রা ইসলাম॥ বিদ্রোহী কবি নজরুলের মত বিদ্রোহী কবিতা রচনা করতে না পারলেও তা বাস্তবায়নের চেষ্টায় প্রারঙ্গম তিনি। তিনি আমাদের মেডাম খালেদা জিয়া। বলতে পারেন লাথি মেরে ভাংরে তালা যত আছিস প্রসাসনিক কর্মকর্তা। সময় এখনই আমাকে নিয়ে চেয়ারে বসায় দেব তোদের বিশাল শাস্তি আর আমি পাব মহা শান্তি। বিএনপি ধরেই নিয়েছে তাদের কথা কেউ শোনার আর অবশিষ্ট নেই তাই সেই জায়গা থেকে এখন আর কি করার আছে। শুধু হাক ডাক ছড়ানো। সেই হাক-ডাকের একটি অংশ অগামী নির্বাচন ও নির্বাচন কমিশন নিয়ে মাঠ গরমের হাল-হকিকত। নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনে সরকারকে ক্যাটাগরি ঠিক করে প্রস্তাব দেবে বিএনপি। এই ক্যাটাগরির মধ্যে নির্দলীয় সাবেক পরিচ্ছন্ন আমলা, সাবেক ভাইস-চ্যান্সেলর, সাবেক অধ্যাপক, স্বচ্ছ ব্যবসায়ী উল্লেখযোগ্য। এই পেশার লোকদের নির্বাচন কমিশনে নিয়োগ দেওয়ার বিষয়ে প্রস্তাবনা দেবে বিএনপি। তবে নির্বাচন কমিশন গঠনে আইন প্রণয়ন করার বিষয়ে কোনও প্রসঙ্গ তুলবে না দলটি।
আগামী কয়েকদিনের মধ্যে প্রস্তাব চূড়ান্ত করে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে দেশবাসীকে জানাবেন দলীয় প্রধান খালেদা জিয়া। প্রস্তাব তৈরির কাজে যুক্ত একাধিক স্থায়ী কমিটির সদস্য এসব বিষয় জানান।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির দুজন সদস্য জানান, মূলত দুটি ক্যাটাগরি করা হচ্ছে। একটি হচ্ছে, কোন কোন পেশার লোকজনকে নিয়োগ দেওয়া যেতে পারে, দ্বিতীয়ত, কোন কোন পেশার লোকজনকে নিয়োগ দেওয়া যাবে না। এক্ষেত্রে কোনও ব্যক্তির নাম উল্লেখ থাকবে না প্রস্তাবে। তবে কোন কোন পেশাকে নেতিবাচক ক্যাটাগরিতে রাখা হবে, এ নিয়ে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেনি বিএনপি।
আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি মেয়াদ শেষ হচ্ছে কাজী রকিবউদ্দীন আহমদের নেতৃত্বাধীন বর্তমান নির্বাচন কমিশনের (ইসি)। এর আগেই গঠন করতে হবে নতুন নির্বাচন কমিশন। আসন্ন সেই ইসির অধীনেই অনুষ্ঠিত হবে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন। রকিবের নেতৃত্বে চার সদস্যের কমিশন ২০১২ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
গত রবিবার রাতে খালেদার সঙ্গে স্থায়ী কমিটি ও তিনজন দলের সমর্থক বুদ্ধিজীবীরদের মধ্যে নির্বাচন কমিশন গঠনে বিএনপির কী ভূমিকা থাকবে তা নিয়ে একটি আলোচনা হয়। ওই আলোচনায় ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী। বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর) রাতে তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন নিয়ে আলোচনা চলছে। একটা প্রস্তাব আমরা দেব। এটা সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জানানো হবে। তবে স্থায়ী কমিটির একটি সূত্র জানায়, খুব দ্রুতই সংবাদ সম্মেলন করছেন খালেদা জিয়া। ওই সংবাদ সম্মেলনেই নির্বাচন কমিশন গঠন প্রক্রিয়া, সংখ্যালঘুদের ওপর হামলাসহ নানা বিষয়ে দলের অবস্থান তুলে ধরবেন তিনি। তবে সরকার বিএনপির প্রস্তাবনা গ্রহণ করবে কি না, এমন প্রশ্নের উত্তরে স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার বলেন, সরকার প্রস্তাব গ্রহণ করবে কি না, এটা তো স্পষ্ট না। তাই আগে-ভাগে বলা যাচ্ছে না। তবে বিএনপি নির্বাচন কমিশন ও নির্বাচন নিয়ে সিরিয়াস, সেটি সরকার উপলব্ধি করবে।
প্রস্তাব তৈরির কাজে যুক্ত একজন বিএনপিনেতা জানান, নাম উল্লেখ না করে পেশাগত ক্যাটাগরি দেওয়ার কারণ হচ্ছে, এটা নিয়ে সবাই ভাবুক। নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ ও শক্তিশালী না হলে নির্বাচন সুষ্ঠু হয় না, এটা পরিষ্কার। এ কারণে সুশীল সমাজ থেকেও যেন নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠনের বিষয়ে কথা আসে, সে কারণেই এই কৌশল নেবে বিএনপি। এদিকে নির্বাচন কমিশন গঠনে সংবিধানে আইন তৈরির কথা থাকলেও অদ্যাবধি সে আইন হয়নি। এবার নির্বাচন কমিশন গঠনে প্রস্তাব দিলেও আইন করার বিষয়টি এড়িয়ে যাবে বিএনপি। এক্ষেত্রে প্রস্তাব তৈরির কাজে যুক্ত এক নেতা জানান, যতটুকু দরকার, সেটা হয়তো প্রস্তাবে থাকবে। তবে নির্বাচন কমিশন গঠনে আইন করার বিষয়ে এখনও কোনও বক্তব্য থাকবে না বিএনপির প্রস্তাবে। জমির উদ্দিন সরকার বলেন, ‘‘যতটুকু দরকার, ততটুকু বিষয়ে আইন নিয়ে কথা হতে পারে।’’ প্রস্তাবের বিষয়ে কথা বলতে নারাজ আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, বিএনপি প্রস্তাব দেবে। সরকার বা রাষ্ট্রপতি ডাকলে প্রস্তাব দেবে লিখিত। না ডাকলে দেশবাসীকে জানানো হবে।
