বিবিসি ১০০ নারী জন্মের পরপরই মেয়ে বদলে ছেলে নিয়ে আসতে বলছিল সবাই

প্রশান্তি ডেক্স॥ পরিবারের পঞ্চম মেয়ে সন্তান হিসেবে যখন আফগানিস্তানের এক গ্রামে নার্গিস তারাকির জন্ম হয়, তার বাবাকে সবাই পরামর্শ দিয়েছিল একটি ছেলে বাচ্চার সাথে মেয়েকে বদলে নিতে। লোকের কথায় কান না দিয়ে সেদিন তার বাবা ভুল করেননি, সেটা প্রমাণ করাই এখন ২১ বছর বয়সী নার্গিসের একমাত্র লক্ষ্য। মেয়েদের পড়াশুনা নিয়ে দেশব্যাপী সচেতনতার কাজ করেন তিনি, আর এ বছর তিনি বিবিসির ১০০ নারী আয়োজনের একজন নির্বাচিত হয়েছেন।bebser 100 nare
১৯৯৭ সালে পরিবারের পাঁচ নম্বর মেয়ে হয়ে জন্মাবার পরপরই আমার ফুফু এবং অন্য আত্মীয়রা আমার মাকে অনেক চাপ দিয়েছিল, যেন তিনি আমার বাবাকে দ্বিতীয় বিয়ের অনুমতি দেন। পুত্র সন্তান লাভের আশায় আফগানিস্তানে দ্বিতীয় বা তৃতীয় বিয়ে খুবই সাধারণ ঘটনা। বিশেষ করে অনেকেই বিশ্বাস করে, পুনরায় বিয়ে করলে পুরুষের পুত্র সন্তান লাভের নতুন সুযোগ তৈরি হয়। আমার মা অনুমতি দিতে রাজি হননি।
তখন সবাই বাবাকে পরামর্শ দিলো কারো ছেলে বাচ্চার সঙ্গে আমাকে যেন বদলে নেয়া হয়। আশ্চর্য, আমাদের গ্রামে এমন একটা পরিবার পাওয়াও গেলো, যারা নিজেদের ছেলে বাচ্চাকে আমাদের পরিবারে দিয়ে দিতে রাজিও হয়েছিল। বিনিময়ে আমাকে দিয়ে দিতে হত তাদের।
এভাবে সন্তান পরিবর্তনের কথা আফগানিস্তানে সচরাচর শোনা যায় না। কিন্তু উপার্জনক্ষম হওয়ায়, এখানে ছেলে বাচ্চার কদর সবসময়ই বেশি। কিন্তু আমার বাবার মন-মানসিকতা ছিলো অন্যদের চেয়ে একেবারেই আলাদা।
তখন বাবা বলেছিলেন তিনি কিছুতেই আমাকে অন্য কারো কাছে দিয়ে দেবেন না, কারণ তিনি আমাকে ভালোবাসেন, আর একদিন সবার কাছে তিনি প্রমাণ করবেন ছেলেরা যা পারে মেয়েরাও তাই-ই করতে পারে। আমার পরিবারের জন্য সেটা খুব দুঃসময় ছিলো। পুত্র সন্তান জন্ম দিতে না পারায় আমার মাকে নিয়মিত খোটা ও কটু মন্তব্য শুনতে হতো।

Leave a Reply

Your email address will not be published.