বা আ ॥ সদ্য সমাপ্ত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে পুর্ব-পশ্চিম তথা গোটা বিশ্বই বলছে, এবারের ভোটে বাংলাদেশের মানুষের গণতান্ত্রিক আকাঙ্খক্ষার ইতিবাচক প্রতিফলন ঘটেছে। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, চীন, ভারত, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ সকলের কাছে প্রশংসা কুড়িয়েছে ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচন। অন্যদিকে, ভোটের দিনের অনিয়ম এবং ভোটের আগে নির্বাচনি প্রচারে বেআইনি হস্তক্ষেপ ও সহিংসতার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে ওইসব ঘটনার স্বচ্ছ এবং জবাবদিহিতামূলক সমাধান দেখতে চেয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপমুখপাত্র রবার্ট পালাদিনো মঙ্গলবার (১ জানুয়ারি) এক বার্তায় বলেন, ‘সদ্য সমাপ্ত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রশংসার দাবি রাখে। কেন না, ২০১৪ সালের নির্বাচনকে অধিকাংশ রাজনৈতিক দল বয়কট করলেও এই নির্বাচনে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো অংশ নেয়। একাদশ নির্বাচনে ভোটারদের অংশগ্রহণও প্রসংশনীয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র বৃহত্তম দেশ, বাংলাদেশি রফতানিকারকদের জন্য যুক্তরাষ্ট্র একক দেশ হিসেবে বৃহত্তম বাজার এবং বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আমেরিকানদের বড় একটি অংশের আবাস্থল যুক্তরাষ্ট্র। তাই বাংলাদেশের ভবিষ্যত এবং গণতান্ত্রিক উন্নয়নে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন অব্যাহত থাকবে।’ ব্রিটেনের কমনওয়েলথ মন্ত্রী মার্ক ফিল্ড মঙ্গলবার (১ জানুয়ারি) এক বার্তায় বলেন, ‘বাংলাদেশের সদ্য সমাপ্ত ভোটের বেসরকারি ফলাফল জানতে পেরেছি। এই নির্বাচনে অংশ নেওয়া সবগুলো বিরোধী দলকে সাধুবাদ জানাই।’
ভোটের দিনের সহিংসতায় হতাহতের ঘটনা এবং নির্বাচনি প্রচারণার সময়ের ভয়-ভীতি এবং সহিংসতার ঘটনা দুঃখজনক উল্লেখ করে মার্ক ফিল্ড বলেন, ‘কার্যকর গণতন্ত্রের জন্য মুক্ত, অবাধ এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের বিকল্প নেই। বাংলাদেশের জনগণের উন্নয়নের জন্য এখন সঠিক পথের সন্ধান করা সরকার এবং সবগুলো রাজনৈতিক দলের জন্য অতীব জরুরি কাজ।’ বাংলাদেশ যুক্তরাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য প্রবাসী রয়েছে। স্থিতিশীল, সমৃদ্ধশালী এবং গণতান্ত্রিক ভবিষ্যত নির্মাণের প্রতি বাংলাদেশের জনগণের যে আকাঙ্খক্ষা তা পূরণ করতে যুক্তরাজ্যের সমর্থন অব্যাহত থাকবে।’ ইউরোপীয় ইউনিয়নের মুখপাত্র মাজা কোচিজানসিস মঙ্গলবার (১ জানুয়ারি) এক বার্তায় বলেন, ‘এবারের নির্বাচন নিয়ে দেশের মানুষের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা গেছে। গত ১০ বছরের মধ্যে এবারের নির্বাচনে সবগুলো দলের অংশগ্রহণ ছিলো।’
ইউরোপীয় ইউনিয়ন বাংলাদেশের পাশে আছে উল্লেখ করে বলা হয়, ‘ইউরোপীয় ইউনিয়ন প্রত্যাশা করে বাংলাদেশ গণতন্ত্রের ধারা অব্যাহত রাখবে এবং মানবাধিকার ও মৌলিক স্বাধীনতার প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকবে।’ এ ছাড়া ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর ভোট অনুষ্ঠানের প্রশংসা করে পৃথক পৃথক বার্তা দেন চীনের রাষ্ট্রপতি শি জিনপিং ও প্রধানমন্ত্রী লি কি কান, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী, ভারতের ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দে, ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লোট তাসারিং, সৌদি আরবের বাদশাহ ও পবিত্র দুই মসজিদের রক্ষক সালমান বিন আবদুল আজিজ আল সউদ, সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান বিন আবদুল আজিজ আল সউদ, কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি এবং শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনা ও প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে।