অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদার সাজা বেড়ে ১০ বছর

নিজস্ব প্রতিবেদক॥ জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সাজা ৫ বছর বাড়িয়ে ১০ বছর করেছেন হাইকোর্ট। গত মঙ্গলবার হাইকোর্টের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আসন গ্রহণের পর আদালত বলেন, রায়ের কার্যকর অংশটুকু ঘোষণা করা হচ্ছে। তিনটি আপিল (খালেদা জিয়া, সাবেক সংসদ কাজী সালিমুল হক কামাল ও ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ) খারিজ করা হলো। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা রিভিশন আবেদনের রুল যথাযথ ঘোষণা করা হলো। খালেদা জিয়ার সাজা বাড়িয়ে ১০ বছরের কারাদন্ড করা হলো। এ রায়ের ফলে সালিমুল হক ও শরফুদ্দিন আহমেদের ১০ বছরের কারাদন্ড বহাল রইলো।khaledaer saja berase 10 bosore
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় গত ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদন্ড দিয়েছিলেন রাজধানীর বকশীবাজারে স্থাপিত অস্থায়ী পঞ্চম বিশেষ জজ আদালত। রায় ঘোষণার পরপরই তাকে ওইদিন বিকেলে নাজিমউদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে খালেদা জিয়া এই সাজার বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন। বর্তমানে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব চিকিৎসা বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
ওই রায়ের পর খালেদার সাজা বৃদ্ধি চেয়ে আপিল করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অন্যদিকে খালেদার পক্ষে খালাস চেয়ে আপিল করা হয়। গত মঙ্গলবার খালেদা জিয়ার আপিল খারিজ করে দুদকের সাজা বৃদ্ধির আবেদন গ্রহণ করে এ রায় দিলেন বিচারক। রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন দুদকের আইনজীবী। দুদকের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান জানান, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাজা বাড়িয়ে ১০ বছরের কারাদন্ড দিয়েছেন হাইকোর্ট। ওই মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ে খালেদা জিয়ার পাঁচ বছরের কারাদন্ড ও অর্থদন্ড হয়েছিল। আমরা এ রায় আপাতত সন্তুষ্ট।
রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে সকাল থেকেই সুপ্রিম কোর্টর বর্ধিত ভবনের ১৭ নম্বর কক্ষের সামনে ছিল বাড়তি নিরাপত্তা। আদালতে রায় ঘোষণার সময় রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনালের মুরাদ রেজা, মোমতাজ উদ্দিন ফকির, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ, ফরহাদ আহমেদ, একরামুল হকসহ আইন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান ও মোশাররফ হোসেন কাজল।
তবে রায় ঘোষণার সময় এ মামলায় খালেদার পক্ষে শুনানিতে অংশ নেয়া আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী, জয়নুল আবেদীন, আবদুর রেজাক খানসহ সংশ্লিষ্ট বিএনপিপন্থী কোনো আইনজীবীদের আদালত কক্ষে দেখা যায়নি। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সাজা ৫ বছর বাড়িয়ে ১০ বছর করেছেন হাইকোর্ট।
গত মঙ্গলবার হাইকোর্টের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
গত সোমবার বিকেলে রাষ্ট্র, দুদক ও আসামিপক্ষের শুনানি শেষ করা হয়। পরে মামলার রায় ঘোষণার জন্য গত মঙ্গলবার দিন ধার্য করেন আদালত। এদিকে দুর্নীতির আরেক মামলায় (জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট) বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে ৭ বছরের কারাদন্ড দেয়া হয়েছে। চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার রায় দিয়ে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ৩৬ মামলার মধ্যে দ্বিতীয় মামলার রায় ঘোষণা হয়েছে।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় গত ৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ রায় দেন। রায়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদন্ড দেয়া হয়। খালেদা জিয়ার বড় ছেলে ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান, সাবেক সাংসদ কাজী সালিমুল হক কামাল, সাবেক মুখ্য সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ ও মমিনুর রহমানকে ১০ বছর করে কারাদন্ড দেয়া হয়। রায়ে খালেদা জিয়াসহ ছয় আসামির সবাইকে মোট ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা ৮০ পয়সা অর্থদন্ডে দন্ডিত করা হয়। অর্থদন্ডের টাকা প্রত্যেককে সম-অঙ্কে প্রদান করার কথা বলা হয়। কারাদন্ড ও অর্থদন্ডের রায়ের বিরুদ্ধে খালেদা জিয়া, কাজী সালিমুল হক কামাল ও শরফুদ্দিন আহমেদ পৃথক আপিল করেন। ছয় আসামির মধ্যে কারাগারে রয়েছেন খালেদা জিয়া, কাজী সালিমুল হক কামাল ও শরফুদ্দিন আহমেদ।

Leave a Reply

Your email address will not be published.