নিজেকে কি খুব বড় নেতা মনে করেন? করেন তো চাঁদাবাজি

রুহুল আমিন মজুমদার ॥ ইসিকে চিৎকার করে ধমকিয়ে মান্না-রব বলেন, নির্বাচনের পরেও এদেশে থাকতে হবে। আমার একটি ছোট্ট প্রশ্ন- অনেকের তথাকথিত জাতীয় নেতাদের প্রতি। কখন, কোন দেশে সরকারের আমলারা বিগত সরকারের কর্মকান্ডের জবাবদিহি করেছে? Nejake ki khob bro neta monekren
কাদের, মান্না, রবেরা কি ক্ষমতায় এসেই গেলেন নাকি? সরকারে উপবিষ্ট থাকাবস্থায় জনগণের সরকার কৌশল করে, আমলাদের টেবিল থেকে কাজ আদায় করে নিতে হয়। ফ্যাসিস্ট সরকারের শাসনামলেও আমলাদের ধমকানোর নজির নেই। তাছাড়া নির্বাচন কমিশন তো আর সরকারের আমলা পর্যায়েও নেই। একটা সাংবিধানিক সংস্থা। রাষ্ট্রের যে কয়টি সাংবিধানিক সংস্থা আছে তার মধ্যেও অনেকটা ব্যতিক্রম সাংবিধানিক সংস্থা। অন্যদের তুলনায় জনসম্পৃক্ত এবং অধিকতর কার্যকর। সরকারের পক্ষ থেকে যাদেরকে চাকরিচ্যুত করা যায়না, আদেশ, নির্দেশ দেয়া যায়না, পদাবনতি, পদোন্নতি দেয়ার ক্ষমতা নেই। পদত্যাগ করার নির্দেশ দেয়া যায়না, বড়জোর অনুরোধ করা যায়। অনুরোধ না শুনলেও সরকারের কিছুই করার থাকেনা। সংশ্লিষ্ট সংস্থার সহযোগিতা বন্ধ করে হয়তো বা হয়রানি করতে পারে। সেই সংস্থাকে ধমকিয়ে কথা বলার আপনাদের এত সাহস হল কি করে!!
কাদের, মান্না, রব নিজেদের কি মনে করেন? গণতন্ত্রের রাজা-রাণীর দেশেও কোন জনপ্রতিনিধি সরকারের আমলাদের প্রতি এমন ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করার নজির আছে বলে মনে হয়না। তাঁরা উভয়ে নিজেদের কি মনে করেন? কি ভাবা শুরু করেছেন? দুইজনই তো নন-ডিগ্রি নেতা, তাই নয় কি? নিজেদের এতবেশি বিজ্ঞ মনে করার কি আছে? বাংলাদেশের মহিলারাও বর্তমান সময়ে তাঁদের চেয়ে অনেক বেশী শিক্ষিত এবং অভিজ্ঞ।
ছাত্রজীবনে বড় দলের অঙ্গ সংগঠনের হয়ে ছাত্র রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন। দলের নাম ভাঙ্গিয়ে চাঁদাবাজি করে আরাম-আয়েশে রাজনীতি করেছেন। ছাত্রত্ব শেষ হওয়ার পর বড় দলের ছাত্রছায়ায় চাঁদাবাজি করে রাজনীতি তো করেছেনই, পরিবার-পরিজনও প্রতিপালন করেছেন।
বড় রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়া সরে যাওয়ার পর একাকীত্বের জীবন কাটাতে বাধ্য হয়েছেন। অলস জীবন শয়তানের কারখানায় পরিণত হয়ে দেশ ও জনগণের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে সময় পার করেছেন। পতিত জীবনের প্রায় শেষ প্রান্তে এসে জোট গঠন করেছেন। বড়জোটের জনসান্নিধ্যের ছোঁয়া পেয়ে উভয়ে ধরাকে সরা জ্ঞান ভাবতে শুরু করেছেন কেন? কোন শক্তির বলে?
অল্প পানির মাছ যেমন গভীর পানির দেখা পেলে দৌড়াদৌড়ি করে, তাঁদের বেলায়ও কি তাই হয়েছে নাকি? নাকি গোয়াল ঘরের নিয়মিত বাঁধা গরুটি কোন কারণে ছেড়ে দেয়া হয়, সাত গ্রাম দৌড়িয়েও তাকে আর ধরা যায়না। তেমন কিছু তথাকথিত উভয় নেতার মধ্যে জনগণের অনুভব দৃষ্টিগোচর করার লক্ষে করছেন?
জনাব কাদের, রব, মান্না সাহেব- মনে রাখবেন, আপনাদের চেয়ে অধিক জ্ঞানী রাজনীতিবিদ আওয়ামী লীগের প্রত্যন্ত গ্রামে-গঞ্জে হাজার হাজার দেখা মেলে। যতবড় জোটই করেন না কেন, আপনাদের অনুসারী অনেকেই হয়ত ভোটে জিতবে। আমি হলফ করে বলতে পারি- আপনারা দুইজনের একজনও জিততে পারবেন না। আওয়ামী লীগের কোন এক সাধারণ কর্মীও যদি আপনাদের সাথে ভোটে দাঁড়ায়, তারপরও নয়। আমি শুধু হলফ করেই বলছিনা, আপনাদের প্রতি চ্যালেঞ্জও দিচ্ছি।
সময় আছে, সংযত হয়ে যান, সংযত আচরণ করুন। গণতন্ত্রের ভাষায় কথা বলুন। আপনাদের দুই জনের যেমন কথা বলার অধিকার আছে, তেমনি বাংলাদেশের একজন সাধারণ মানুষেরও কথা বলার অধিকার আছে। সাবধান করে দিলাম।
লেখক : উপ-সম্পাদক, বাংলাদেশ প্রেস।

Leave a Reply

Your email address will not be published.