মার্কিন হামলার স্বীকার নাইজেরিয়ার আইএস ঘাঁটি

প্রশান্তি আন্তর্জাতিক ডেক্স॥ নাইজেরিয়ায় সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) ঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলা চালানোর দাবি করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রের আফ্রিকা কমান্ড (আফ্রিকম) জানায়, গত বৃহস্পতিবারের (২৫ ডিসেম্বর) ওই হামলা নাইজেরিয়ার সঙ্গে সমন্বয় করে উত্তর-পশ্চিমের সোকোটো রাজ্যে পরিচালিত হয়েছে।

আইএসকে “সন্ত্রাসী আবর্জনা” উল্লেখ করে ট্রাম্প বলেন, গোষ্ঠীটি প্রধানত নিরপরাধ খ্রিস্টানদের নির্মমভাবে হত্যা করছে। (তাই) মার্কিন সেনাবাহিনী তাদের লক্ষ্য করে একাধিক নিখুঁত ও শক্তিশালী হামলা চালিয়েছে।

নাইজেরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইউসুফ মাইতামা তুগ্‌গার বিবিসিকে বলেন, এটি ছিল সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে যৌথ অভিযান এবং এর সঙ্গে কোনও নির্দিষ্ট ধর্মের সম্পর্ক নেই। ভবিষ্যতে আরও হামলার সম্ভাবনা নাকচ করেননি তুগ্‌গার। তিনি বলেন, এটি দুই দেশের নেতৃত্বের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করবে।

গত বৃহস্পতিবার রাতে ট্রুথ সোশালে দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প বলেন, আমার নেতৃত্বে আমাদের দেশ উগ্র ইসলামপন্থি সন্ত্রাসবাদকে বিকশিত হতে দেবে না। নভেম্বরে ট্রাম্প ইসলামপন্থি সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো মোকাবিলায় নাইজেরিয়ায় পদক্ষেপের প্রস্তুতি নিতে মার্কিন সেনাবাহিনীকে নির্দেশ দেন। সে সময় তিনি নির্দিষ্ট কোনও হত্যাকান্ডের কথা স্পষ্ট করেননি। তবে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের কিছু ডানপন্থি মহলে নাইজেরিয়ার খ্রিস্টানদের বিরুদ্ধে গণহত্যার দাবি ঘুরে বেড়াচ্ছে।

সহিংসতা পর্যবেক্ষণকারী গোষ্ঠীগুলো বলছে, নাইজেরিয়ায় খ্রিস্টানরা মুসলমানদের তুলনায় বেশি হারে নিহত হচ্ছেন এমন কোনও প্রমাণ নেই। দেশটি মোটামুটি সমানভাবে দুই ধর্মের অনুসারীদের মধ্যে বিভক্ত।

নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট বোলা টিনুবুর এক উপদেষ্টা তখন বিবিসিকে বলেন, জিহাদি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে যেকোনও সামরিক পদক্ষেপ যৌথভাবেই হওয়া উচিত।

তিনি আরও বলেন, সন্ত্রাসীরা কোনও নির্দিষ্ট ধর্মের মানুষকে লক্ষ্য করছে না; তারা সব ধর্মের মানুষ বা ধর্মহীনদেরও হত্যা করেছে। ইসলামপন্থি সন্ত্রাসীদের দমনে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তাকে নাইজেরিয়া স্বাগত জানাবে, তবে দেশটি একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র।

প্রেসিডেন্ট টিনুবু জোর দিয়ে বলেছেন, দেশে ধর্মীয় সহনশীলতা রয়েছে এবং নিরাপত্তাজনিত চ্যালেঞ্জগুলো সব ধর্ম ও অঞ্চলের মানুষকে প্রভাবিত করছে।

বোকো হারাম ও ইসলামিক স্টেট ওয়েস্ট আফ্রিকা প্রভিন্সের মতো সন্ত্রাসী গোষ্ঠী গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে উত্তর-পূর্ব নাইজেরিয়ায় তান্ডব চালিয়েছে, যাতে হাজারো মানুষ নিহত হয়েছে তবে এসিএলইডি অনুযায়ী, নিহতদের বেশিরভাগই মুসলমান।

কেন্দ্রীয় নাইজেরিয়ায় পানি ও চারণভূমির দখল নিয়ে প্রধানত মুসলিম রাখালদের সঙ্গে প্রায়ই খ্রিস্টান কৃষক গোষ্ঠীর সংঘর্ষ হয়। বরাবরই পাল্টাপাল্টি হামলায় উভয় পক্ষই নৃশংসতা চালিয়েছে।গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র জানায়, তারা সিরিয়ায় আইএসের বিরুদ্ধে ব্যাপক হামলা চালিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল কমান্ড (সেন্টকম) জানায়, যুদ্ধবিমান, অ্যাটাক হেলিকপ্টার ও আর্টিলারি ব্যবহার করে সিরিয়ার মধ্যাঞ্চলে ৭০টির বেশি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালানো হয়। এতে জর্ডানের বিমানও অংশ নেয়। সূত্র: বিবিসি

Leave a Reply

Your email address will not be published.