লোকমান, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, ঢাকা: ব্যারিস্টার মঈনুল হোসেন যুক্তরাজ্যে ব্যার-অ্যাটল পড়তে গিয়ে ইংরেজদের খাবার খাওয়া শিখলেও ইংরেজদের ভদ্রতা শিখতে পারেননি বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, সেই আমলে ব্যারিস্টারি পড়তে যাওয়া কম কথা না। কিন্তু তিনি গিয়ে শিখলেন ইংরেজদের খাবার খাওয়ার কায়দা। ইংরেজ খাবার ছাড়া তিনি খেতে পারতেন না। তার অবস্থাটা কাকের ময়ূরপুচ্ছ পরে ময়ূর হওয়ার মতো। তিনি ইংরেজ খাওয়াটা শিখলেন, কিন্তু তাদের ভদ্রতাটা শিখেননি, অ্যাটিকেট শিখেননি, কথা বলা শিখেননি। এটাই হলো বাস্তবতা, এই হলো সেই লোক।
চার দিনের সৌদি আরব সফর শেষে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনব গণভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। গত সোমবার (২২ অক্টোবর) বিকেল ৪টায় এই সংবাদ সম্মেলন শুরু হয়। গত ১৬ অক্টোবর বেসরকারি একটি টিভি চ্যানেলের টক শোতে সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টিকে ‘চরিত্রহীন’ আখ্যা দেন ব্যারিস্টার মঈনুল হোসেন। এ প্রসঙ্গে একজন সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, একজন নারী সাংবাদিককে তিনি যে ভাষায় আক্রমণ করেছেন তা অত্যন্ত জঘন্য, বাজে। তার বাচনিক ভঙ্গি, অ্যাটিচিউড— সবই খারাপ। তার কাছে কী আশা করব? ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় তো পাকিন্তানের দালালি করেছেন। ইত্তেফাকের সাংবাদিক সিরাজউদ্দিন চৌধুরীকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল রাজাকাররা। এর জন্যও তিনি কম দায়ী নন।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ১৯৭৫ সালে জাতির পিতাকে হত্যার পর খুনি মোশতাক যে দল করেছিল, সেই দলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল ব্যারিস্টার মঈনুলের। উনি কিন্তু পরে একটা দলও করেছিলেন। জাতির পিতার আত্মস্বীকৃত খুনি যারা, তাদের নিয়ে তিনি দল করেছিলেন। ইত্তেফাকেও তো মার্ডার করে ভাইকে (বর্তমান পানিসম্পদমন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু) ফাঁসানোর চেষ্টা করেছেন। তাদের যে জমি, সেটা নিয়েও ঝামেলা রয়েছে। তাদের জমি নিয়ে রাষ্ট্রপক্ষের সঙ্গে মামলা আছে। আপনারা সাংবাদিকরা খুঁজে বের করে দেখেন। তার আসলে গুণের শেষ নেই।
ব্যারিস্টার মঈনুল হোসেনের বাবা তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়ার পরিবারের সঙ্গে বঙ্গবন্ধু পরিবারের সুসর্ম্পকের সুবাদে মঈনুল হোসেনের জীবনের অনেক তথ্যই জানেন বলে উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, উনি সেই আমলে ইংল্যান্ড গিয়েছিলেন ব্যারিস্টারি পড়তে। এইটা তো কম কথা না। তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া, উনাকে আমরা মানিক কাকা বলে ডাকতাম। তো কাকা তাকে ব্যারিস্টারি পড়তে পাঠালেন। তিনি ব্যারিস্টারি পাস করে সাহেব হয়ে ফিরলেন। তিনি আর বাংলাদেশি খাবার খেতে পারেন না, তার সাহেবি খাবার দরকার।
শেখ হাসিনা বলেন, মানিক কাকা মায়ের কাছে এসে আফসোস করেন। বলেন, ছেলে তো ইংরেজ খাবার ছাড়া কিছু খায় না। তো তার জন্য তখন আলাদা বাবুর্চি রাখতে হলো। সেই যুগে মানিক কাকা ছেলের জন্য ১০০ টাকা দিয়ে বাবুর্চি রাখলেন। ব্যারিস্টারি পড়তে গিয়ে মঈনুল হোসেন ইংরেজ খাওয়াটা শিখলেন; কিন্তু তাদের ভদ্রতাটা শিখেননি, অ্যাটিকেট শিখেননি, কথা বলা শিখেননি।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, এসব কথা সবার জানার কথা না। আরও জানি, এখন বলব না, পরে বলব।