতে না পেরে, এখন আদালতকে ব্যবহার করে সংস্কার বাতিলের চেষ্টা করা হচ্ছে।
লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে দলটির আহ্বায়ক বলেন, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিয়ে আমাদের উদ্বেগও উদ্বেগ রয়েছে। এখন যে ডিসি, এসপি বদলি হচ্ছে, সে বিষয়ে যেন ইসি খেয়াল রাখে। সেখানে রাজনৈতিক প্রভাব আছে বলে আমরা মনে করি। এই বিষয়ে যেন ইসি ব্যবস্থা নেয় এবং নিরপেক্ষ লোক যেন নিয়োগ হয়।
গণভোট নিয়ে নাহিদ বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে এবং রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকেও ব্যাপক প্রচারণা দরকার। গণভোটের প্রশ্নগুলো আগে থেকেই জনগণের সামনে তুলে ধরা জরুরি। নইলে অপতথ্য, মিসইনফরমেশন, ডিসইনফরমেশন ছড়িয়ে পড়বে। এসময় নারী প্রার্থীদের ক্ষেত্রে অনলাইন বুলিং বন্ধে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়ারও অনুরোধ করেছেন বলে জানান তিনি।
এসময় এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, তফসিল নিয়ে কথা হয়েছে। একটা রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা যখন আসবে, তখন যেন তফসিল দেওয়া হয়। তাহলে কাজটা অনেক সহজ হয়ে যাবে। একবার তফসিল দিলেন গণতন্ত্রের আপসহীন নেত্রী খালেদা জিয়া অসুস্থ রয়েছেন। এখানে দেশের যে পলিটিক্যাল অ্যারেনা রয়েছে, সংকটময় পরিস্থিতি রয়েছে। সংকটগুলো উত্তরণ করে একটা তফসিল দিয়ে সবাইকে অনবোর্ড করে ভোটিং প্রসেসে নিয়ে যাওয়ার জন্য বলেছি আমরা।
তফসিল পেছাতে চাইছেন কিনা জানতে চাইলে নাসির বলেন, আমরা কেন তফসিল পেছাতে চাইবো? আমরা চাই সংকট সমাধান করে তফসিল দেওয়ার জন্য।