বিএনপিপন্থী বুদ্ধিজীবী অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ বলেন, ‘বিএনপির প্রস্তাবের আগে শেখ হাসিনা নির্বাচন দেবে কিনা, নিরপেক্ষ করার চিন্তা আছে কিনা, সেটা দেখা উচিৎ। এদিক থেকে আমি মনে করি, আগে সংলাপ শুরু হোক। আলোচনা ছাড়া প্রস্তাব দিলে কোনও সফলতা আসবে বলে মনে হয় না।’ সাবেক নির্বাচন কমিশনার এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য সংবিধানে একটি আইন তৈরির কথা বলা আছে। কিন্তু স্বাধীনতার এত বছর পরেও কোনও দলই তা বাস্তবায়ন করেনি। যারা যখন ক্ষমতায় এসেছেন তারা তাদের পছন্দের কিছু নাম বের করে কমিশন গঠন করেছেন।’
জানা গেছে, ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগেও কমিশন গঠনের ব্যাপারে আইনের খসড়া তৈরি হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীতে ওই খসড়া আর আলোর মুখে দেখেনি। ২০১১ সালে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের সঙ্গে সংলাপে কমিশন গঠনে আইন প্রণয়নের পরামর্শ দিয়েছিল বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)। সেসময় সিপিবি’র সাধারণ সম্পাদক মুজাহেদুল ইসলাম সেলিম বলেছিলেন, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের প্রক্রিয়ার ওপর জোর দিয়ে তারা আইন প্রণয়নেরও প্রস্তাব করেছেন।
সংবিধানের আলোকে রাষ্ট্রপতি বিগতসময়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও নির্বাচন কমিশনার (ইসি) নিয়োগ দিলেও ২০১২ সালে সর্বশেষ কমিশন গঠিত হয় সার্চ কমিটির মাধ্যমে। সে সময় প্রথমবারের মতো রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপে বসেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিল্লর রহমান। এবারও সার্চ কমিটির মাধ্যমে ইসি নিয়োগের আভাস দিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। সম্প্রতি আইনমন্ত্রী জানান ‘এবারও আগের প্রক্রিয়ায় তথা ২০১২ সালের মতো কমিশনার নিয়োগ করা হবে।’ বিএনপির সূত্রটি জানায়, সার্চ কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে বিএনপির প্রস্তাব থাকবে। কারা থাকবে কমিটিতে, এ নিয়েও প্রস্তাব দিবে দলটি। তবে সূত্রের দাবি, প্রস্তাব গ্রহণ না করে দলনির্ভর কাউকে নিয়োগ দেওয়া হলে কর্মসূচিতে যাবে বিএনপি। তবে এ নিয়ে এখনই মন্তব্য করতে রাজি নয় বিএনপির সিনিয়র কোনও নেতা।
ইলেক্টনিক ও প্রিন্ট মিডিয়াতে প্রচারিত এই আগাম কতাবর্তার কোন উপযুক্ততা নেই বর্তমান সময়ের ¯্রােতে। আমরা মনে করি সময়ই বলে দিকে আগামির দিক নির্দেশনা। এর আগেও বিএনপি মিডিয়ার কল্যানে বাজেট প্যেশ করেছিল কিন্তু সেই বাজেট তারা বাস্তবায়ন তথা নিজেরাও পালন করতে পারে নি। তাই বলছি গায়ে মানে না আপনি মোড়ল বা হামচে বড় কোন হে— এই ভাব থেকে বের হয়ে এসে যুগোপযোগী রাজনীতির স্বচ্ছতায় নিজেদেরকে মেলে ধরুন। নতুব সকল হাক ডাকা বিফফে যাওয়াবস্থায় আর গর্ত থেকে বের হতে পারবেন না। কঠিন সত্য ও বাস্তবতা হলো আপনাদের আর এখন এমন কোন অবস্থা নেই যে সরকার আপনাদেরকে শ্রদ্ধা বা মূল্যায়ন করে কোন পদক্ষেপন নেবে। এই কথা বলছি আপনার চোখে আঙ্গুল দিয়ে বর্তমান বাস্তবতা বোঝানোর চেষ্টা করছি। সত্য বলছি শত্রুতা থেকে নয় বরং বন্ধুর মত শোভাকাংখি হিসেবে আগামীর মঙ্গলের লক্ষ্যে। কানা বলে তোর চোখ উপড়ে ফেলব আর খোড়া বলে লাথি দিয়ে মাঠিতে ফেলে দিব। এই আওয়াজ থেকে বেরিয়ে আসুন এবং নতুন প্রজন্মের তরে নিজেদেরকে নতুন ভাবনায় এবং জাতির আকাংখা বুঝে অগ্রসর হউন। নতুবা আরো কঠিন সময়ের মধে যেতে হবে যা কারোরই কাম্য নয়।